জুমবাংলা ডেস্ক : চীন থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চীনকে চিঠি দেয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, কেউ ফিরতে চাইলে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করবে সরকার।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, উহান প্রদেশ থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে চীনকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ, কেউ ফিরতে চাইলে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা হবে। চীনের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে আমরা এরইমধ্যে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা-সংক্রান্ত সব প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে, চীন থেকে যাদের ফিরিয়ে আনা হবে তাদেরকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় সরকার সতর্কতা জারির ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান শাহরিয়ার আলম।
এদিকে, চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস কোনওভাবেই যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রথম কথা হলো এধরনের সংক্রমণ ব্যাধি যখন ছড়িয়ে পড়ে, সব চেয়ে ভালো হলো সতর্ক থাকা। করোনা ভাইরাস নতুন ও পরিচিত। চীনের স্বাস্থ্য ও সরকার ব্যবস্থা অনেক উন্নত, সে জায়গায় প্রথম কথা হলো চীনের স্থানীয় প্রশাসন যা বলছে তা মেনে চলা, সেই দেশে অবস্থান করছেন সকলের।
তিনি আরো বলেন, আমরা বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছে সেই বার্তাটিই দিয়েছি। তবে সেখানে বসবাস করা অনেক বাংলাদেশি পরিবারের মধ্যে আগ্রহ দেখেছি, তারা আমাকে টেলিফোনও করেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যারা ফিরতে চাই, তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে। আমরা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর নির্ভর করবে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম কি হবে। ফিরিয়ে আনাও যে সব সমস্যার সমাধান তাও নয়, ছাত্রদের মধ্য থেকে আমরা দুই ধরনেরই প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, অনেকে ওখানেই থাকতে চেয়েছেন অনেকে আবার ফিরতেও চেয়েছেন। প্যানিক হওয়ার কারণ নেই, আমাদের প্রতিনিয়ত খোঁজ নেয়াতে ওখানে প্যানিক কিছুটা প্রশমন হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরাসহ আরও বেশ কিছু রাষ্ট্র চীনকে চিঠি দিয়েছে, তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে। ইতোমধ্যেই আমরা বিমানের সাথে কথা বলেছি, প্রয়োজন হলে আমরা চার্টারড ফ্লাইট নিবো। বাংলাদেশিদের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি, তবে দেশে ফেরার পর তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার দরকার আছে, ১৪ দিন পর্যন্ত ভাইরাসটি সুপ্ত অবস্থায় থাকে, ফিরে আসা লোকদের এই সময়টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এসব প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি সভা হবে কাল পরশু। উহান প্রদেশে অনেক ছাত্র ও ব্যবসায়ীরা আছে বাংলাদেশেও বিভিন্ন প্রকল্পে কয়েক হাজার কর্মী আছে তারাও যাওয়া আসা করবে তাদেরও পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হবে।
এসময় চীনের যাতায়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীনে যাতায়াতের ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, চীনের সাথে আমাদের আমদানি রপ্তানির সম্পর্ক আছে। ফলে পরিস্থিতি বিবেচনা না করে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে না। আপাতত চীন সফরে নির্দেশনা দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। চীনের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান ওখানে যারা যাওয়া আসা করেন।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে অনতিবিলম্বে আইসোলেশন ইউনিট খোলার নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলের উহানে প্রথমবারের মতো প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর চাউর হয়। ইতোমধ্যে মারণঘাতী এ ভাইরাস চীনের বিভিন্ন শহরের পাশাপাশি বিশ্বের বেশকিছু দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
মূলত, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনা কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্টও। সাধারণ ফ্লুর মতোই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এ রোগের ভাইরাস।
এদিকে, চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৮০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া আরও দুই হাজার ৭৪৪ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।