জুমবাংলা ডেস্ক : চলন্ত ট্রেনে সন্তান জন্ম দেওয়া মুক্তি পারভীন (২৫) বাড়ি ফিরেছেন। ট্রেনে জন্মের পরে কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসাপাতালের গাইনী ওয়ার্ড ভর্তি করলে আজ বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। মুক্তি পারভীন-মনসুর আলী দম্পতির বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ভুমরাদহ হাজী পাড়া গ্রামে।
অপরদিকে, দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসাপাতালের পক্ষ থেকে মুক্তি পারভীন ও নবজাতক মিতালীকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে দিয়েছেন। যাতে করে বাড়িতে গিয়ে কোনো ওষুধ কিনতে না হয়।
বিদায়ের সময় বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহী সুফি নুর মোহাম্মদ দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে দুপুর ২টার সময় গ্যাংকারে তুলে দেন। মুক্তি পারভীন ও তার সন্তানকে বিনা ভাড়ায় বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের গ্যাংকারে করে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহী সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, মুক্তি পারভীন এবং তার নবজাতক পুরোপুরি সুস্থ। আমরা গ্যাংকার নিয়ে চেকিংয়ে বেরিয়েছিলাম, আমাদের রেলওয়ের লোকজনরা করোনাকালীন অলস সময় পার করছেন না কি কাজ করছেন তা দেখার জন্য। পাশাপাশি রেল লাইন ও অন্যান্য কোনো মেরামতের কাজ রয়েছে কিনা তা যাচাই করছিলাম। এরই মধ্যে আমরা জানতে পারলাম যে, গত ৪ এপ্রিল ট্রেনে জন্ম নেয়া নবজাতক ও তার মাকে হাসাপাতাল থেকে ছুটি দেয়া হবে। তখন করোনাকালীন কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও মা ও সন্তানের যাতায়াত অন্য যেকোনো মাধ্যমের চেয়ে ট্রেন নিরাপদ। যেহেতু আমাদের সুযোগ রয়েছে তাই আমরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মা ও নবজাতককে আমাদের গ্যাংকারে করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, সম্ভবত এটাই প্রথম কোনো ট্রেনের নামে সন্তানের নাম রাখা হলো মিতালী। আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তার পিতা-মাতা এতে রাজি হয়েছেন।
বাড়ি যাওয়ার সময় মুক্তি পারভীনের সঙ্গে ছিলেন স্বামী মনসুর আলী ও বড় মেয়ে মুসফি (২)।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট এবিএম জিয়াউর রহমান বিষয়টি জানান, প্রসূতি মাতা মুক্তি পারভীন ও নবজাতককে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। এ জন্য আমরা বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহী সুফি নুর মোহাম্মদ স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মুক্তি পারভীন বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের সেবা দিয়েছে। তারা ট্রেনে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শুরু করে আমাদেরকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতা করেছে। আমরা সেজন্য সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
এ সময় দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রেলওয়ের স্টাফরা সবাই হাত নেড়ে নবজাতক ও তার পরিবারকে বিদায় জানান।
উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল দ্রুতযান ট্রেনে নবজাতক কন্যা সন্তান জন্ম দেন মুক্তি পারভীন। এ সময় তাকে ট্রেনের মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহায়তা দেয়। সেদিন ওই ট্রেনে নতুন অতিথির আগমনের জন্য আন্তঃনগর দ্রুতযান ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ১৩ মিনিট পর দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে গিয়েছিল। আজ বুধবার তারা নবজাতক ও তার পরিবারকে নিরাপদে গ্যাংকার ট্রেনে করে বাড়ি পৌঁছে দিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।