নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: কেউ নিম পাতা শুকাচ্ছেন, কেউ বিন্নার শিকড় উল্টাচ্ছেন আবার কেউবা শুকানো শেষে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন সজনে পাতা। এমনই দৃশ্যের দেখা মেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দরগারচালা এবং ঢালেশ্বর গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই। আশির দশক থেকে ভেষজ ওষুধের প্রক্রিয়া শুরু হয় এ গ্রামগুলোতে।
দীর্ঘদিন যাবত এখানকার প্রায় কয়েক শ পরিবার ভেষজ গাছের ছাল, বাকল ও পাতা শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতের পর তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। অনেকে নিজেদের বাপ-দাদার পেশা হিসাবে করছেন এই কাজ। আশপাশের মানুষের কাছে এ দুই গ্রামের পরিচিতি পেয়েছে ভেষজ ওষুধের গ্রাম হিসেবে।
সজনে, নিম, তুলসী, আমলকী, হরীতকী, অর্জুনগাছের ছাল, বাকল ও পাতা রাস্তার পাশে এবং কেউ কেউ বাড়ির আঙ্গিনায় শুকাতে দিয়েছেন। কিছুক্ষণ পর পর বাড়ির গৃহিণী এবং শ্রমিকরা এসে তা উল্টে-পাল্টে দিচ্ছেন। কেউ কেউ কাণ্ড থেকে পাতা ছাড়ানোর কাজ করছেন, কেউ কেউ শুকনো পাতা বস্তায় ভরে বাড়িতে নিচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এগুলো কিনে আনেন বাড়ির পুরুষরা। তারপর শুকানোর দায়িত্ব নারীদের। এই গ্রামের অনেক পরিবার এখন এই কাজের সঙ্গে জড়িত।
ভেষজ গুণসম্পন্ন কাঁচামাল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নিজাম উদ্দীন (৬৫) জানান, প্রায় ৩৫ বছর যাবত তিনি এ ব্যবসায় জড়িত। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে ভেষজ উদ্ভিদ কেনার পর তার ছাল, বাকল ও পাতা ছাঁটাই করে এনে তা রোদে শুকিয়ে বিক্রি করেন। চাহিদাও মোটামুটি ভালো।
এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সুমন মিয়া (৩৩) জানান, এ ব্যবসার সাথে আমার পরিবার ৪০ বছর যাবত জড়িত। সর্বপ্রথম আমার পরিবার এ ব্যবসায় শুরু করে। বর্তমানে এ ব্যবসার পরিধি অনেক বেড়েছে, এখন অনেক পরিবার এ ব্যবসার সাথে জড়িত।
গৃহবধূ সালমা বেগম (৩৮) জানান, খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে আমরা ভেষজ উদ্ভিদগুলোকে শুকিয়ে ঢাকার পার্টির কাছে বিক্রি করে থাকি। ভালো আয় হয়।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ভেষজ উদ্ভিদ স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। শ্রীপুর উপজেলায় পতিত জমিতে ভেষজ উদ্ভিদ রোপণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আমরা ভেষজ উদ্ভিদ রোপণের মানুষদের উদ্বুদ্ধ করবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।