জুমবাংলা ডেস্ক : সমাজের অবহেলিত, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সাখাওয়াত মো: জাকারিয়া। তার এই সাফল্যের পেছনে মাদরাসা শিক্ষিকা মায়ের ভূমিকাকেই সবচেয়ে বেশি বলে জানান তিনি। জাকারিয়া বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে পরীক্ষা দেয়ার সময় থেকেই রাতে মা তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য জাগাতেন। মা-বাবা, প্রিয় শিক্ষকসহ বন্ধুদের প্রত্যাশা পূরণের প্রচেষ্টাই তাকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে বলেও মনে করেন জাকারিয়া।
মঙ্গলবার ফার্মগেটে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রসঙ্গে জাকারিয়া বলেন, এ জন্য তারা (হামলাকারীরা) ক্ষমা চেয়েছে। আমিও তাদেরকে ক্ষমা করেদিয়েছি। তাদের সম্পর্কে আমার আর কোনো বক্তব্য নেই। তবে তার ওপর ওই হামলার পর ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার আনন্দ মুহূর্তেই মাটি হয়ে গেছে বলে জানান দেশ সেরা এই মেধাবী শিক্ষার্থী।
জাকারিয়া বিষয়টিকে বিছিন্ন ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হিসেবে দেখলেও জানান, পরিবারে তাকে নিয়ে আতঙ্ক আর নানা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পটুয়াখালীর বদরপুরে গ্রামে থাকা মা ওই ঘটনার পর বেশ উদ্বিগ্ন তাকে নিয়ে। বারবার ফোন করে খোঁজখবর নিচ্ছেন। ‘বেশ কন্নাও করেছেন মা’। একইভাবে গাজীপুরে নিজ কর্মস্থলে থাকা বাবাও ছেলেকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। জাকারিয়া বলেন, ‘আমি আশা করবো এমন ঘটনা আর না ঘটুক’। কোচিং সেন্টারগুলোর এমন অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।
দুই ভাইয়ের মধ্যে জাকারিয়া বড়। ছোট ভাই ঢাকার ডেমরা দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ছে। জাকারিয়া জানান, তিনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। পরে পটুয়াখালীর পাঙ্গাশিয়া কামিল মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি চলে যান হাফেজি পড়তে। আড়াই বছরে হেফজ শেষ করে ফের আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন।
পঞ্চমে ট্যালেন্টপুরে বৃত্তি ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পান জাকারিয়া। এরপর নবম শ্রেণিতে ডেমরার দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখানেও সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখেন তিনি। দাখিল ও আলিমে জিপিএ-৫ পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্য লাভের পেছনের গল্প তুলে ধরতে গিয়ে এসব কথা বলেছেন তিনি।
জাকারিয়া বলেন, সবাই প্রত্যাশা করতেন আমি ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হবো। আমিও তা চাইতাম। এ জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি একজন মুসলমান হিসেবে যখনই সময় পেতাম মোনাজাতে প্রথম হওয়ার দোয়া করতাম। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে আমি সেটিই হয়েছি।
ভবিষ্যৎে লক্ষ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন ল’য়ার হতে চাই। যদিও শুরুতে আমার মা-বাবার এতে আপত্তি ছিল। আমার স্বপ্নের ক্ষেত্রে এখন তাদের দ্বিমত নেই। তাদেরকে আমি বলেছি যে আমি এটাকে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে পেশা করতে চাই না। আমি চাই, অসহায় মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়া নিশ্চিত করতে। এ জনই আমি স্বপ্ন দেখি আইনজীবী হওয়ার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।