নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে কয়েক ঘণ্টার টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম, শিল্পকারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কিছু অংশ ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকরা।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোররাত থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত টানা মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে পৌরসভার ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্ত লিচুবাগান এলাকা, তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লিচুবাগান এলাকার প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ইউর ফ্যাশন, পিলোসিট টেক্সটাইলসহ একাধিক শিল্পকারখানা ও বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তেলিহাটির মুলাইদ গ্রামের রঙিলা বাজার এলাকায় হাজারো ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পানির নিচে। ডুবে গেছে ক্যাপ্টেন সিএনজি স্ট্যান্ড ও প্যারাডাইস স্পিনিং, পিনসিল লিমিটেডসহ বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় যান চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে খাওয়ার পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ আলম অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের এলাকার শিল্পকারখানাগুলোতে হাঁটুপানি। পাকা সড়কে জল জমে গেছে। মূল সমস্যাটা পাইপ কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায়। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ও ইউর ফ্যাশন কারখানার মালিকেরা ওই মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন বলে আমরা ভুগছি।”
মুলাইদ গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া বলেন, “ভোর থেকে টানা বৃষ্টিতে ঘরে হাঁটুপানি জমেছে। শিশু-বৃদ্ধরা ঘরবন্দী, রান্নাঘরে পানি ঢুকে রান্নাবান্না বন্ধ। কালভার্টের মুখ বন্ধ থাকায় পানি নামছে না।”
সংরক্ষিত ইউপি সদস্য হাজেরা খাতুন বলেন, “মুলাইদ গ্রামের প্রায় সব ঘরে পানি ঢুকেছে। মানুষ খাবার রান্না করতে পারছে না। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও পানিতে ডুবে আছে। পানি বের হওয়ার সব রাস্তা বন্ধ।”
মাওনা চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ী ফয়সাল আহমেদ বলেন,“প্রতিবার বৃষ্টি হলেই মাওনা চৌরাস্তা ডুবে যায়। হাঁটুপানি হয়ে যায় মহাসড়ক। ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে গন্ধ ছড়ায়। তারপরও হাজারো শ্রমিক ও যাত্রীকে সেটার ভেতর দিয়েই যেতে হয়।”
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ জানান, “কয়েক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে শতাধিক বসতবাড়ি ও বেশ কিছু শিল্পকারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু স্থানে পানি নিষ্কাশনের বাধা তৈরি হয়েছে। রোববার এক্সকাভেটরের মাধ্যমে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।