স্পোর্টস ডেস্ক : সেমির লক্ষ্যে কাতার বিশ্বকাপের শেষ আট অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনা। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের খেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে খেলা ফিরে ২-২ সমতায়, ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সে একস্ট্রা সময়ের ৩০ মিনিটও শেষ। ফলে এখন ফলাফল নির্ধারণ হবে টাইব্রেকারে।
প্রথমার্ধে মেসির দুর্দান্ত এক এসিস্টে ডাচদের বিপক্ষে ১ গোলের লিড নিয়ে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। খেলার ৩৫ মিনিটে গোলটি করেন নাহুয়েল মলিনা। প্রথমার্ধে ১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। ৪৫ মিনিট শেষে ১০ মিনিটের বিরতি শেষ করে আবারো সেমির লক্ষ্যে দ্বিতীয়ার্ধের লড়াইয়ে মাঠে নামেন মেসি ও ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংরা। বিরতি থেকে ফিরে আবারো লিড বাড়ায় মেসিরা। ঠান্ডা মাথার আদুরে কিকে মেসি বল গড়ান নেদারল্যান্ডসের জালে। পেনাল্টি থেকে মেসির দেয়া এই গোলেই ২-০ তে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধের ৭৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি।
তবে এ লিড বেশিক্ষন স্থায়ী হয়নি। খেলার ৮৩ মিনিটে ডাচদের হয়ে ১ গোল পরিশোধ করেন ওট ওয়েগস্ট। আর তাতেই ২-১ এ ব্যবধান কমে ডাচদের। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে অতিরিক্ত ১০ মিনিট বাড়তি সময় পায় দু’দল। আর এসময়েই কাজে লাগায় ডাচরা। খেলার একেবারে শেষ মূহুর্তে গোল করে সমতায় ফিরে নেদারল্যান্ডস। ডাচদের হয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ওট ওয়েগস্ট।
শুক্রবার ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে শুরু হয় ম্যাচটি।
আজকের এই ম্যাচে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না দুই দল। কারণ আজকের খেলায় যে জিতবে সেই উঠে যাবে সেমি ফাইনালে। আর তাই ইনজুরি সত্বেও নিজেদের সেরা একাদশকেই বেছে নিয়েছেন আজেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনী। অন্যদিকে ডাচ কোচ ফন গাল আর্জেন্টিনাকে আটকাতে সাজিয়েছেন তার গোপন পরিকল্পনা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে খবর বেরিয়েছিল ইনজুরিতে ম্যাচ মিস করতে যাচ্ছেন ডি পল। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে তাকে নিয়েই একাদশ সাজিয়েছেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
তবে ডি পল একাদশে জায়গা পেলেও আবারও বেঞ্চে বসেই ম্যাচ শুরু করবেন ডি মারিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে না থাকলেও এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরছেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।
যে দুইজনকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল, এখন তাদের পাওয়া গেলো। সে হিসেবে একাদশ সাজালে লে আলবিসেলেস্তেদের গোলপোস্ট অক্ষত রাখার দায়িত্বে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। রক্ষণভাগের দায়িত্বে ওটামেন্ডি, রোমেরো, মলিনা এবং আকুনা।
আক্রমণভাগে বিশ্বসেরা লিওনেল মেসির সঙ্গে আছেন জুলিয়ান আলভারেজ ও ডি মারিয়া। মধ্যমাঠে ডি পলের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরাবেন মার্ক অ্যালিস্টার এবং এনজো ফার্নান্দেজ।
অন্যদিকে শক্তিশালী দল নিয়েই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামলো নেদারল্যান্ডস।
পুরো ফিট দলকেই নামিয়েছেন নেদারল্যান্ডস কোচ লুইস ফন গাল। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৩-১ গোলে শেষ ষোলো জয়ের ম্যাচে পাওয়া গোড়ালির সমস্যা কাটিয়ে উঠেছেন জেরেমি ফ্রিমপং। তবে মিডফিল্ডার ডেঞ্জেল ডুমফ্রাইসকে সরিয়ে তার খেলার সম্ভাবনা নেই।
মাঝমাঠের বাঁ দিকে প্রত্যাশিতভাবে সামলাচ্ছেন ড্যালি ব্লাইন্ড। তার সঙ্গী মার্টেন ডি রুন, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। গোলকিপার আন্দ্রিয়েস নোপার্টসহ আছেন জুরিয়ান টিম্বার, ভার্জিল ফন ডাইক ও নাথান আকে।
গোল করার মূল দায়িত্ব থাকবে ডেভি ক্লাসেনের কাঁধে। মেম্ফিস ডিপে ও গডি গাকপো তাদের দারুণ ফর্ম ভাবাচ্ছে আর্জেন্টিনাকে।
এক নজরে দুই দলের লড়াই
পরিসংখ্যান বলছে, নেদারল্যান্ডস বরাবরই কঠিন প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার জন্য। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে ডাচরা। ৯ বারের দেখায় তারা জিতেছে ৪টি ম্যাচ, আর্জেন্টিনার জয় ৩টিতে, ড্র হয়েছে ২টি।
বিশ্বকাপে এর আগে পাঁচবার দেখা হয়েছে আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডসের। এখানে আবার সমানে সমান দুই দল। নেদারল্যান্ডস দুইটি ম্যাচ জিতেছে, আর্জেন্টিনাও দুটি। একটি ম্যাচ হয়েছে ড্র।
সবশেষ দুই দলের দেখা হয়েছিল ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সেই ম্যাচ গোলশূন্য ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে ডাচদের কাঁদিয়ে ফাইনালে নাম লেখায় লিওনেল মেসির দল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।