জুমবাংলা ডেস্ক : মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক ঢাকা-মস্কো সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মন্টিটস্কি।
মন্টিটস্কি বলেন, আমরা আশা করি এটি ঢাকা-মস্কো বন্ধনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আরও উন্নত হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন এ কূটনীতিক।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন মন্টিটস্কি।
মন্টিটস্কির এ মন্তব্যের আগে জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠেয় ৬০তম নিরাপত্তা সম্মেলন চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অনুরোধ গ্রহণ করে বাংলাদেশ। যেটি গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এর পরই প্রশ্ন ওঠে এই বৈঠক রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কি না।
রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। সবার প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী পশ্চিমা চাপ সত্ত্বেও সরকার কোনো দিকে ঝোঁকেনি।
রুশ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ নেই। তাদের নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ আছে; বাংলাদেশের সঙ্গেও আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সমর্থন পেতে পশ্চিমা দেশগুলো অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করেছে। কিন্তু রাশিয়া সেই প্রস্তাব সমর্থন করে না।’
রাশিয়া বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের নীতি অনুসরণ করছে কি না জানতে চাইলে মন্টিটস্কি বলেন, ‘আমরা আমাদের নীতি অনুসরণ করি এবং এটি আমাদের মতবাদে লেখা আছে। আমরা বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখি না।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়া চায় রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক। তবে আমরা মনে করি কোনো বিদেশি দেশ বা এনজিওর এই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
রাশিয়া কেন মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে জানতে চাইলে রুশ এই কূটনীতিক বলেন, আমরা অস্ত্র সরবরাহ করছি। কিন্তু একই সঙ্গে ভারত ও চীনও অস্ত্র সরবরাহ করছে। আমরা বাংলাদেশেও অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত। এগুলো উন্নতমানের অস্ত্র এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ দেখলে এটা বোঝা যাবে। এর আগেও আমরা বাংলাদেশকে অস্ত্র সরবরাহ করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ও প্রতিকূল প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও, মস্কো বাংলাদেশে প্রধান কৃষি-শিল্পজাত পণ্য গম এবং সার রপ্তানি করে চলেছে।
২০২৩ সালে, বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে ২.৭ মিলিয়ন টন শস্য আমদানি করেছে। ভোজ্য তেল, মটর, ছোলা এবং মসুর ডালসহ রাশিয়া বাংলাদেশে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা আরও বাড়াতে চায় বলেও জানান মন্টিটস্কি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।