জুমবাংলা ডেস্ক: কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের সিন্দুকে শুধুই টাকা নয় এবার পাওয়া গেলো এক মায়ের আকুতি ভরা চিরকুট। নাম পরিচয়হীন এই চিরকুট পাওয়া গেছে মানুষের দানের ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকার মাঝেই।
পাগলা মসজিদে মোট আটটি লোহার দানসিন্দু রয়েছে। এবার দানসিন্দুকগুলো ৪ মাস ১৭ দিন পর খোলা হয়েছে।
শনিবার (০৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খোলার পর এক মায়ের চিরকুট পাওয়া গেছে। সেই চিরকুটে সন্তানের মঙ্গল কামনা করা হয়েছে।
অজ্ঞাত এক মায়ের ওই চিরকুটের ছবি তোলা হয়। পাঠকদের জন্য হুবহু চিরকুট তুলে ধরা হল-
‘আমার ছেলের নাম মো: মোরসালিন, বয়স-১৪ বছর, ছোট বেলা থেকে ইচ্ছা ছিল তাকে মাদরাসায় লেখাপড়া করিয়ে একজন হাফেজ বানাবো। কিন্তু আমি এই পর্যন্ত ৭টি মাদরাসা পরিবর্তন করেও তার মনোযোগ পড়ায় বসাতে পারিনি। এখন আপনারা আমার ছেলের জন্য একটু দোয়া করে দিবেন যেন সে একজন হাফেজ হতে পারে।’
টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ফারজানা খানম, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ পারভেজ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম, শিহাবুল আরিফ, অর্ণব দত্ত, মো. মাহমুদুল হাসান, রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার মহাব্যবস্থাপক ও শাখা প্রধান রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এর আগে সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ জুন পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়েছিল। তখন সর্বোচ্চ ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা এবং বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। এবার ৪ মাস ১৭ দিন পর দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়েছে।
মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন জানায়, এই মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়- এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করেন।
হিন্দু-মুসলিমসহ নানা ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে এখানে আসেন । তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলংকারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। এই ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।