যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ কাছে অনেক নারীই বলেছেন, বয়স ত্রিশের কোটায় থাকার সময় তারা যতটা যৌ’ন উত্তেজনা অনুভব করেন, বিশের কোটায় থাকার সময় অতটা অনুভব করতেন না। অনেক গবেষণায়ও এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ৩০-৩৯ বছর বয়সী নারীরা সবচেয়ে বেশি যৌ’নতা অনুভব করেন।
কিন্তু তার মানে এই নয় এই বয়সে মানুষ যৌ’নতা বিষয়ক ভুলগুলো করে না। ত্রিশের কোটায় এসে মানুষ যৌ’নতা বিষয়ক সাধারণ যে ১০টি ভুল করে সেগুলো নিয়ে কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞরা।
১. অলস বা গতানুগতিক যৌ’নতা
‘প্রায় সবাই যৌ’নতা নিয়ে গতানুগতিকতা বা একটি নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ থাকেন। আপনি যখন প্রতিদিনই একইরকমভাবে যৌ’নতায় লিপ্ত হবেন, তখন আপনিও একই ফাঁদে পা দেবেন। সঙ্গীকে ন’গ্ন করা, তার স্পর্শকাতর অঙ্গগুলোতে হাত বোলানো, চুমু খাওয়া এবং সরাসরি যৌ’নতায় লিপ্ত হওয়া, এগুলো সবই গতানুগতিক কিংবা অলস যৌ’নতা। এ ধরনের যৌ’নতায় আপনার সৃজনশীলতা প্রকাশ পায় না। শুধু বেশি সময় ধরে যৌ’নতায় লিপ্ত থাকলেই সেটাকে ভালো যৌ’নতা বলা যায় না, বরং আপনি যে সময়টুকু ব্যয় করলেন তা সর্বোচ্চ তৃপ্তিদায়ক হয়েছে কিনা, সেটাই আসল কথা। – শ্যানন চাভেজ, যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ, লস এঞ্জেলেস যুক্তরাষ্ট্র
২. ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌ’নতা
‘যৌ’নতার জন্য ইচ্ছাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন মন থেকে যৌ’নতার ইচ্ছাটা অনুভব করবেন, তখন সেটি আপনাকে ভালো অনুভূতি দেবে। নিয়মিত যৌ’নতা আপনার যৌ’ন ইচ্ছা ফিরিয়ে আনতে পারে।’ – স্টিফেন স্নাইডার, যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ, নিউ ইয়র্ক সিটি
৩. সন্তান জন্ম নেওয়ার পর যৌ’নতা বিমুখ হয়ে যাওয়া
‘এটা ঠিক যে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর তাকে দিন-রাত প্রচুর সময় দিতে হয়। সন্তানের সব কাজ শেষ করতে করতে প্রায়ই গভীর রাত হয়ে যায়। অনেক সঙ্গীই যৌ’নতার জন্য এত রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন না। সঙ্গীর মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন। একে অপরের চাহিদা বোঝার চেষ্টা করুন। সম্পর্ক হচ্ছে সন্তানের মতো। সন্তানের যেভাবে যত্ন নেন, সম্পর্কের যত্নও সেভাবে নিতে হবে।’ – লরেল স্টেইনবার্গ, সাইকোথেরাপিস্ট, আমেরিকান একাডেমি অব ক্লিনিক্যাল সে’ক্সিওলজিস্ট
৪. যৌ’নতাকে খুব সিরিয়াসলি নেওয়া
‘ভালো স্বাস্থ্য এবং ভালো সম্পর্কের জন্য যৌ’নতা খুবই প্রয়োজনীয়, এটা সত্য। কিন্তু সেজন্য যৌ’নতাকে এত সিরিয়াসলি নেওয়া ঠিক নয় যে এখানে কোনো মজার উপাদান থাকতে পারবে না। যৌ’নতার সময় কিঞ্চিত মজা করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের যৌ’নতার ব্যাপারে উদার হতে হবে কিন্তু সব ব্যাপারে পরদর্শীতার প্রয়োজন নেই। উভয়ই পর্যাপ্ত তৃপ্তি পাচ্ছে কিনা, এটাই যৌ’নতার একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।’ – শ্যানন চাভেজ, যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ, নিউ ইয়র্ক সিটি
৫. নারী সঙ্গীর ভগা’ঙ্কুরকে গুরুত্ব না দেওয়া
‘অধিকাশংশ নারীই মনে করেন চূড়ান্ত যৌ’নতার মাধ্যমেই তারা চরম অবস্থায় উপনীত হবেন। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে ৯৭ শতাংশ নারীরই চূড়ান্ত অবস্থায় উপনীত হওয়ার জন্য সরাসরি ক্লিটো’রাল বা ভগা’ঙ্কুরের স্টিমুলেশনের প্রয়োজন হয়। শরীরের কোনো অংশটি সবচেয়ে স্পর্শকাতর কিংবা কোন অংশে যৌ’ন স্পর্শ আপনি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেন, সেটা জানতে হলে আগে নিজেই হস্তমৈ’থুন করুন। আপনি যখন যৌ’নতার জন্য আপনার শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অঙ্গটি জানতে পারবেন, তখন সঙ্গীকেও সেটি জানাতে পারবেন। এতে আপনার যৌ’নতা বেশি উপভোগ্য হবে। আপনার সঙ্গীর হয়তো আগেই অর্গা’জম হয়ে গেছে, কিন্তু তারপরও সে আপনাকে নানাভাগে অর্গা’জম করাতে পারে। এটা করতে হলে পুরুষ সঙ্গীকে তার নারী সঙ্গীর ভগা’ঙ্কুরকে বুঝতে হবে।’ – অ্যাঙ্গেলা স্ক্রুটু, ‘হেল্পিং কাপলস ওভারকাম ইনফিডেযলিটি: অ্যা থ্যারাপিসট ম্যানুয়াল’ বইয়ের লেখক
৬. বহু’গামীতা ঠিকমতো বোঝা ছাড়াই এতে লিপ্ত হওয়া
‘বয়স ত্রিশ বা তার বেশি হয়ে গেছে, এমন অনেক মানুষই অদ্ভুত সম্পর্কে আবদ্ধ থাকেন যেখানে যৌ’নতার স্থান প্রায় নেই। এমনকি যৌ’নতা নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গেও বেশি একটা আলোচনা করেন না তারা। ফলে অনেকেই সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চায় কিংবা যৌ’নতাকে ছাড়তে চায়। অনেকেই নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে যায়, কারণ নতুন সম্পর্কে এমন অনেক চমক এবং উত্তেজনা থাকে যা তারা হারাতে চায় না।
ইদানিং অনেক দম্পতিকে নিয়ে আমি কাজ করছি যাদের আজীবনই বহু’গামীতার উদ্দেশ্য ছিল, কিন্তু এখন তারা বহু’গামীতা না চেয়ে পারস্পরিক সম্মতিসূচটক যৌ’নতার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। বিয়ের ব্যাপারে খোলামেলা কথা সবাই বলতে পারে না। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, বিশ্বাসঘাতকতা না করে সরাসরি কিংবা খোলামেলা কথা বলাই ভালো। অনেক সময় সরাসরি কথা বললে সঙ্গিটি আপনার যৌ’ন চাহিদার কথা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং সেভাবে সক্রিয় হয়। এতে সম্পর্কটি ভাঙার হাত থেকে রক্ষা পায়।’ – ইয়ান কের্নার, যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ
৭. কষ্টকর যৌ’নতা
‘সন্তান জন্মদানের পর যৌ’নতায় লিপ্ত হওয়া অনেক নারীর জন্যই কষ্টকর অভিজ্ঞতা। কষ্টকর যৌ’নতা নারী সঙ্গীকে যৌ’নতা বিমুখ করে তোলে। আমি তাই সব নারীকে অন্তত একটি শারীরিক থ্যারাপি নেওয়ার পরামর্শ দেই। একজন থেরাপিস্ট আপনার যৌ’নতার কষ্ট কমিয়ে আরও উপভোগ্য করে তুলতে সাহায্য করনতে পারে।’ – অ্যাঙ্গেলা স্ক্রুটু, ‘হেল্পিং কাপলস ওভারকাম ইনফিডেযলিটি: অ্যা থ্যারাপিসট ম্যানুয়াল’ বইয়ের লেখক
৮. সঙ্গীকে ঠিকমতো সময় না দেওয়া
‘বয়স ত্রিশ পার হয়ে গেলে মানুষ নানা ধরনের দায়িত্বের চাপে আবদ্ধ হয়ে যায়। পরিবার, কর্মক্ষেত্র এবং অতিরিক্ত অর্থ আয়ের পেছনেই তারা সব সময় ব্যয় করে। এতসব দায়িত্ব আর চাপের মধ্যে অনেকেই সম্পর্ককে সময় দিতে পারে না। কিন্তু তৃপ্তিময় যৌ’ন সম্পর্কের জন্য সম্পর্কের পেছনে সময় দিতে হয়।’ – ভ্যানেসা মারিন, যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ
৯. হস্তমৈ’থুন না করা
‘সঙ্গীর সঙ্গে যৌ’নতা আর হস্তমৈ’থুন দুটি আলাদা জিনিস। আপনার যৌ’ন সঙ্গী আছে বলেই যে আপনকে হস্ত’মৈথুন বন্ধ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। হস্তমৈ’থুন করলে আপনার মনের সাথে শরীরের সম্পর্ক তৈরি হয়। হস্তমৈ’থুনের কারণে আপনার যৌ’ন ইচ্ছাগুলোও আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারেন, যেটি সঙ্গীর সঙ্গে যৌ’নতায় কাজে দেয়।’ – শ্যানন চাভেজ, যৌ’ন রোগ বিশেষজ্ঞ, নিউ ইয়র্ক সিটি
১০. নিজের যৌ’ন সম্পর্ককে অন্যের সঙ্গে তুলনা করা
‘বন্ধুর সঙ্গে নিজের যৌ’ন জীবন নিয়ে কথা বলা মানুষের একটি সাধারণ প্রবণতা। এতে বন্ধুর সঙ্গে নিজের যৌ’ন জীবনের তুলনার একটি প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়। আপনার যৌ’ন জীবন কেমন হবে সেটা শুধুমাত্র আপনি এবং আপনার সঙ্গীর ওপর নির্ভর করবে, অন্য কারও ওপর নয়।’ – লরেল স্টেইনবার্গ, সাইকোথেরাপিস্ট, আমেরিকান একাডেমি অব ক্লিনিক্যাল সে’ক্সিওলজিস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।