আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সদ্য যমজ সন্তানের মা হওয়া তরুণীর দুটি যমজ শিশুর বাবা দুজন ভিন্ন পুরুষ। এই বিরল গর্ভধারণের ঘটনা লাখে একটি ঘটে। একই দিনে দুজন ভিন্ন পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ৯ মাস পর ১৯ বছর বয়সী এক ব্রাজিলীয় তরুণী যমজ সন্তানের জন্ম দেন। শিশু দুটির প্রথম জন্মদিন ঘনিয়ে আসার সময় তাদের বাবার পরিচয় নিয়ে তিনি সন্দিহান হয়ে পড়েন।
নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি সন্তানের পিতৃপরিচয় পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন, জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তরুণী ধারণা করছিলেন, ওই দুই পুরুষের মাঝে একজন তার যমজ সন্তানের বাবা হতে পারেন। তিনি সেই পুরুষের ডিএনএ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করান। কিন্তু তাতে শুধু একটি শিশুর পরিচয় নিশ্চিত হয়।
নতুন মা হওয়া তরুণী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার মনে পড়ে সেদিন আরো একজনের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলাম এবং তাকে ফোন করে পরীক্ষা করতে বলি। ফলাফল পজিটিভ আসে। ’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি এ ঘটনায় অবাক হয়েছি। এমন হতে পারে আমার ধারণা ছিল না। ’
ঘটনাটি বিস্ময়কর হলেও অসম্ভব নয়। তরুণীর দায়িত্বে থাকা ডাক্তার ড. তুলিও জর্জ ফ্রাঙ্কো গ্লোবোকে জানান, ‘একই মায়ের দুটি ডিম ভিন্ন পুরুষের দ্বারা নিষিক্ত হলে এটি ঘটতে পারে। শিশুরা মায়ের জিনগত উপাদান ভাগ করে নেয়, কিন্তু তারা ভিন্ন ভিন্ন প্লাসেন্টায় বেড়ে ওঠে। ’
বায়োমেডিকা জার্নাল অনুসারে, ‘হেটেরোপ্যাটারনাল সুপারফেকান্ডেশন’ একটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা। একই ঋতুচক্রের সময় নির্গত দুটি ডিম্বাণু পৃথক যৌন মিলনে দুজন ভিন্ন পুরুষের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হলে এটি ঘটতে পারে।
ড. ফ্রাঙ্কো জানান, তিনি ভাবেননি তার জীবদ্দশায় এমন ঘটনা দেখতে পাবেন, কারণ এটি লাখে একটি ঘটে এবং দাবি করেন যে পুরো পৃথিবীতে এমন ঘটনা মাত্র ২০ বারের মতো ঘটেছে।
বর্তমানে ১৬ মাস বয়সী ওই যমজদের মা গ্লোবোকে বলেন যে, একজন বাবাই এখন তাদের দেখাশোনা করছে। অন্যজন তাদের জীবনে কোনো ভূমিকা রাখছে কি না তা নিশ্চিত নয়।
তবে এই অনন্য শিশু দুটি আন্তর্জাতিক খবরে জায়গা করে নেওয়া প্রথম যমজ নয়। ২০১৫ সালে একজন বিচারক রায় দিয়েছিলেন যে নিউ জার্সির একজন ব্যক্তিকে যমজ সন্তানের মাঝে একটি শিশুর ভরণপোষণ করতে হবে। কারণ তিনি একটি শিশুরই জন্ম দিয়েছেন।
বিতর্কিত মামলাটি চলাকালীন ডিএনএ বিশেষজ্ঞ কার্ল-হান্স উরজিঞ্জার সাক্ষ্য দেন যে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত তার একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্রতি ১৩ হাজার যমজ সন্তানের জন্মের ক্ষেত্রে একটিতে ভিন্ন পিতার ঘটনা ঘটে থাকে।
‘যেহেতু একটি ডিম্বাণুর জীবনকাল ১২ থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং একটি শুক্রাণু সাত থেকে ১০ দিন কার্যকর থাকে, তাই সম্ভাব্য ওভারল্যাপের সময় প্রায় এক সপ্তাহ। এ সময়ে দুটি ডিম্বাণু দুটি শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হতে পারে’, নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের পরিচালক ডা. কিথ এডলম্যান বিচারের সময় সিএনএনকে বলেন।
এটি আমাদের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি ঘটে, এডলম্যান আরো বলেন। ‘অনেক পরিস্থিতিতে নিশ্চিত হয়ে বলা সম্ভব না, কারণ যমজদের পিতৃত্বের পরীক্ষা করার কোনো কারণ নেই।
সূত্র : নিউ ইয়র্ক পোস্ট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।