জুমবাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চাচাতো ভাইয়ের নতুন বউয়ের রূপে আকৃষ্ট হয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ঘটক মো. বোরহান মিয়ার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার বোরহান মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নববধূ। এরপর বোরহানকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এছাড়া এদিন দুপুরে ওই নববধূর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৫ দিন আগে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালালবাজার ইউপির নন্দনপুর গ্রামের দিনমজুরের শ্রবণ ও বাক-প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিজের প্রতিবন্ধী চাচাতো ভাইকে দ্বিতীয় বিয়ে করান বোরহান। প্রতিবন্ধী চাচাতো ভাইয়ের বাড়ির পাশেই বোরহানের বাড়ি। ভুক্তভোগী নববধূর স্বামী দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাই ভুক্তভোগী নববধূ স্বামীর আগের দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে একাই থাকেন।
এ সুযোগে বাড়িতে এসে বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন বোরহান। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের হুমকি দেন। পরবর্তীতে ঘটনাটি স্বামীকে জানান নববধূ। পরে বোরহানের বাবা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীর স্বামী। তবে বোরহান প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ বিচার করেননি।
৯ অক্টোবর মাগরিবের নামাজ পড়ে নিজ কক্ষে শুয়ে ছিলেন নববধূ। এ সময় কৌশলে ঘরে ঢুকে নববধূর হাত ধরে কোলে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন বোরহান। পরে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নববধূর চিৎকারে লোকজন এলে পালিয়ে যান বোরহান। এ ঘটনার পরদিন রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্যের ভাই রিয়াজসহ প্রায় ৫০-৬০ জনের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক হয়। এতে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে মারধরের বিচার করা হয়। এ সময় বৈঠকে ওই নববধূর স্বামীকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
এছাড়া বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে জানানো বা বাড়াবাড়ি হবে না বলে বোরহানের কাছ থেকে দুই দফায় ৮২ হাজার টাকা আদায় করেন স্থানীয় দালাল চক্র। পরে ঘটনাটি ১১ অক্টোবর রাতে নববধূর অভিভাবক পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রায়পুর শহরের টিঅ্যান্ডটি সড়কের একটি চায়ের দোকান থেকে বোরহানকে গ্রেফতার ও ভুক্তভোগী নববধূকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় সব সাক্ষী, প্রমাণ ও নববধূর জবানবন্দির ভিত্তিতে ধর্ষণচেষ্টার মামলা রেকর্ড করে সোমবার দুপুরে দুইজনকে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত বোরহানকে কারাগারে পাঠায়।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউপি সদস্যের ভাই রিয়াজ বলেন, নববধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে কোনো বৈঠক হয়নি। চড়-থাপ্পড়ের বিচার হয়েছে। বোরহানের কাছ থেকে জরিমানার পাঁচ হাজার টাকা ছাড়া অন্য কোননো টাকা নেয়া হয়নি।
রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, ভুক্তভোগী নববধূর বক্তব্য লক্ষ্মীপুরের এএসপি (রায়পুর সার্কেল) স্পীনা রানী প্রামাণিক নিয়েছেন। ঘটক জেঠাতো ভাসুর বোরহানের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেছেন ওই নববধূ। মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।