নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদার দাবিতে টানা ৯ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রাঙ্গণ রোববার ছিল স্লোগানে মুখর।
দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক টানা নবম দিনের মতো কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
রোববার সকাল থেকে রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রাঙ্গণ স্লোগান ও সমবেত কণ্ঠে মুখর হয়ে ওঠে। দিনের পুরোটা সময় তারা নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবি তুলে ধরেন। অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, বারবার আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সারা দেশ থেকে স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হলে কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুল হক চৌধুরী ঢাকা সাংবাদিকদের জানান, আন্দোলন এখন অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে রূপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রস্তাবিত দাবি প্রজ্ঞাপন (জিও) আকারে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।”
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের সুনির্দিষ্ট উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছে আন্দোলনরতরা।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথমে তিন দিন শহীদ মিনারে চললেও পরে তারা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশের ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায়ও দেখা দিয়েছে চোখে পড়ার মতো স্থবিরতা। দ্রুত সমাধান না হলে সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করার অভিপ্রায় তাদের নেই; কিন্তু ২৭ বছর ধরে বারবার আশ্বাস পেলেও কোনো বাস্তব অগ্রগতি না হওয়ায় তারা আন্দোলনে বাধ্য হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরই তাদের দাবি বাস্তবায়নের প্রধান অন্তরায়—ভুল তথ্য পাঠানো, ফাইল ফেরত আসা এবং অকারণ জটিলতা তৈরি করায় বছরের পর বছর ধরে দাবি ঝুলে আছে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেড ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা নিশ্চিত করা, ধারাবাহিক পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্তি, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণে টাইম স্কেল যুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
ফজলুল হক চৌধুরী জানান, তাদের প্রস্তাবিত দাবির ফাইল এরই মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বৈষম্যের শিকার স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপন জারি হলেই তারা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



