জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর রাজধানীর ডজনখানেকেরও বেশি অভিজাত ক্লাবের সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব।
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর রাজধানীর ডজনখানেকেরও বেশি অভিজাত ক্লাবের সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব।
এরমধ্যে চিত্রনায়িকা পরীমনির ঘটনায় আলোচিত সেই বোট ক্লাবের সদস্যও হেলেনা জাহাঙ্গীর। যিনি পরীমনির ঘটনায় ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন। তার সে সময়ের স্ট্যাটাসের নিচে ব্যাপক নেতিবাচক মন্তব্যও করতে দেখা গিয়েছিল।
বোট ক্লাব ছাড়াও হেলেনা জাহাঙ্গীর গুলশান ক্লাব, গুলশান নর্থ ক্লাব, বারিধারা ক্লাব, কুমিল্লা ক্লাব, গলফ ক্লাব, গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাব, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ক্লাব, বোট ক্লাব, গুলশান লেডিস ক্লাব, উত্তরা লেডিস ক্লাব, গুলশান ক্যাপিটাল ক্লাব, গুলশান সোসাইটি, বনানী সোসাইটি, গুলশান জগার্স সোসাইটি ও গুলশান হেলথ ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত।
এদিকে, শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গুলশান থানায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর গুলশান থানায় দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ সময় আদালতে নিজেকে নিরপরাধ বলে দাবি করেছেন এবং নিজেকে সরকার ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলেও দাবি তার।
বিচারক হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তার আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলার জন্য সময় দিলে তখন হেলেনা বলেন, ‘আমি সরকারি লোক। আমার কোনো পদ এখনও হারাইনি। এখনও সে বিষয়ে কোনো নোটিশ পাইনি। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করি, কেউ যদি তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে আমি প্রটেস্ট করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখনও পদে বহাল রয়েছি। আমি ফেসবুকে কোনো ধরনের বাজে মন্তব্য করিনি। কেউ কিছু বলতে পারবে না। আমি সরকারি লোক।’
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, র্যাব সদস্যরা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে থানায় হস্তান্তর করেছেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে।
এর আগে হেলেনাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেলে ব্রিফিংয়ে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ১৩ টি ক্লাবের সখ্যতা রয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করতেন।
‘হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন উচ্চাভিলাষী মহিলা। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়ে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করতো।’
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে বসে সেফাতুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি যে অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করতো সেই ব্যক্তির সঙ্গে অবৈধ লেনদেনসহ নিয়মিত যোগাযোগ রাখত হেলেনা জাহাঙ্গীর।’
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘যেসব অবৈধ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে সবকিছু হেলেনা জাহাঙ্গীরের নিজ কক্ষে ছিল।
হেলেনা জাহাঙ্গীর এসব বিষয় স্বীকার করেছেন বলে জানান খন্দকার আল মঈন। পরে তাকে গুলশান থানায় হস্তান্ত করা হয়।
এর আগে ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।
দুপুরে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানিয়েছিলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের জয়যাত্রা আইপি টেলিভিশনের কোনো বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবারের (২৯ জুলাই) অভিযানে মিরপুরের জয়যাত্রা অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।