নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা চলনবিল অধ্যুষিত একটি এলাকা। পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর বসবাস এই উপজেলায়। এই পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর অনেক নারীরা প্রতিদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএন) অফিসে আসেন নানা অভিযোগ নিয়ে। তারা আসেন সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আশায়।
গুরুদাসপুরের ইউএনও অফিসে এসব মানুষকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হতো অফিসের বাহিরে। তবে এসময় সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হতো দুগ্ধপোষ্য শিশু নিয়ে আসা মায়েদের এবং গ্রামের দরিদ্র অসহায় ছিন্নমূল নারীদের। ছিলো না কোন হেল্প ডেস্ক। ছিলো না নারীদের সেবা দেওয়ার জন্য কোনও নারী উদ্যোক্তা। নাটোর জেলার গুরুদাসপুরে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় চালু করা হলো “নারী সহায়তা কেন্দ্র”।
উপজেলা সদর থেকে শুরু করে পল্লী গ্রামের সাধারণ মানুষ ও নারীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ইউএনও অফিসে আসে। ছোট ছোট সমস্যা মৌখিক ভাবে বললেও বড় বড় সমস্যাগুলো আবেদন করে করতে হয় তাদের। সেই আবেদন বিনামুল্যে করে দেয়ার জন্যে “নারী সহায়তা কেন্দ্রে” রাখা হয়েছে একজন নারী উদ্যোক্তাকে। সেই উদ্যোক্তা বিনামূল্যে একজন অসহায় নারীকে তার সমস্যার বিষয়ে ইউএনও বরাবর আবেদন করিয়ে দিবে। আবেদনের সাথে দরকার হবে রেভিনিউ স্ট্যাম্প। কিন্তু সেই সেবাটিও বিনামুল্যে দেওয়া হবে তাদের। “নারী সহায়তা কেন্দ্রে” থাকবে একটি রেজিস্ট্রার। যে রেজিস্টার প্রত্যেকদিন ইউএও নিজেই দেখবে এবং রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ প্রত্যেকটি সমস্যার সমাধানও তিনিই দিবেন। “নারী সহায়তা কেন্দ্রের” পাশেই রয়েছে “হেল্প ডেস্ক কক্ষ” সেই কক্ষে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ তাদের সমস্যার কথা বলতে পারবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন বলেন, গুরুদাসপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে আমার যোগদানের প্রায় ৫ মাস। যোগদানের পর থেকেই দেখছি, অনেক মহিলা অফিসের বাহিরে দাড়িয়ে থাকে। কখনও কখনও আমার অফিসে বেশি ভিড় থাকার কারণে অনেক মহিলা বাড়িতে চলে যায়। এই অফিসে সেবা নিতে আসা প্রায় সকলেই গ্রাম অঞ্চলের নারী ও সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ ও অসহায় নারীদের জন্যই আমার এই উদ্যোগ।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। কেননা গ্রামের অসহায় নারীদের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে করা এই “নারী সহায়তা কেন্দ্র” হওয়ায় সকলেই এখন তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে।
নাটোর জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ জানান, জেলায় এই প্রথম চালু করা হলো “নারী সহায়তা কেন্দ্র”। পর্যায়ক্রমে জেলার প্রত্যেক উপজেলায় এই কেন্দ্র চালু করা হবে। সাধারণ মানুষ ও নারীদের জন্য এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আশা করি খুব ভালো সাড়া ফেলবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।