ডায়াবেটিসকে বলা হয় লাইফস্টাইল ডিজিজ। লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে টাইপ২ ডায়াবেটিসে খাদ্য ও লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে ওষুধমুক্ত জীবন যাপন করা সম্ভব। এই লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে যে জ্ঞান জরুরি, তা হচ্ছে, গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সম্পর্কে জানা। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে, সেসব কার্বোহাইড্রেট তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম বা মাঝারি থাকে, সেগুলো রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না। তাই যাঁদের শরীরে ব্লাড সুগার সাধারণের চেয়ে বেশি, তাঁদের যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে, তা কম খাওয়া ভালো।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি বলে ভাত খাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে ব্লাড সুগারের রোগীদের। তাঁরা কতটা ভাত খাবেন বা আদৌ খাবেন কি না, এই নিয়ে সংশয়ে থাকেন। একাধিক গবেষণায় দাবি, শর্করা জাতীয় খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখা হলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কমে যায়, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ) ২০২২ সালে তাদের জার্নালে প্রকাশ করে যে ঠান্ডা ভাতের শর্করা মানবশরীরে বেশি শোষিত হয় না। তারা বলেছে, ঠান্ডা ভাতে গরম ভাতের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি প্রতিরোধী স্টার্চ রয়েছে। সদ্য প্রস্তুত চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭৮। ভাতকে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে ঠান্ডা করে পরে খাওয়ার আগে হালকা গরম করা হলে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে হয় ৫৪।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ার অর্থ, এটি মানবশরীরে কম কার্বোহাইড্রেট শোষণ করে। সুতরাং একই ভাত সামান্য তাপমাত্রা ও সময় পরিবর্তনের জন্য শরীরে অনেক কম কার্বোহাইড্রেট শোষণ করে; এটা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। ফলে তারা পরামর্শ দিয়েছে, এক দিনের জন্য ভাত ফ্রিজে রেখে দিতে। তাহলে এই ভাত ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কম ক্ষতিকর হবে।
পোজনান ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্সেসের গবেষকদের একটি দল টাইপ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৩২ জন রোগীর ওপর গবেষণা করে। দুটি ভিন্ন পরীক্ষায় খাবার খাওয়ার পর তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা তুলনা করে। একটি খাবার ছিল দীর্ঘ শস্যের সাদা ভাত; এটায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ প্রায় ৪৬ গ্রাম।
অন্যটি ভাতের একই অংশ ছিল, কিন্তু ২৪ ঘণ্টার জন্য একটি ফ্রিজে ঠান্ডা করে আবার গরম করে পরিবেশন করা। গবেষকেরা দেখেছেন যে অংশগ্রহণকারীরা ঠান্ডা করে গরম করা ভাত খাওয়ার পর তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কম বৃদ্ধি পায়। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পরামর্শ, এক দিন আগে রাঁধা ভাত ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে তারপর খান। তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়বে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।