আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের বনাঞ্চল মালা মালা৷ করোনার বিস্তারের কারণে লকডাউন দেয়া হলে সেখানে পর্যটকদের আনাগোণাও কমে যায়৷ তাতে শুধু স্থানীয় অধিবাসীই ক্ষতিগ্রস্ত হননি, বনের প্রাণীরাও শিকার হবার ঝুঁকিতে পড়ে৷ খবর ডয়চে ভেলে’র।
সারাটা দিন ধরেই টহল দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা৷ এরা মালা মালার ফিল্ড রেঞ্জার৷ লকডাউনের শুরু থেকেই তারা জানোয়ারদের সুরক্ষা দিতে এমনকি জঙ্গলেও লুকিয়ে ছিলেন৷
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের বনাঞ্চল মালা মালা হলো বিশেষ সাফারি এলাকা৷ প্রতি বছর হাজারো পর্যটক আসেন এখানে৷ তবে লকডাউনের পর থেকে মানুষের আনাগোণা ছিল না৷ আর এই সুযোগ নেয়ার অপেক্ষায় থাকেন সংঘবদ্ধ শিকারীরা৷
মহামারীর কারণে যেসব প্রাণীর মাংস খাওয়া হয়, তারাও বেশ ঝুঁকিতে৷ মালা মালা হল দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে গরীব এলাকার একটি৷ রেঞ্জাররা আশেপাশের গ্রামগুলো নিয়ে বেশি চিন্তিত৷
‘‘মহামারির কারণে অনেক মানুষের কাজ নেই৷ তাদের টাকাও নেই, তারা ক্ষুধার্ত৷ আমাদের আশঙ্কা, তারা জঙ্গলে ঢুকে মাংসের জন্য প্রাণী হত্যা করতে পারে,” বলেন ফিল্ড রেঞ্জার উবিসি৷
প্রাণীরাও বুঝতে পারে যে কিছু নিশ্চয়ই বদলেছে৷ গাড়ি ও পর্যটকদের শব্দ নেই৷ অনেক প্রাণী লোকালয়ের লজ্জা ভেঙ্গে ক্যাম্পের আরো কাছে চলে আসে৷
মালা মালা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিচালক ভুসি এমপান্জডা৷ লকডাউনের পর তিনি প্রধান তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বও পালন করতে থাকেন৷ ক্যাম্পে তিনি রেঞ্জারদের প্রাণীদের চলাফেরা সম্পর্কে অবহিত করেন৷
স্থানীয় জনগণের দাবির মুখে সরকার ২০১৩ সালে জঙ্গলটি ব্যক্তি মালিকানা থেকে কিনে নেয়৷ এরপর তা স্থানীয় বাসিন্দাদের ফিরিয়ে দেয়৷ এ এলাকায় এখন ১১টি কমিউনিটি বসবাস করে৷ মালা মালা অপারেটিং কোম্পানিতে তাদের মালিকানাও আছে৷ এই কোম্পানি শহর কর্তৃপক্ষকে ভাড়া দেয়৷ আর এখানকার মানুষকে দেয় প্রশিক্ষণ৷
সংরক্ষিত বনটিতে ১৮০ জন কর্মী রয়েছেন, যাদের অনেকেই এই এলাকার বাসিন্দা৷ তবে লকডাউনের কারণে কর্মী চাহিদাও কমে যায়৷ কমে যায় আয়৷ এদের বেশিরভাগকেই ঘরে ফিরে যেতে হয়৷
‘‘এমনটা কতদিন চলবে তা কেউ জানে না৷ তাদের ক্ষেত্রেও তাই৷ তারা এতটাই বিচলিত যে, পরে কাজে নাও ফিরতে পারেন৷ ক্যাম্পে যারা আছেন তাদের জন্য তো বিষয়টি আরো খারাপ৷ যদি কোম্পানি ঠিকমত চলতে না পারে, তাহলে হয়তো বন্ধই হয়ে যাবে৷ নিজেদের সবার তো বটেই, কতগুলো পরিবারের খাবারের যোগান দেই আমরা,” বলেন ভুসি এমপান্ডজা৷
ভুসি তার উর্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতিদিন অনলাইনে যোগাযোগ রাখেন৷ তারা জরুরি তহবিল তৈরির চেষ্টা করেছেন৷ সরকার থেকে তাদের কর্মচারীরা কিছু কিছু বেকারভাতাও পেয়েছেন, যাতে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারেন৷
ভুসি এমপান্ডজা ও রেঞ্জার লুকি মাকুকুলা গ্রামে হাইজিন পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করেছেন৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।