জুমবাংলা ডেস্ক : এবার মেয়েদের সঙ্গে রাতে থাকা, তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিনোদনমূলক স্থানে ঘোরার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন জামানী মা নাকানো এরিকো। সোমবার এ আবেদন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আবেদনে বর্তমানে যে বাসায় মা-বাবার সঙ্গে মেয়েরা অবস্থান করছে, সেই বাসায় মেয়েদের পিতা ইমরান শরীফ কর্তৃক প্রতিস্থাপিত সকল সিসিটিভি ক্যামেরা অপসারণ, বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এরিকোর বিরুদ্ধে প্রচারিত ভিডিও অপসারণ এবং ভিডিও তৈরি ও আপলোডকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট একই হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই দুই কন্যা শিশুকে আপাতত আগামী ১৫ দিন জাপানী মা ও বাংলাদেশী পিতার সঙ্গেই গুলশান এক নম্বরে চার কক্ষের একটি ভাড়া বাসায় থাকার নির্দেশনা দেন। এরপর শিশু দুটিকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে ওই বাসাতে স্থানান্তর করা হয়। বাসাতে যাতে মা-বাবার মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য বিষয়টি মনিটরিং করতে ঢাকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ঢাকা পুলিশ কমিশনার ও সিআইডিকে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এ অবস্থায় এরিকো নতুন আবেদন দাখিল করলেন।
শিশু দুটির মা জাপানী নাগরিক নাকানো এরিকো’র করা এক রিট আবেদনে শিশু দুটিকে ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ আদেশের পর গত ২২ আগস্ট রাতে শিশু দুটিকে পিতার বাসা থেকে উদ্ধার করে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে সিআইডি পুলিশ। পরদিন ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট পৃথক এক আদেশে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিশু দুটিকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানেই গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত মা এবং বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পিতা কন্যা শিশু দুটির সঙ্গে সময় কাটান। এ অবস্থায় গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির করা হলে আদালত খাসকামরায় শিশু দুটি ছাড়াও তাদের মা-বাবার বক্তব্য শোনেন। এছাড়া আদালতের আহ্বানে সমঝোতায় পৌছানোর জন্য সন্তানদের পিতা-মাতাকে নিয়ে উভয়পক্ষের আইনজীবীরাও একাধিক বৈঠক করেন।
জানা যায়, জাপানী নাগরিক নাকানো এরিকো এবং বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফের ১৩ বছরের সংসারে বিরোধের জেরে গত ১৮ জানুয়ারি বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য জাপানী আদালতে মামলা করেন এরিকো। এরপর সন্তানদের নিজের জিম্মায় রাখতে টোকিও’র পারিবারিক আদালতে পৃথক একটি মামলা করেন এরিকো। টোকিও’র আদালত গত ৩১ মে এরিকোর অনুকুলে মেয়ে দুটিকে হস্তান্তরের আদেশ দেয়। ওদিকে মেয়ে দুটির বাংলাদেশী পাসপোর্ট বানিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন পিতা ইমরান শরীফ। দেশে ফিরে সন্তানদের নিজের কাছে রাখতে ঢাকার আদালতে মামলা করেন। ঢাকার আদালত তার অনুকূলে আদেশ দেয়। এছাড়া সন্তান দুটিকে ঢাকায় কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন তিনি। এ অবস্থায় গত ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর বাংলাদেশের হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মা এরিকো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।