আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিশরের বিশ্ববিখ্যাত নারী কারি সামিআ বকর বানাসি নিজের পুরো জীবন ব্যয় করেছেন কোরআনের সেবায়। কোরআন বিষয়ক পাঠ-পঠনে নিমগ্ন থাকতেন দিন-রাত। মহীয়সী এ নারী ৯০ বছর বয়সে বুধবার মৃত্যু বরণ করেছেন।
গতকাল বুধবার (১২ আগস্ট) মিশরীয় কারিদের বৃহৎ সংগঠন ‘আন নিকাবা আল আম্মাহ লি মুহাফফিজ ওয়া কুররা’ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুরো জীবন কোরআনের সেবায় নিজেকে নিমগ্ন রেখেছেন খ্যাতিমান কারি সামিআ বকর। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও মাত্র ১১ বছর বয়সে কোরআন মুখস্থ করেন তিনি। কোরআনের পাঠ ও পঠনের জন্য পুরো জীবন পার করেন কোরআনের এ সেবক। মৃত্যুকালে পাঠ করেন কালেমা শাহাদাত, যা তাঁর আল্লাহর একনিষ্ঠ প্রেমিক হওয়ার প্রমাণ দেয়।
শুধু মিশর নয়, বরং পুরো বিশ্বে সামিআ বকর ছিলেন কোরআনের পঠনপদ্ধতি ‘ইলমুল কিরাআহ’ বিষয়ে একজন প্রাজ্ঞ নারী। তাঁর সুরেলা কণ্ঠের তেলাওয়ার বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। মিশরসহ পৃথিবীর নানা দেশের কোরআনপ্রেমিকরা এসে তাঁর কাছে কিরাআত বিষয়ক পাঠ গ্রহণ করত। ‘কিরাআত’ বিষয়ে নারী-পুরুষ মিলে ১০ জন তাঁর কাছে ‘ইজাজাহ’ তথা অনুমোদন লাভ করে। কোরআনের পাঠের অনুমোদিত সাত পঠনরীতির তিন পদ্ধতি – ‘রিওয়ায়াতু হাফস’, ‘রিওয়ায়াতু ওয়ারশ’ ও ‘রিওয়ায়াতু হামজাহ জায়্যাত’ অনুসরণ করে তিনি কোরআন তেলাওয়াত করতে পারতেন।
সামিআ বকর বানাসি ১৯৩০ সালে মিশরের মানুফিয়া জেলার কুয়েসনা এলাকার নেতৃস্থানীয় এক পরিবারে জম্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার ইচ্ছা ছিল, তাঁর এক ছেলে কোরআনের হাফেজ হবে। কিন্তু কোনো ছেলে না হওয়ায় তাঁর অন্তরে ছিল সামান্য ব্যথা। কিন্তু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জম্মগ্রহণ করেও সামিআ বকর বাবার স্বপ্ন পূরণে ব্রতী হন।
প্রখর মেধা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে নিজ গ্রামেই তিনি পুরো কোরআন মুখস্থ করেন। অতঃপর ‘ইলমুল কিরাআহ’ তথা কোরআনপাঠ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন। উচ্চশিক্ষা লাভ করে তিনি পুরো জীবন কোরআন পাঠ ও পঠনে ব্যয় করেন। নির্বিঘ্নে কোরআনের সেবা দিতে বিয়ে করেননি তিনি। সারাদিন তিনি কোরআনের পাঠ শেখাতেন। অতঃপর এশার নামাজের পর থেকে ফজর নামাজ পর্যন্ত নিজে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। এ সময়ে তিনি প্রায় সাত থেকে ১০ পারা তেলাওয়াত করতেন।
সূত্র : আল ইয়াওম আস সাবি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।