জুমবাংলা ডেস্ক : তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে তারা তাপমাত্রা নির্ধারণ করে তাপপ্রবাহকে ‘দুর্যোগ’ ঘোষণারও দাবি জানান।
তারা বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দেখা দিচ্ছে স্বাস্থ্যগত সমস্যা। তাই এটি মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনার আওতায় দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। কাজ-কর্মের সময়ে পরিবর্তন আনাসহ কিছু কিছু ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে তাপপ্রবাহের মধ্যেও কিছুটা সহনীয় রাখা যেতে পারে জীবনযাত্রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কোনো বিস্তৃত এলাকাজুড়ে নির্দিষ্ট সময় ধরে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি থাকলে মৃদু, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি থাকলে মাঝারি ও ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলে তাকে অতিতীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।
গত ২০ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে। এটিই ছিল চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ওইদিন দিনের তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৪ ও পাবনার ঈশ্বরদিতে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও তাতে জনজীবনে স্বস্তি আসেনি। ঈদের ছুটির পর গত ২১ এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তাপপ্রবাহের কারণে তা বন্ধ।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, ‘এ ধরনের দাবদাহ স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। আমাদের শরীর যে তাপমাত্রায় স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে, এমন উচ্চ তাপমাত্রায় তা পারে না। নানা ধরনের শারীরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় অস্বাভাবিক হয়ে যায়। সরাসরি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কারও জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আবার কারও কারও অন্য ধরনের অসুস্থতা ও সংক্রমণও হতে পারে। এটা (দাবদাহ) আমাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে তাতে সন্দেহ নেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেন্ট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দাবদাহের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। তাপ যাতে সহনীয় হয় সেই পদক্ষেপগুলোও নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রচুর গাছপালা লাগাতে হবে, জলাশয় রাখতে হবে। জলাধার নষ্ট করা যাবে না। সারা পৃথিবীতেই তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তো আছেই। দাবদাহ দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সার্বিকভাবে জনজীবন বিঘ্নিত হচ্ছে।’
‘আগে মানুষ একটা ছাতা নিয়ে ঘুরতো, সেটা বেশ বড় ছিল, রং ছিল কালো। কালো রঙটা এমনি এমনি ছিল না। কালো তাপ শোষণ করে নিচে ঠান্ডা রাখতো। এখন ছাতার রং রঙিন। এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।