জুমবাংলা ডেস্ক : ছেড়ে দেয়ার শর্তে টাকা নিয়েও ‘ক্রসাফায়ারে’ নিরীহ লোকজনকে ইয়াবা কারবারী সাজিয়ে হত্যা করেছে ওসি প্রদীপ ও তার নিজস্ব বাহিনী এমনটাই আদালতকে জানিয়েছেন মেজর সিনহা হত্যা মামলার তিন সাক্ষী।
মঙ্গলবার ( ২৮ সেপ্টেম্বর ) সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চতুর্থ দফায় প্রথম দিনে ১৫, ১৬ এবং ১৭ তম সাক্ষী ওই সাক্ষ্য দেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সিনহা হত্যা মামলার ১৫ তম সাক্ষী হিসেবে টেকনাফের হ্নীলার বাসিন্দা গৃহবধূ ছেনুয়ারা বেগমের জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে চতুর্থ দফায় প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এছাড়া টেকনাফ সদরের সাবেক ইউপি সদস্য হামজালাল ও আলী আকবরের সাক্ষ্যও গ্রহন করেছে একই আদালত।
সাক্ষী ছেনুয়ারা বেগমের বরাত দিয়ে আদালতে উপস্থিত আইনজীবিরা জানিয়েছেন, গৃহবধূ ছেনুয়ারা বেগমের স্বামী আবদুল জলিল ছিলেন পেশায় সিএনজি চালক। তাকে চট্টগ্রাম থেকে আসার পথে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রদীপ বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এরপরে তাকে বিভিন্ন গোপন স্থানে ৬ মাস আটকে রাখে প্রদীপ ও তার লোকজন। এরপর ২০২০ সালের জুলাই মাসের শুরুত ছেনুয়ারার বাড়ি যায় ওসি প্রদীপ। ৫ লাখ টাকা দিলে আবদুল জলিলকে ছেড়ে দেওয়া হবে তখন ছেনুয়ারাকে জানিয়েছিল ওসি প্রদীপ। তারপর দিন ছেনুয়ারা ওসি প্রদীপের হাতে ৫ লাখ টাকা তুলে দেয়। এরপর স্বামীকে ছাড়াতে টেকনাফ থানায় গেলে ওসি প্রদীপ তাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তার স্বামী বাড়ি পৌঁছে যাবে। কিন্তু এর কয়েকদিন এক সাংবাদিক ছেনুয়ারা বেগমকে ফোন করে জানান , আবদুল জলিলের মৃতদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
সিনহা হত্যা মামলার বিচার কাজের সাথে যুক্ত একাধিক আইনজীবি আরো জানিয়েছেন, সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষী ছেনুয়ারা বেগম, হাম জালাল ও আলী আকবর আদালতের কাছে ওসি প্রদীপের ঘৃনিত কাজের বিবরণ দিয়েছেন। ওসি প্রদীপ ও তার বাহিনী টাকা নিয়েও তাদের স্বজনদের হত্যা করেছে বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা তিনজনেই ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠ আইনজীবিরা।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সরকারী কৌসুঁলী ফরিদুল আলম বলেন, এ পর্যন্ত সিনহা হত্যা মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে। মঙ্গলবারের সাক্ষীরা ওসি প্রদীপ টেকনাফ থানা থাকা অবস্থায় নিরীহ জনগনের উপর কিভাবে অত্যাচার চালাত তাই বর্ননা করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজন ভ্যানে করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
তারা হলেন, বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।