আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি জাপানি এক রেস্তোরাঁয় আবার ফিরেছে ঝিঁঝিঁ পোকার তরকারি। মেন্যুতে আরও মিলবে মুচমুচে গুটিপোকা ভাজা, শুয়োপোকার মিষ্টান্ন এবং বিশেষ পতঙ্গ পানীয়। রাজধানী টোকিওর ‘টেক নোকো’ ক্যাফেতে পাওয়া যাচ্ছে অদ্ভুত এসব খাবার। তবে স্থানীয়দের কাছে বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয়। ছুটির দিনগুলোতে সুস্বাদু এ খাবারগুলো খেতে রীতিমতো লাইনে দাঁড়াচ্ছেন রাজধানীবাসী।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আমিষের চাহিদা পূরণেই জাপানে কীটপতঙ্গের দিকে ঝুঁকছে। জাতিসংঘের পূর্বাভাস মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রোটিনের ঘাটতির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। রয়টার্স।
‘টেক নাকো’ নামের ক্যাফেটির প্রতিষ্ঠাতা টাকেও সাইতো। নয় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত রেস্তোরাঁয় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ ধরনের আর্থ্রাপোড প্রাণী পাওয়া যায়। রেস্তোরাঁর ম্যানেজার মিচিকো মিউরা বলেছেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর খাদ্যের ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। স্থল অবরুদ্ধ অঞ্চলগুলোতে মাছ মাংসের ব্যাপক ঘাটতি দেখা যেত। সেখানকার মানুষরা তখন ঘাসফড়িং, রেশম কীট, শুয়োপোকা-এগুলো ঐতিহ্যগতভাবে খাওয়া শুরু করে।’ এ ধারণা থেকেই রেস্তোরাঁটি কীটপতঙ্গের সব মেন্যু দিয়ে তৈরি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ঝিঁঝিঁ পোকা খাবারের ও পালনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তাই খাবারের উপাদান হিসাবে এটি সমাদৃত হবে।’ ‘পাসকো’ নামক বেকারি ঝিঁঝিঁ পোকার সঙ্গে ময়দা মিশিয়ে কেক ও কুকি বিক্রি করছে। এছাড়াও স্কুলে বাচ্চাদের মধ্যভোজে বা নাস্তায়ও এ ঝিঁঝিঁ পোকার চাহিদা বেড়ে চলেছে।
মনিরা আরও বলেন, ‘এটা খুবই মজার ব্যাপার যে, আপনি যখন এ খাবারগুলোর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন তখন এগুলো স্বাভাবিক খাবারের মতোই মনে হবে।’ শুধু স্থানীয়রাই নয়, পর্যটকদের মাঝেও বেশ সমাদৃত হচ্ছে কীটপতঙ্গের তৈরি এসব খাবার। তেমনি একজন তাকুমি ইয়ামামতো। মধ্যাহ্নভোজে আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেন ‘গুটিপোকার সাশিমি’। ছোটবেলা থেকেই তিনি সয়া সসে চুবিয়ে ঘাসফড়িং খেতেন। সেই আগ্রহ থেকেই তিনি রেস্তোরাঁটিতে ভ্রমণ করেন। নিজের
অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তাকুমি জানান, ‘বিভিন্ন ধরনের খাবার বেছে নেওয়া বেশ মজাদার। এখানে সব খাবারই অত্যন্ত সুস্বাদ ও পরম উপাদেয়। সবচেয়ে ভালো লেগেছে পতঙ্গের পানীয়। এটি খাওয়ার পর বেশ সতেজ লাগছে, যেমনটা একটি সবুজ আপেল খেলে মনে হয়।’
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা ৯.৭ বিলিয়নে পৌঁছাবে। এতে করে কৃষিজমি ও মিঠা পানির সংকটে পোকামাকড় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।