ত্বকের যত্নে রূপসচেতনেরা নানা রকম প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকেন। তবে খাবারে থাকা ভিটামিন ত্বকের জন্য কিন্তু বেশ উপকারী। কোন কোন ভিটামিন ত্বকের জন্য ভালো, সেটা জানা প্রয়োজন, তবেই মিটবে ত্বকের সমস্যা। ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার কেবল মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত উজ্জ্বলই করে না, বরং আপনি এর অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সুবিধাও পাবেন। প্রসাধনী ব্যবহারের চেয়ে খাদ্যের মাধ্যমে যে ভিটামিনগুলো গ্রহণ করা হয়, তা সমানভাবেই গুরুত্বপূর্ণ।
কমলা ও লেবুর মতো সাইট্রাস ফলে রয়েছে ভিটামিন সি, যা ত্বকের স্বাস্থ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক চর্মরোগ–বিশেষজ্ঞ ও ত্বকস্বাস্থ্য–বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে উচ্চক্ষমতার ভিটামিন সি হলো সবচেয়ে কার্যকর উপাদানগুলোর একটি। কোলাজেন ঝুলে যাওয়া চেহারা, সেই সঙ্গে সূক্ষ্ম ও বলিরেখা কমিয়ে দেয় ভিটামিন সি। এ কারণেই ভিটামিন সি অনেকগুলো অ্যান্টি-এজিং স্কিনকেয়ার পণ্যে পাওয়া মূল উপাদানগুলোর মধ্যে একটি।
সূর্যের ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি থেকে সুরক্ষার জন্য ত্বকে প্রয়োগ করা সানস্ক্রিনের কার্যকারিতাও বাড়াতে পারে এই ভিটামিন। পর্যাপ্ত ভিটামিন সি গ্রহণ, শুষ্ক ত্বক মেরামত করতেও সাহায্য করতে পারে। যদি দেখেন যে আপনি আপনার খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি পাচ্ছেন না তাহলে কমলালেবুর মতো সাইট্রাস–জাতীয় খাবার খান। ভিটামিন সি-এর অন্যান্য উদ্ভিদভিত্তিক উৎস, যেমন স্ট্রবেরি, ব্রকলি আর পালংশাকও খেতে পারেন। ত্বকের শুষ্কতা, বলিরেখা এবং বয়সের দাগের চিকিৎসার জন্য ভিটামিন সি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। তবে বাড়াবাড়ি কিছু হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ভিটামিন ডি-কে সাধারণত ‘সানশাইন ভিটামিন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সূর্যালোকের সংস্পর্শে এলে শরীর এটি তৈরি করে। অন্যদিকে সূর্যের এক্সপোজার ত্বকের সমস্যা, যেমন অকাল বার্ধক্য, সানস্পট ও ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাহলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় কী? ভিটামিন ডি হলো চর্বিযুক্ত মাছ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যে পাওয়া একটি চর্বি-দ্রবণীয় হরমোন।
এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ব্রণযুক্ত ত্বকের জন্য একটি চমৎকার সমাধান। ভিটামিন ডি-এর একটি সক্রিয় রূপ হলো ক্যালসিট্রিওল; যা ত্বকের কোষের বৃদ্ধি, মেরামত ও বিপাক প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। ত্বকের ইমিউন সিস্টেমকেও শক্তিশালী করে। তাই প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি আছে, এমন খাবার খাওয়া উচিত। যেমন সালমন, টুনা ও কড মাছ।
ভিটামিন সি-এর মতো, ভিটামিন ই–তেও রয়েছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান। ত্বকের যত্নে এর প্রধান কাজ হলো সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা। সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি আলো শোষণ করে এই ভিটামিন। সেই সঙ্গে কালো দাগ ও বলিরেখাও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম, ফল ও শাকসবজিতে পাওয়া যায় ভিটামিন ই। যেমন হ্যাজেলনাট, পাইন বাদাম, চিনাবাদাম, অ্যাভোকাডো ও আমে রয়েছে এই ভিটামিন।
ভিটামিন এ স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য আরেকটি অপরিহার্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি পুষ্টি উপাদান, যা বলিরেখা, ব্রণ ও অকাল বার্ধক্যের অন্যান্য লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। গাজর, স্কোয়াশ, কুমড়া, তরমুজ, সবুজ শাক আর মিষ্টি আলুতে পাওয়া যায় এই ভিটামিন। ত্বককে সূর্যালোকের প্রতি কম সংবেদনশীল করে তোলে ভিটামিন এ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।