জুমবাংলা ডেস্ক : ৫০ হাজার টাকা ঘুষ না দেয়ায় যশোরের শার্শা উপজেলায় দুই সন্তানের জননীকে (৩২) সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ প্রমাণ মিলেছে। গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত করেন চিকিৎসক।
মঙ্গলবার গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার পরীক্ষাগার থেকে জানানো হয়, গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ আলামত পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ। তিনি বলেন, ওই গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ শিকার হয়েছেন। সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণকে বা কারা জড়িত তা নিশ্চিত করতে ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ আলামত পাওয়া যায়। কিন্তু সেই বীর্য কার বা কাদের তা ডিএনএ টেস্ট ছাড়া বলা যাবে না। সিআইডির মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে। সিআইডির পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, আলামত প্রস্তুত রাখতে। তারা ডিএনএ টেস্ট করবেন।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গৃহবধূ যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। হাসপাতালে ডাক্তারকে গিয়ে গৃহবধূ বললেন সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণের শিকার তিনি। এরপর পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা জানতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে গৃহবধূ ও অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুলকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে এ ঘটনায় মামলা হলেও এজাহারে নাম নেই এসআই খায়রুলের।
এসআইকে বাদ দিয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও একজনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে মঙ্গলবার রাতে শার্শা থানায় মামলা করেন গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ। তবে গৃহবধূর অভিযোগ, গণধর্ষণে জড়িত ছিলেন এসআই খায়রুলও। তবে মামলার এজাহারে কেন এসআই খায়রুলের নাম নেই সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি গৃহবধূ।
ঘুষের জন্য গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের সোর্সসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহ উদ্দিন শিকদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলো- শার্শা উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের হামিজ উদ্দীনের ছেলে পুলিশের সোর্স কামারুল, লক্ষ্মণপুর গ্রামের মজিদের ছেলে কাদের ও মাজেদের ছেলে লতিফ।
যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, এসআই খায়রুলকে ওই নারীর সামনে হাজির করা হয়েছিল শনাক্তের জন্য। কিন্তু ওই নারী খায়রুলকে শনাক্ত করেননি। তবে তদন্তের স্বার্থে এসআই খায়রুলকে প্রত্যাহার করে যশোর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, এসআই খায়রুল পরিচয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা ওই ব্যক্তির সন্ধানে মাঠে নেমেছে পুলিশ। বুধবার রাতে যশোর পুলিশের বিশেষ শাখার এক বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন শিকদার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যশোর জেলায় খায়রুল বা খায়রুল আলম নামে কোনো পুলিশ সদস্য আছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।
তবে জানা গেছে, শার্শা থানার এসআই শেখ খায়রুল বাসার গত ২৫ আগস্ট থেকে ৩০ দিন মেয়াদী বিআইসি প্রশিক্ষণে এসবি ট্রেনিং স্কুল ঢাকায় অবস্থান করছেন। বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে এসআই খায়রুল ইসলাম কর্মরত আছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।