কুড়িগ্রামের উলিপুরে দলীয় কোন্দলের শিকার হয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন তালুকদার। বিভিন্ন জাতীয় দিবস, সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে তাকে আমন্ত্রণ না জানানোয় তিনি এ হুমকি দেন।
তিনি বলেন, আত্মহত্যার সিধান্ত নেওয়া ছাড়া তার বেঁচে থাকা এখন কষ্টকর হয়ে দ্বাঁড়িয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় গ্রুপিং ও কোটারি রাজনীতির রোষানলে পড়ে এসব আক্ষেপের কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, আমি একজন সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। এ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আমি এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং মুজিবনগর সরকারের পলিটিক্যাল সুপারভাইজার ছিলাম। কিন্ত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও আমাকেসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত অবমূল্যয়ন করা হচ্ছে। যা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে কিছু আওয়ামী লীগ নেতার কারণে স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনকে বাদ দিয়ে, বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতার বিপক্ষের লোকজনকে সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বর্ষীয়ান এ নেতা আরো বলেন, ২৭ বছর উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করেছি। সেই দুঃসময়ের নেতাদেরকেও আমার মতো কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে। ১৯৯১ সালে রংপুর অঞ্চলের একমাত্র নৌকার প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে একটি সুযোগ সন্ধানী চক্র বসন্তের কোকিল হয়ে দলটাকে গ্রাস করে নিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসাচ্ছেন।
যিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। সেই মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফাকে নিয়ে সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে ছবি তোলেন। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আর এই সমস্ত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ব্যক্তিরা বিভিন্ন জাতীয় ও দলীয় অনুষ্ঠানে এসে কৌশলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। ১৯৬৭ সালে আমরা কয়েকজন ছাত্র মিলে ছোট আকারে উলিপুরে প্রথম শহীদ মিনার স্থাপন করি। এখন সে ইতিহাসও বিকৃত করা হচ্ছে। এটা জাতির জন্য লজ্জার।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এমপি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোলায়মান সরদার বাদশা চিঠি না পাওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, উপরের নির্দেশে চিঠি দেওয়া হয় না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতি শিউলি, সিনয়র সহ-সভাপতি সোলায়মান সরদার বাদশাসহ আওয়ামী লীগের একাংশের নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট যারা শুধু তাদেরকেই চিঠি দেওয়া হয়। তবে এসব জাতীয় অনুষ্ঠানে সকলের আসা উচিৎ।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, সাবেক এমপি নিজেই আওয়ামী লীগ বিরোধী। বার বার তার ছেলেকে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দ্বাড় করিয়ে এখানে নৌকার ভীত নড়বড়ে করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।