আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৩০ বছর আগে, ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয় ঘটে। সেই ঘটনাকে এখন পর্যন্ত বিশ্ব ইতিহাসের ভয়াবহতম পরমাণু দুর্ঘটনা ধরা হয়।
চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর ৩০ বর্গমাইল এলাকার সাড়ে ৮ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কয়েক বছর ধরে লাখো কর্মী পাঠিয়ে সেখানকার বিকিরণ দূর করার চেষ্টা করা হয়।
এখনো কয়েকহাজার বর্গমাইল এলাকাকে নিষিদ্ধ এলাকা বিবেচনা করা হয়। ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা দুর্ঘটনায় সরাসরি মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার বলে জানায়। কিন্তু পরিবেশবাদীদের অনুসন্ধানে ক্যান্সার এবং অন্যান্য জটিল রোগে আরো ৯৩ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মানিসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের আকাশে-বাতাসে ক্ষতিকর বিকিরণ বিপজ্জনক মাত্রা পেরিয়ে গিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে উৎপাদিত শিশুদের গুঁড়া দুধসহ বিভিন্ন খাদ্য ও পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা সতর্কতা আরোপ করা হয়।
চেরনোবিলকে ৩০ বছর পরেও বলা হচ্ছে মৃত্যুকূপ। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন আবার নতুন করে সেখানে কংক্রিটের আস্তরণ বসাচ্ছে। সোভিয়েত আমলে নির্মিত সুরক্ষা বর্ম বিকিরণ নিঃসরণ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারেনি। চেরনোবিলের ঘটনা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বকে সতর্ক করে তোলে।
তখন থেকে এর প্রযুক্তি উন্নয়নের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখনকার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রযুক্তি তুলনায় অনেক আধুনিক ও সুরক্ষিত।
পরিত্যক্ত চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় সম্প্রতি তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের পারমাণবিক সংস্থা। সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর সঠিক মাত্রা জানাতে না পারলেও গত শুক্রবার বলেছেন, রুশ বাহিনীর ভারি সামরিক সরঞ্জাম নড়াচড়া হওয়ার কারণে ওই এলাকায় তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা বাতাসে মিশছে।
ইউক্রেনের পারমাণবিক জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, চেরনোবিল এলাকায় উচ্চ মাত্রার গামা তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়েছে।
ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানায়, সপ্তাহখানেক আগে তুমুল লড়াইয়ের পর পারমাণবিক কেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকার দখল নিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রুশ হামলার নবম দিন অতিবাহিত হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।