দক্ষিণ কলকাতার হাজরায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে সাদ্দামের। সেই ফ্ল্যাটটি তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল রমা। কিন্তু তা দিতে অস্বীকার করে সাদ্দাম। এই নিয়ে তুমুল অশান্তি চলছিল তাদের।
মা-মেয়ের খুনের ঘটনায় ধৃত সাদ্দামকে জেরা করে এই তথ্যও জানতে পেরেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে তোলা ঘনিষ্ট মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল সাইটে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সাদ্দামের কাছে দশ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল রমা ও রিয়া। দাবি করেছিল সাদ্দামের হাজরার ফ্ল্যাটও। টাকার দাবি মেনে নিয়ে প্রথম কিস্তির চার লক্ষ টাকা ডিসেম্বরের শেষে রমা ও রিয়াকে দেয় সাদ্দাম। তখনকার মতো মুখ বন্ধ করলেও পরে সাদ্দাম বিয়ে করেছে শুনে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে রমা ও রিয়া। একইসঙ্গে ফ্ল্যাটটিও লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। হুমকি দেয় টাকা ও ফ্ল্যাট না পেলে তাদের ঘনিষ্ট মুহূর্তের ছবি পৌঁছে যাবে তার স্ত্রীর কাছে। এরপরেই সাদ্দাম মা মেয়েকে খুনের ষড়ষন্ত্র করে বলে তাকে জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুড়খালি এলাকায় দু’জনকে দাউদাউ করে আগুনে পুড়তে দেখে আতঙ্কে শিউরে উঠেছিল এলাকার বাসিন্দারা। জল ঢেলে আগুন নেভানোর পরে দেহাংশ, পোশাকের কিছু অংশ এবং মাথার চুলের বেঁচে যাওয়া টুকরো দেখে পুলিশ অনুমান করেছিল, দগ্ধ দু’জনেই মহিলা। তাঁদের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। এর পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই মৃত মহিলার পোশাক ও চুলের বর্ণনা দিয়ে পরিচয় খোঁজার চেষ্টা চলে। পরে জানা যায় মৃতা দু’জন নিউ ব্যারাকপূরের নরেশচন্দ্র সরণির বাসিন্দা এবং সম্পর্কে মা-মেয়ে। তাঁদের নাম রমা দে (৪০) ও রিয়া দে (২২)।
পুলিশ তদন্তে গেলে বাসিন্দারা জানান, বছর আড়াই আগে ওই এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন তাঁরা। তবে পাড়ার কারও সঙ্গেই বিশেষ যোগাযোগ ছিল না তাদের। তাদের বাড়িতে বহু পুরুষের আনাগোনা ছিল বলেও জানান তাদের পড়শিরা। এই নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ থাকলেও কখনও তার বহিঃপ্রকাশ হয়নি। মা মেয়ের খুনের ঘটনার পিছনে ঠিক কী কারণ, তা নিয়ে এখনও কৌতুহলী গোটা এলাকা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রিয়া ও তার মা রমা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পুরুষ বন্ধু জোগাড় করত। তারপর একান্ত মুহূর্তের ছবি তুলে রাখতো। সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ই ছিল তাদের পেশা। এমনই ফাঁদে পড়ে সাদ্দাম। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ শেখ মনজুর নামে একজনকে আটক করে। তার কাছে সূত্র পেয়েই পাকড়াও করা হয় সাদ্দামকে। খুনে জড়িত আরও দুজন এখনও অধরা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।