জুমবাংলা ডেস্ক : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে ২১ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) পরশু রাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যে কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী শনিবার মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশটি স্থগিত করা হয়েছে।’
এদিকে অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়াও পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলছে। অসুস্থতার কারণে তাঁর বিদেশে যাওয়াটাও পেছানো হয়েছে।’
চলতি মাসেই দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল খালেদা জিয়ার। প্রথমে যাওয়ার কথা ছিল যুক্তরাজ্যে। সেখান থেকে অন্য একটি দেশে নিয়ে তাকে কোনো একটি ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে’ ভর্তি করার কথা ছিল। এর মধ্যে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনেরও কথা ছিল খালেদা জিয়ার। বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস এসেছিল অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও। সে অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের পাসপোর্ট ও ভিসার কাজও সম্পন্ন হয়েছে ইতিমধ্যে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থরাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর।
দেশে করোনা মহামারির পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনে প্রতি ছয় মাস পরপর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার। প্রতিবারই তাকে দুটি শর্ত দেওয়া হচ্ছিল। তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।
সাময়িক মুক্তির পর তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও ওই শর্তের যুক্তি দিয়েই বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে শেখ হাসিনার সরকার।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন। মুক্তির পর গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে এই সংবর্ধনায় উপস্থিত হন খালেদা জিয়া।
আগামী ২১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ অনুষ্ঠানের কথা ছিল। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল খালেদা জিয়ার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।