জুমবাংলা ডেস্ক :রাগ পুষিয়ে রেখে প্রায় দেড় বছর পার। অপঃপর চাচা হত্যা মামলার এক আসামির পা কেটে প্রতিশোধ নিয়েছে ভাতিজা। গতকাল সোমবার রাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কানুরামপুর এলাকায়। পা কাটার ওই দৃশ্য দূর থেকে অনেকেই প্রত্যক্ষ করলেও সন্ত্রাসীদের অস্ত্রেরে মুখে কেউ এগিয়ে যায়নি। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার মামলার পর এক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আহত ওই ব্যক্তি হচ্ছেন, উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কতুবপুর গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মো. শামীম ভুঁইয়া (৩৮) ওরফে তামিম। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোর্শেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় অন্যান্য আসামির সাথে আহত শামীম ছাড়াও তাঁর ভাই রুবেল বাবা নুরুর ইসলাম আসামি ছিলেন। কয়েকমাস পর সকল আসামিই জামিনে মুক্তি পায়। এরপর হত্যার প্রতিশোধ নিতে বেশ কয়েক দফা হামলার চেষ্টাও চালায় নিহত মোর্শেদের লোকজন।
এলাকার লোকজন ও আহত শামীমের ভাই রুবেল ভূঁইয়া জানান, ঈদ উপলক্ষে তিনি তাঁর ভাই শামীম ভূঁইয়াকে নিয়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি কানুরামপুর পশ্চিম বাস স্টপেজে থামার পরই ১০-১২ জন সশস্ত্র লোক তাঁদের ঘেরাও করে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে শামীম ভূঁইয়াকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে সড়কের ওপর ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। তিনি ভাইকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে একজন দুর্বৃত্তরা তাঁর দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে ধাওয়া করে। এ সময় তিনি দৌঁড়ে নিজের প্রাণ রক্ষা করেন। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর (৩৮) নামে এক ব্যক্তি তাঁর ভাইকে রাস্তায় শুইয়ে পায়ের নিচে ইট রেখে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন করে। পরে কাটা পায়ের অংশটি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
শামীম ভূঁইয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় সোমবার রাতেই ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন আহতের স্বজনেরা।
জানা যায়, অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হচ্ছেন নিহত মোর্শেদের বড় ভাইয়ের ছেলে। গতকাল সোমবার রাতে ও গতকাল মঙ্গলবার সকালে সংঘটিত নৃশংস ঘটনা সম্পর্কে কানুরামপুর ও কুতুবপুর গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন মোর্শেদ আলী। গত বছরের ১ ফেব্রুয়রি প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে রাস্তায় আটকিয়ে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোর্শেদ সমর্থকরা প্রতিপক্ষের দোকানপাট, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে।
রুবেল ভূঁইয়া জানান, তিনি ও তাঁর ভাই মোর্শেদ হত্যা মামলার আসামি। বর্তমানে তাঁরা আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তাই মামলার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের বাইরে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। তাছাড়া ওই হত্যার ঘটনার পর আমাদের শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নিঃস্ব করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনায় কোনো বিচার পাইনি। গতকালও হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। চোখের সামনে ভাইয়ের পা কর্তন করে নিয়ে গেছে। তারপরও আমরা বিচার ব্যবস্থার ওপর থেকে আস্থা হারাইনি।
নান্দাইল থানার ওসি মনসুর আহাম্মেদ জানান, এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।