নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরে বেতন ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, চক্রবর্তী, গাজীপুর সদরের শিরিরচালা এলাকার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ শুরু করে। এতে মহাসড়কের বেক্সিমকো থেকে জিরানি পর্যন্ত যানজটের তৈরী হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলন নিরসনে দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতার বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ।
জানা যায়, গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করে কারখানার শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রা এলাকায় মাহমুদ জিন্স লিমিটেড ও নায়াগ্রা টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। অপরদিকে, চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতন ভাতার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকরা।
এদিকে, গাজীপুরের সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার এক্সিকিউটিভ হাই ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কারখানাটিতে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক রয়েছেন। ইতিপূর্বে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা কারখানার আয়রন ম্যান মো. আরমানকে মারধর করে মানিব্যাগ ও মোবাইল কেড়ে নেয়। শ্রমিকদের সন্দেহ দাবি উপস্থাপন করায় কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে তাদের লোকজন দিয়ে আরমানকে মারধর করেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করছেন।
অপরদিকে, গাজীপুরের টঙ্গীর খাঁ পাড়া এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সিজন ড্রেস নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
শিল্প পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর খাঁ পাড়া এলাকায় সিজন ড্রেস নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার ৫ থেকে ৬শ শ্রমিক কাজ করেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বকেয়া বেতন ভাতা ও অন্যান্য দাবিতে কর্মবিরতি করে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন।
কারখানা শ্রমিক পারভিন জানান, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন থামাবো না।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সারা পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে, গাজীপুরের সদর থানাধীন রাজেন্দ্রপুর এলাকার বেতন বৃদ্ধিসহ আটদফা দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে তাসমিয়া হারবাল লিমিটেডের শ্রমিকর। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। এসময় তারা কারখানার ভেতরে হইচই করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মাঝে সমঝোতার চেষ্টা করছে শিল্প পুলিশ।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী শ্রমিক আন্দোলন বেতন বৃদ্ধির দাবিতে নয় দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন ভেরিতাস ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে সিজন ড্রেস কারখানার শ্রমিকরা। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এছাড়া বেতন ভাতা পরিশোধে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি তা কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।