জুমবাংলা ডেস্ক : ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর মসজিদপাড়ায় তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার পর এবার ওই পরিবারের ৮ মাস বয়সী শিশু আব্দুল্লাহ ইবনে হুসাইনকে হত্যার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে তাই মা শিউলী খাতুন পালিয়ে পিতার বাড়িতে উঠেছেন।
জানা গেছে, চার বছর আগে শিউলী খাতুনের দুই শিশু সন্তানসহ একসঙ্গে তিন শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছিল তার স্বামীর বড় ভাই ইকবাল হোসেন। বর্তমানে ইকবাল জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। তার এই ঘোরাফেরায় কোলের শিশুটির ক্ষতি হতে পারে এমন আশংকায় বর্তমানে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন শিউলী খাতুন।
শিউলী খাতুনের অভিযোগ,ইকবাল হোসেন জামিন পাওয়ার পর তার নিজের পাসর্পোটটি নবায়ন করেছেন। এখন ভিসার জন্য চেষ্টা করছেন। ভিসা পেলে ইকবাল দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। আর ইকবাল পালিয়ে গেলে তার দুই শিশুসহ তিন শিশু হত্যার বিচার পাবেন না বলে আশংকা করছেন।
শিউলী খাতুন জানান, ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর মসজিদপাড়া এলাকার গোলাম নবীর বাড়িতে তিনটি শিশুকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। গোলাম নবীর দুই ছেলে ইকবাল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ ছিল। এই দ্বন্দের কারণে ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে মোস্তফা সাফিন (৭) ও মোস্তফা আমিন (১০) এবং শিশু দুইটির ফুপাতো ভাই মাহিন হাসানকে (১২) ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারপিট করে বড় ভাই ইকবাল হোসেন। এক পর্যায়ে গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে আগুন ধরিয়ে শিশু তিনটিকে হত্যা করে।
শিউলী খাতুন আরও জানান, সাফিন আর আমিনের মৃত্যুর ৩ বছর ৩ মাস পর তার গর্ভে নতুন সন্তান আসে। ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ তার জন্ম হয়েছে। নাম রেখেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে হুসাইন। এই শিশুটি জন্ম নেওয়ার সাড়ে ৩ মাস পরই ইকবাল হোসেন কারাগার থেকে বাইরে বেরিয়েছেন। এরপর থেকে তিনি আতঙ্কে আছেন। কারণ ইকবালের ইচ্ছা দোলোয়ারের বংশ শেষ করা। তিনি এখন স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি শৈলকুপার চতুড়িয়া গ্রামে অবস্থান করছেন।
গ্রাসবাসি জানায়, গোলাম নবীর ছোট ছেলে দেলোয়ার হোসেন পেশায় স্কুল শিক্ষক, আর বড় ছেলে ইকবাল হোসেন থাকতেন সিঙ্গাপুরে। সেখান থেকে টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। ঘটনার ৫ থেকে ৬ মাস আগে ইকবাল বিদেশ থেকে দেশে ফিরে পিতা গোলাম নবীর কাছে তার পাঠানো টাকার দাবি করে। এই টাকা নিয়ে তার পিতা গোলাম নবী, ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেনেরর সঙ্গে ইকবালের বিরোধ হয়। এই বিরোধ এর কারনে ইকবাল হোসেন প্রতিশোধ নিতে শিশু তিনটিকে পুড়িয়ে মারে। আগুন দেওয়ার পর শিশু তিনটি যখন পুড়ছিল তখন ইকবাল চিৎকার করে বলেছিল ‘আমি দেলোয়ারের বংশ নির্বংশ করে দিয়েছি’। পরে ইকবাল হোসেনকে জনসাধারণ আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। সেই থেকে ইকবাল কারাগারে থাকলেও গত জুলাই মাসের ১৭ তারিখ তার জামিন হয়েছে। জামিনের পর এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মামলায় শাস্তি হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন ইকবাল। যে কারনে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন। গত নভেম্বর মাসে ইকবাল হোসেন তার পুরাতন পাসর্পোটটি (নম্বর- ঊঊ০৪২৭১০৬) নবায়ন করেছেন। এখন ভিসার জন্য চেষ্টা করছেন। ভিসা পেলে ইকবাল হোসেন দেশ ছেড়ে পালাবেন। ইকবাল হোসেন যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন এই বিষয়টি তিনি লিখিত ভাবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে অবহিত করেছেন। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।