জুমবাংলা ডেস্ক: তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জননী আনোয়ারা বেগম। বয়স ৬০ বছর। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। তারা এখন স্বামী সন্তানসহ অন্যত্র বসবাস করেন। একমাত্র বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলে আশাকে নিয়ে আনোয়ারা বেগমের বসবাস।
সহায় সম্বলহীন এই মা-ছেলে অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও তাদের মাথাগোজার ঠাঁই নেই। নিজের জমি না থাকায় প্রায় ১০ বছর ধরে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পার-দখলপুর গ্রামের কবরস্থানে ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছেন সহায়-সম্বলহীন এ নারী।
আনোয়ারা বেগম জানান, ২০ বছর আগে স্বামী বিশারত আলী জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর পরই তার জীবনে নেমে আসে অমানিশা। বসতভিটা না থাকায় প্রায় ১০ বছর আগে কবরস্থানের এক পাশে ভাঙা টিন আর খড় দিয়ে মাটির ঘর তৈরি করে কোনো রকমে মাথা গুঁজে আছেন। মা-ছেলে দু’জনেই অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করেন। উপায় না থাকায় তারা এখানে বসবাস করছেন। প্রয়োজন কোনো আইন মানে না।
তিনি বলেন, কবরস্থানে বসবাস সত্যিই ভয়ানক। ভয়ে ভয়ে রাত কাটান। রাতে শেয়াল-কুকুরের ডাকে ঘুমাতে পারেন না। তা ছাড়া যেদিন গ্রামে কোনো মানুষের মৃত্যু হয়, সেদিন লাশ দাফনের পর ভয়ে অন্যের বাসাবাড়ির বারান্দায় রাত কাটান।
স্থানীয়রা বলছেন, কবরস্থানে বসবাসের ফলে এর পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে কিন্তু মানবিক কারণে অসহায় মা-ছেলে বসবাস করলেও তাদেরকে সেখান থেকে সরানো হচ্ছে না। অসহায় ওই মা-ছেলেকে দ্রুত পূনর্বাসনের জন্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, কবরস্থানে বসবাস করা মা-ছেলেকে দ্রুত পূনর্বাসন করে তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। দীর্ঘবছর ধরে ওই অসহায় পরিবারটি কবরস্থানে বসবাস করছেন। ফলে কবরস্থানের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, কবরস্থানে বসবাস করা অসহায় পরিবারটিকে দ্রুত পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।