Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home টিকা আমদানি করে প্রভাবশালীদের পকেটে ২২ হাজার কোটি টাকা
    স্বাস্থ্য

    টিকা আমদানি করে প্রভাবশালীদের পকেটে ২২ হাজার কোটি টাকা

    September 29, 202411 Mins Read

    জুমবাংলা ডেস্ক : ২০২০ সালের ২ জুলাই। মহামারি করোনার সময়। সংবাদ সম্মেলন ডেকে কাঁদছেন ডা. আসিফ মাহমুদ। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘোষণা দিলেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বাংলাদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড আবিষ্কার করেছে। সেদিন আসিফ মাহমুদের সঙ্গে আনন্দে পুরো বাংলাদেশ কেঁদেছিল। তবে সেই ভ্যাকসিন আর আলোর মুখ দেখেনি। একটি অসাধু সিন্ডিকেট নিজেদের পকেট ভারী করতে আমলাতন্ত্রের লাল ফিতায় আটকে রেখেছিল অনুমোদন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অন্তত অর্ধডজন চিঠি দিয়েও কোনো সহায়তা মেলেনি।

    হামলা করা হয় প্রতিষ্ঠানটির অফিসে, গবেষকদের দেওয়া হয়েছিল হুমকিও। প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লোকসান নিয়েও ক্ষমতাধরদের দাপটে মুখ বুজে মেনে নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

    মূলত একটি চক্রের কারণেই বঙ্গভ্যাক্স অনুমোদন নানা টালবাহানা করা হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্যমতে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আমদানি করে চক্রটি অন্তত ২২ হাজার কোটি টাকা পকেটে ভরেছে। চক্রটি তাদের পকেট ভারী করতেই মূলত বাংলাদেশ আবিষ্কৃত করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন পেতে প্রভাব খাটিয়ে গড়িমসি করেছে।

    দৈনিক কালবেলার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেই ভ্যাকসিন আলোর মুখ না দেখার পেছনে রয়েছে একটি চক্র। প্রথমে একটি আনঅফিসিয়াল মিটিংয়ে সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের সঙ্গে গ্লোব বায়োটেককে প্রযুক্তি শেয়ার করার দাবি করা হয়। বেক্সিমকো ও গ্লোব বায়োটেক মিলে জয়েন্ট ভেঞ্চারে বঙ্গভ্যাক্স বাজারজাত করার কথা বলেন সালমান এফ রহমান। প্রথমে তাতে সায় দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি নিয়ে সমাধানের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছিল গ্লোব বায়োটেকের। এর মধ্যেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকোর একটি চুক্তি হয়ে যায়। পরে বেক্সিমকো গ্রুপের মাধ্যমে সেরাম ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আমদানি করার কারণে বঙ্গভ্যাক্সের আর অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তর থেকে অপ্রয়োজনীয় সব শর্তজুড়ে দিয়ে করা হয় সময়ক্ষেপণ। গ্লোব বায়োটেক থেকে সেসব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হলেও পরে নতুন নতুন শর্ত দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিঠি দিয়েছে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল দপ্তর। আর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে করোনার প্রাদুর্ভাব কেটে যাওয়ার পর।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনা ভ্যাকসিনকে কেন্দ্র করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল একটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটে আরও ছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের আলী ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস। এই সিন্ডিকেটের শক্তির বলয়েই আটকে যায় বঙ্গভ্যাক্স।

    এ ছাড়া তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গ্লোব বায়োটেকের সামনে দুর্বৃত্তদের মাধ্যমে হামলা করে ফাটিয়ে দেওয়া হয় তিতাস গ্যাসের লাইন। এতে গ্লোব বায়োটেকের পুরো অফিসে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা ছিল। তবে তাৎক্ষণিক বিষয়টি সিকিউরিটির নজরে এলে তিতাসে ফোন করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল। সূত্রমতে, পুলিশ এই জিডির তদন্তে গিয়ে ঘটনার কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি। জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার অফিসার ইনচার্জ বিকাশ সরকার কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের সবকিছু পুড়ে গেছে। কোনো পিসিও নেই অফিসে। এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কোনো তথ্য নেই।’ সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়েছিল গ্লোব বায়োটেকের একাধিক গবেষককে। সে সময় নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটি বৃদ্ধি করা হয় প্রতিষ্ঠানটির অফিসে। কর্মকর্তাদের সিকিউরিটিও বাড়ানো হয়। জানতে চাইলে গ্লোব বায়োটেকের একজন বিজ্ঞানী কালবেলাকে বলেন, ‘সে সময় কী যে আতঙ্কে ছিলাম। আমরা কোনোরকম অফিসে এসে সোজা রুমে চলে যেতাম। সিঁড়ির কাছে যেতেও ভয় লাগত। দেশের জন্য এত কষ্ট করে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে কল্পনাও করতে পারিনি।’

    নথিপত্র বলছে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেদিন থেকেই গ্লোব বায়োটেক ‘কভিড-১৯’ ‘শনাক্তকরণ কিট, টিকা ও ওষুধ’ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণা শুরু করে। এসব গবেষণার জন্য প্রতিষ্ঠানটি কয়েকশ কোটি টাকার আধুনিক সরঞ্জাম ক্রয় করে। প্রতিষ্ঠানটি জুন মাসের ২৯ তারিখে টিকার টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স করে এনসিবিআই ডাটাবেজে জমা দেয়, যা প্রকাশিত হয়েছে (accession number: MT676411)। এরপর প্রাথমিকভাবে ল্যাবরেটরি টেস্টে টিকাটি কার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় একই বছরের জুলাই মাসের ২ তারিখে কভিড-১৯-এর টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অ্যানিমেল সেন্টারে টিকার পূর্ণাঙ্গ প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করে। যার ফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বায়ো-আর্কাইভে ৩০.০৯.২০২০ তারিখে প্রকাশিত হয়। এরপর একই বছরের অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখে গ্লোব বায়োটেক আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কভিড-১৯ ভ্যাকসিন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

    এরপর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের কারখানা, অ্যানিমেল সেন্টার এবং গবেষণা কার্যক্রম পরিদর্শন করে একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বঙ্গভ্যাক্স উৎপাদনের লাইসেন্স প্রদান করে। গ্লোব বায়োটেক ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অরগানাইজেশন লিমিটেডের মাধ্যমে টিকাটির ফেজ-১ ও ফেজ-২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) প্রটোকলসহ ১৭ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে আবেদন করে। বিএমআরসির ইথিক্যাল কমিটি প্রটোকল পর্যালোচনা করে শতাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি দেয়। তবে এমন ক্রিটিক্যাল সময়ে ‘ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশন’ প্রক্রিয়ায় কিছু পর্যবেক্ষণ কাটছাঁট করে অনুমতি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত। আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ যেসব দেশ ভ্যাকসিন বাজারে এনেছে, সবাই একই প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করেছে। তবে বিএমআরসি সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে করেছে তার উল্টো। চিঠিতে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল কিছু শর্ত। তবে গ্লোব বায়োটেক মাত্র আট দিনের মাথায় ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএমআরসির সব কোয়েরির জবাব দিয়ে সংশোধিত প্রটোকল ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। এরপর অদৃশ্য এক কারণে গভীর ঘুমে চলে চায় বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ। আর ঘুম ভাঙে প্রায় চার মাস পাঁচ দিন পর। ২০২১ সালের ২২ জুন বিএমআরসি থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জিতে টিকার ট্রায়াল সম্পন্ন করতে হবে। এই পর্যবেক্ষণটি প্রথমেই বিএমআরসির ৯ ফেব্রুয়ারির চিঠিতে জানালে অন্তত পাঁচ মাস সময় বাঁচত। যদিও গ্লোব বায়োটেকের গবেষকরা বলছেন, তাদের টিকায় বানরে ট্রায়াল প্রয়োজন ছিল না। বিষয়টি নিয়ে তারা বিভিন্ন দেশের গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সবাই একই কথা বলেছেন। এরপর বানর নিয়ে শুরু হয় নতুন আরেক নাটক। ২৮ জুন বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে গাজীপুরে বনে বানর ধরতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে গ্লোব বায়োটেক। তবে ৩০ জুনের মধ্যে বানর সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি। বানর সংগ্রহের পরপরই ওই দিনই বিএমআরসি থেকে আরও অর্ধশতাধিক পর্যবেক্ষণ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয় গ্লোব বায়োটেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বানরে পরীক্ষার নৈতিক অনুমোদন নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি ১ আগস্ট থেকে বানরে ট্রায়াল শুরু করে। ভাইরাসের চ্যালেঞ্জ স্টাডির জন্য করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের অনুমতি চেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে ১৮ সেপ্টেম্বর অনুমোদন পায়। অক্টোবরের ২১ তারিখে চ্যালেঞ্জ স্টাডিসহ বানরের ওপর ট্রায়াল শেষ হয়। এরপর বিএমআরসির নির্দেশনা অনুসারে বানরের দেহে চালানো বঙ্গভ্যাক্স পরীক্ষার ফল সম্পর্কিত প্রতিবেদন নভেম্বর মাসের ১ তারিখে বিএমআরসিতে জমা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিএমআরসির তৃতীয় ও সর্বশেষ চিঠির সব প্রশ্নের জবাবও দেওয়া হয়। এরপর ২১ নভেম্বর বিএমআরসির ন্যাশনাল রিসার্চ এথিকস কমিটির সভায় মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্স পরীক্ষার নৈতিক অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ২৩ নভেম্বর অনুমোদনের চিঠি হাতে পায় গ্লোব বায়োটেক। তবে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি জানতেন না প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের আলী। চেয়ারম্যানের আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে না জানিয়ে একজন পরিচালক তার স্বাক্ষরে অনুমোদনের চিঠি বঙ্গভ্যাক্সের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে অফিসে ডেকে দেন। ওইদিন রাতেই একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে প্রশ্ন করা হলেও অনুমোদনের চিঠির বিষয়টি জানেন না বলে স্বীকার করেন মোদাচ্ছের আলী। সে সময় আপনি জানলে কি চিঠি দিতেন না—উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে বিব্রত হন মোদাচ্ছের আলী।

    এরপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিএমআরসির নৈতিক অনুমোদনের চিঠিসহ ২৫ নভেম্বর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করে গ্লোব বায়োটেক। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে ফের নতুন করে আরও কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ৭ ডিসেম্বর চিঠি দেওয়া হয়। একই দিনে সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে ঔষধ প্রশাসনে চিঠি দেয় গ্লোব বায়োটেক। এরপর আবার ঘুমিয়ে যায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ঘুম ভাঙে মার্চ মাসে। ২০২২ সালের ৯ মার্চ মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশে কভিড-১৯ টিকা উৎপাদনে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর আরও কিছু বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়ে ২৯ মার্চ গ্লোব বায়োটেকে চিঠি ফের চিঠি দেয়। ৪ এপ্রিল ফের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন দেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে ঔষধ প্রশাসন আর কিছু বলেনি। এরপর ২৮ মে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের অ্যানিমেল সেন্টার এবং ২৯ মে কারখানা পরিদর্শন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। সে সময় সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব আব্দুল মান্নান। আব্দুল মান্নান বিষয়টি দীর্ঘায়িত না করে দ্রুত অনুমোদন দেওয়ার কথা বলেন। পরে তাকে বদলি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে। এরপর ফের গভীর ঘুমে চলে যায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। পরবর্তী সময়ে ২৬ জুন মন্ত্রণালয় থেকে আবারও কিছু বিষয়ে পর্যবেক্ষণসহ চিঠি দেওয়া হয় গ্লোব বায়োটেকে। তবে ২৮ জুন সব প্রশ্নের উত্তর, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ ও পরিকল্পনাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর জুলাই মাসের ৭ তারিখে মন্ত্রণালয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার জন্য নির্দেশক্রমে প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করে। এরপর ১৭ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি প্রদান করা হয়। ততক্ষণে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। আর বিভিন্ন দেশে থেকে টিকা এনে দেশের অধিকাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনেট করা হয়ে যায়।

    জানা গেছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি প্রদানের দায়িত্ব বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর আন্তরিক হলে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর যখন প্রথমবারের মতো আবেদন করা হয়, তখনই প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদন দিতে পারত। সেটি হলে অন্তত সাত মাস সময় বাঁচত। বিএমআরসিতে প্রায় পাঁচ মাস আর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে মিলিয়ে সাত মাসসহ মোট ১২ মাস সময় অযাচিত ইচ্ছাকৃত নষ্ট করা হয়েছে।

    গ্লোব বায়োটেকের একজন গবেষক বলেন, ‘আমাদের টিকাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এর একটি ডোজেই অ্যানিমেল ট্রায়ালে কার্যকর অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আমরা আশা করছি, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও অনুরূপ ফল পাওয়া যেত। এটি প্লাস ৪° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক মাস এবং মাইনাস ২০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ছয় মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। এটি সিনথেটিক্যালি তৈরি হওয়ায় ভাইরাসমুক্ত এবং শতভাগ হালাল।’ তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের অসহযোগিতা না করে যদি সহযোগিতা করা হতো, তাহলে আমরা দ্রুততম সময়ে টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করে দেশবাসীর সেবায় বঙ্গভ্যাক্সকে উৎসর্গ করতে পারতাম। তাহলে ভ্যাকসিনের মাধ্যমে আমাদের দেশের মানুষকে টিকা দিয়ে বিশ্বে রপ্তানি করে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যেত।’

    আরেক গবেষক বলেন, ‘ডেল্টার মতো ওমিক্রনের বিরুদ্ধেও শতভাগ কার্যকর বঙ্গভ্যাক্স, বানরের পরীক্ষায় যা প্রমাণিত হয়েছিল। বিশ্বে অতি সংক্রমণশীল ওমিক্রন-ডেল্টাসহ করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় ছিল। আমরা প্রতিটি ভ্যারিয়েন্টের সিকোয়েন্স অ্যানালাইসিস করে আমাদের ভ্যাকসিনের সিকোয়েন্স মিলিয়ে দেখেছি, প্রতিটি ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রেই বঙ্গভ্যাক্স কার্যকর। প্রাথমিক ফলাফলে আমাদের ভ্যাকসিনটি বানরে নিরাপদ এবং কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এরপর আমরা ভ্যাকসিনেটেড বানরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন-ডেল্টাসহ অন্যান্য ভ্যারিয়েন্ট প্রয়োগ করে চ্যালেঞ্জ স্টাডি করেছি। আমরা দেখতে পেয়েছি, আমাদের ভ্যাকসিনে বানরের দেহে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, সেই অ্যান্টিবডি সাত দিনের মধ্যেই করোনাভাইরাসকে নিউট্রালাইজ করতে পেরেছে। এই গবেষণার থিসিস আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হলে বিভিন্ন দেশ থেকেও ভ্যাকসিনের জন্য গ্লোব বায়োটেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এর মধ্যে জার্মানির একটি বিশেষজ্ঞ দল দুই বার বাংলাদেশে গ্লোব বায়োটেকের অফিস ভিজিট করে তারা প্রযুক্তি শেয়ারের আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে দেশের স্বার্থে মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভনেও জার্মানির সঙ্গে প্রযুক্তি শেয়ার করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া নেপাল, দুবাই, শ্রীলঙ্কা ও আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোরও করোনা ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।

    গ্লোব বায়োটেকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা কোনো উপায় না দেখে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একাধিক চিঠি দিয়েছিলাম। তবে সেই চিঠি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস পর্যন্ত গিয়ে আটকে গেছে বলে জেনেছি।’

    তথ্য বলছে, গ্লোব বায়োটেকের পরিচালক এবং নোয়াখালী-৩ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরন বঙ্গভ্যাক্সের দ্রুত অনুমোদন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে গ্লোব বায়োটেক থেকেও একাধিক চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনের প্রতিটি আপডেট চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

    গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘ওই প্রজেক্ট আমরা বাদ দিয়ে দিয়েছি। আমার বিপুল লোকসান হয়েছে। ওটা নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।’ পরে প্রতিষ্ঠানটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই প্রজেক্টে আমাদের প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ। পরে আমাদের যখন অনুমতি দেওয়া হয়, তখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তখন ভ্যাকসিন বানালেও আমাদের ভ্যাকসিন কেউ কিনত না।’

    গ্লোব বায়োটেকের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ডাক্তার মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে বঙ্গভ্যাক্স নিয়ে প্রশ্ন করলেই তার চোখ ভিজে যায়। তিনি বলেন, ‘রাগ, অভিমান, কষ্ট আর ক্ষোভে করোনায় আমি ভ্যাকসিন নেইনি। আমরা এত কষ্ট করে ভ্যাকসিন বানালাম; কিন্তু আমাদের ভ্যাকসিনের অনুমোদনেই দেওয়া হলো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের স্বাধীনতা দিবসে তাদের ভ্যাকসিন আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় স্যালুট দেওয়া হয়েছিল। ওই স্যালুট আমরাও পেতে পারতাম।’

    ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সিরাম থেকে সালমান এফ রহমান আলাদা কমিশন নিয়েছেন, যা আর কোনো দেশে ঘটেনি। সালমান এফ রহমান তার নিজের প্রতিষ্ঠানকে তার প্রভাব খাটিয়ে লাভবান করেছেন, রাষ্ট্রে সম্পদের অপচয় হয়েছে আর বাংলাদেশের যে সম্ভাবনাময়কে পদদলিত করেছে। এই অসাধু চক্রে যারা যারা জড়িত ছিল, তাদের সবাইকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

    বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে থাকায় তারা বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শেখ হাসিনা সরকারে পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের আলীকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এরপর প্রশ্ন লিখে মেসেজ পাঠানো হলেও কোনো উত্তর দেননি। তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেনকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিলে রিং হয়; তবে তিনি ধরেননি। এরপর প্রশ্ন লিখে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালে তিনি উত্তরে লেখেন, ‘সব ভ্যাকসিন ক্রয় করা হয় জি টু জি পদ্ধতিতে চীন এবং WHO এর মাধ্যমে কোভ্যাক্স থেকে ক্রয়কৃত অর্থ ADB সরাসরি Covax-কে প্রদান করে। ভ্যাকসিন ক্রয় প্রক্রিয়া শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়েছে। বঙ্গভ্যাক্স সম্পর্কে কেউ কিছু বলছেন কি না, মনে পড়ে না।

    প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আমরা সব চিঠি প্রধানমন্ত্রীর বরাবর পাঠিয়েছি। এটা নিয়ে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আন্তরিক ছিলেন। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছিল সব ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল হয়নি। বিএমআরসি থেকে তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর সঙ্গে আমার কিংবা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কোনো সম্পর্ক নেই।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ২২ আমদানি করে কোটি টাকা টিকা পকেটে প্রভাবশালীদের স্বাস্থ্য হাজার
    Related Posts
    These fruits may cause allergies

    এই ফলগুলো খেলে হতে পারে অ্যালার্জি

    May 17, 2025
    নারীর হাড়ক্ষয়

    নারীর হাড়ক্ষয় যে কারণে বেশি হয়

    May 17, 2025
    কিডনিতে পাথর

    কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায় যেসব ফল

    May 17, 2025
    সর্বশেষ সংবাদ
    ধর্ষণ
    কোরআন হাদিসের আলোকে ধর্ষণের কারণ ও ভয়াবহতা
    আরব আমিরাত
    আরব আমিরাতকে ২৭ রানে হারিয়ে সিরিজে শুভ সূচনা টাইগারদের
    Whirlpool 4-in-1 Convertible AC
    Whirlpool 4-in-1 Convertible AC: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    Xiaomi Smart Band 8 Pro
    Xiaomi Smart Band 8 Pro: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    LG Objet Collection Fridge
    LG Objet Collection Fridge: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    মালদ্বীপে
    মালদ্বীপে সেরা কনটেন্ট ক্রিয়েটর অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক ইমন
    শিক্ষার্থীদের
    শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ফরহাদ মজহারের আহ্বান
    নামাজের সময়সূচি ২০২৫
    আজকের নামাজের সময়সূচী (১৮ মে ২০২৫)
    স্বর্ণের দাম ভরি
    আজকের স্বর্ণের দাম, ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে বাড়ল যতো টাকা
    গ্রামীণ ব্যাংক
    গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার স্মৃতিচারণা
    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.