গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী ভাঙন এবং নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, সোমবার বিকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ির তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮০ সে.মি. ও ঘাঘট নদীর পানি নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
ওইসব নদ নদী তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের অন্তত ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙনও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙন কবলিত ও পানিবন্দি লোকজন তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গরু-ছাগল নিয়ে নৌকায় করে আসবাবপত্র নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফুলছড়ি ইউনিয়নের জামিরা ও নামাপাড়া গ্রামের ৫৭টি, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের জিগাবাড়ি, আলগারচর, ভাটিয়াপাড়া, পূর্ব হরিচন্ডি, পাগলারচর, তিনথোপা গ্রামে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ৮৫টি পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছে।
কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিটন মিয়া বলেন, গাইবান্ধা-বালাসী সড়কে পানি ওঠার পাশাপাশি সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ। পাউবো জিও ব্যাগ ফেললেও এলাকাবাসী শংকিত। তিনি বলেন, বাড়িতে পানি ওঠায় বাঁধে প্রচুর মানুষ বাঁধে উঠেছেন। তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও ত্রাণ সামগ্রী প্রয়োজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবে বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৫ লাখ টাকা ও ৬০ মে. টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। তারমধ্যে বন্যা দুর্গতদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৪ উপজেলায় ২ লাখ টাকা এবং ৪০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে। বাঁধগুলো যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য বহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ঘাঘট শহর রক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে গ্রাম পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবীদের সার্বক্ষণিক তদারকিতে নিয়োগ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।