আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসকে) এ হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএসকেও। মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক বার্তায় আইএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইএসকে-এর যোদ্ধারা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কাছে একটি বিশাল কনসার্টে হামলা চালিয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন রাশিয়ায় এ ভয়াবহ হামলা চালাল আইএসকে।
এর আগে জানতে হবে আইএসকে আসলে কী?
ইরান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত খোরাসান অঞ্চলে (পুরোনো নাম) সক্রিয় থাকা একটি গোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট খোরাসান’ বা আইএস-কে। ২০১৪ সালের শেষ দিকে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এই জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর নৃশংসতার কারণে দ্রুতই বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে গোষ্ঠীটি।
আইএসের সবচেয়ে সক্রিয় আঞ্চলিক সহযোগীর একটি আইএস-কে। ২০১৮ সালে সদস্যসংখ্যা সর্বোচ্চ হওয়ার পর থেকে তা আবার কমতে শুরু করে। আফগানিস্তানে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তালেবান এবং সেখানে থাকা মার্কিন বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধনের পেছনেও আছে গোষ্ঠীটির হাত।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ২০২১ সালে তাদের সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আইএস-কের মতো চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করার সক্ষমতায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
আইএসকে-এর উল্লেখযোগ্য হামলা
আফগানিস্তানের ভেতরে ও বাইরে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনায় বড় রকমের হামলা চালানোর ইতিহাস আছে আইএস-কের। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের শুরুতে ইরানে জোড়া বোমা হামলা চালিয়ে প্রায় ১০০ জনকে হত্যা করে আইএসকে।
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাসে রক্তক্ষয়ী আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেন আইএস-কের সদস্যরা।
এ ঘটনার আগের বছর ২০২১ সালে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে ১৩ মার্কিন সেনা ও বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে আইএস-কে। তালেবানের কাবুল দখল এবং সেখান থেকে মার্কিন সেনা ও অনেক আফগানের দেশ ছাড়ার মুহূর্তে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে এই হামলা চালানো হয়।
কেন রাশিয়াতে হামলা চালাল আইএসকে
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আইএসকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধিতা করে আসছিল। এ প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সোফান সেন্টারের কলিন ক্লার্ক বলেন, ‘গত দুই বছর ধরেই রাশিয়াকে নিশানা করেছে আইএস-কে। গোষ্ঠীটি তাদের প্রচারণায় প্রায়ই পুতিনের সমালোচনা করে আসছিল।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক আরেকটি প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, রাশিয়াকে নিয়মিতভাবে মুসলিমবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা দেশ হিসেবে দেখে থাকে আইএস-কে। মস্কোর বিরুদ্ধে নিজস্ব অভিযোগের পক্ষে থাকা মধ্য এশিয়ার কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নিজেদের সদস্যর মতো বিবেচনা করে আইএসকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।