জুমবাংলা ডেস্ক : ফের দুদিনের সফরে ঢাকা আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
মঙ্গলবার (৭ মে) দেশের অন্যতম শীর্ষ গণমাধ্যম মানবজমিন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়- চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তার সফরটি হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে শেষ পর্যন্ত সফরটির দিনক্ষণ এবং কর্মসূচিতে সংযোজন-বিয়োজনের সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকায় এখনই খোলাখুলি সব বলতে বারণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন সরকারি এক কর্মকর্তা। প্রায় অভিন্ন অবস্থান ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের।
দায়িত্বশীলদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ই জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বহুল আলোচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নতুন সরকার গঠনের পরপরই বাইডেন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফরের আলোচনা শুরু হয়। সরকার এরই মধ্যে ১০০ দিন পার করেছে, বিধায় প্রস্তাবিত সফরগুলো বাস্তবায়নে মনোনিবেশ করছে ঢাকা।
মানবজমিনের ওই প্রতিবেদনে পররাষ্ট্রদপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাতে আরও বলে, নানা কারণে সাউথ এশিয়ায় আলোচিত ডোনাল্ড লুর ঢাকায় এটি হবে ৪র্থ সফর। একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে বাংলাদেশের জন্য স্বতন্ত্র মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নানামুখী তৎপরতার পার্ট হিসেবে গত জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার সঙ্গী হয়ে এসেছিলেন তিনি।
ভোটপূর্ব রাজনৈতিক মাঠের বাড়তি উত্তাপের কারণে উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লুর যুগল সফরটি দেশ ও দেশের বাইরে বেশ আলোচনায় ছিল। উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু সেদিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন। নির্বাচন কোন ফর্মে হবে তা নিয়ে যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চাওয়া নেই, সেটি তাদের সফরে স্পষ্ট করা হয়েছিল। মূলত বিষয়টি বাংলাদেশের নেতৃত্বের ওপর ছেড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাই তো শিরোনাম হয়েছিল- ‘বাংলাদেশের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে বিমানে উঠলেন উজরা’। সঙ্গে ডোনাল্ড লু।
আলোচিত সেই সফরে প্রভাবশালী ওই কর্মকর্তা খোলাসা করেই বলেছিলেন, ‘আসুন বাংলাদেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিই। ‘জুলাইয়ের ঢাকা সফরের পরও উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লুর সঙ্গে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ গত মার্চে ডোনাল্ড লু ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা করেছেন। সেই বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি-আমেরিকানদের কথা উল্লেখ করে লু বলেন, তাদের শক্তি ও অসাধারণ কঠোর পরিশ্রম দুটি মহান জাতির মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে। বাংলাদেশি-আমেরিকানরা দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তা গর্বের বিষয়।
ডোনাল্ড লু ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে যোগ দেন। এই পদে দায়িত্ব লাভের আগে লু কিরগজি প্রজাতন্ত্রে ২০১৮ থেকে ২০২১ এবং আলবেনিয়াতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ মেয়াদকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। আলবেনিয়াতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগের আগে লু যুক্তরাষ্ট্রের ইবোলা রেসপন্সের ডেপুটি রেসপন্সের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর হিসাবে পশ্চিম আফ্রিকাতে দায়িত্ব পালন করেন।
ফরেন সার্ভিস অফিসার হিসাবে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীনে কাজ করছেন। তিনি ভারতে ডেপুটি চিফ অব মিশন (ডিসিএম) (২০১০-২০১৩) ও চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (২০০৯-২০১০), আজারবাইজানে ডিসিএম (২০০৭-২০০৯) এবং কিরগজিস্তানে ডিসিএম (২০০৩-২০০৬) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কর্মজীবনের শুরুতে মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ ককেসাস দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর, ইউরোপীয়বিষয়ক ব্যুরোর (২০০১-২০০৩), স্টেট সেক্রেটারি কার্যালয়ের অধীনে সদ্য স্বাধীন দেশগুলোবিষয়ক রাষ্ট্রদূতের বিশেষ সহকারী (২০০০-২০০১), ভারতের নয়া দিল্লিতে পলিটিক্যাল অফিসার (১৯৯৭-২০০০), ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের বিশেষ সহকারী (১৯৯৬-১৯৯৭), জর্জিয়ার তিবলিসিতে কনসুলার অফিসার (১৯৯৪-৯৬) এবং পাকিস্তানের পেশোয়ারে পলিটিক্যাল অফিসার (১৯৯২-১৯৯৪) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি ১৯৮৮-১৯৯০ সময়কালে পশ্চিম আফ্রিকার সিয়েরা লিয়নে পিস কর্পসের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে হাতে খনন করা পানির কূপ পুনরুদ্ধার এবং স্বাস্থ্য শিক্ষাদান ও লেট্রিন নির্মাণে সহায়তা করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।