গোপাল হালদার, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে এক সাব পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের স্থায়ী আমানত (এফডিআর), পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশন সঞ্চয়পত্রের প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত পেতে ৬ মাস ধরে ডাক বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও তাদের টাকা ফেরত পাননি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক। তবে কয়েক মাস ধরেই পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত সাব পোস্টমাস্টার আব্দুল ওহাব।
ওহাব সংস্থার কর্মকর্তা হওয়ায় পোস্ট অফিসের সকল গ্রাহকদের কাছ থেকে তিন বছর মেয়াদী সঞ্চয় হিসাবের আমানত সংগ্রহ করেন। তিন বছর মেয়াদী সঞ্চয় হিসাবে সংস্থাটিতে ৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত জমা রাখেন প্রায় শতাধিক গ্রাহক। পোস্ট অফিস থেকে গ্রাহকদের বলা হয়েছিল, চলতি বছরের মে মাস থেকে সকলের বই অনলাইন করে দেওয়া হবে।
২৮ মে বই ও অনেক গ্রহকের সঞ্চয় ভেঙ্গে অর্থ উত্তোলনের পূর্বনির্ধারিত তারিখ। সেদিন সকালে সংস্থার কার্যালয়ের সামনে লোকজন জড়ো হয়ে কার্যালয়টিতে নতুন সাব পোস্টমাস্টার দেখাতে পান। অনেকেই সাব পোস্টমাস্টার মো. আবদুল ওহাবের মুঠোফোনে ফোন করে সেটি বন্ধ পান। এরপরে জানতে পারেন গ্রহকরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
অর্থ ফিরে পেতে পটুয়াখালী ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেলের লিখিত অভিযোগ করেও দৃশ্যমান কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। আর কষ্টে অর্জিত অর্থ ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অসহায় গ্রাহকরা।
বগা ইউনিয়নের পুতুল রানী নামের এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘পরিবারের উপার্জনের প্রায় ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমা রাখি। পোস্টমাস্টার সেই টাকা বইতে জমা না রেখে আত্মসাৎ করেন। টাকা জমা রাখার সময় তিনি আমাকে একটি টোকেন দিয়েছেন। ৭ দিন পর নতুন বই দেবেন বলে জানান। পরে বই নিতে গেলে কালক্ষেপণ করেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি আমার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।’
একই ইউনিয়নের চাবুয়া গ্রামের নুর সাহেদার ৬ লাখ টাকা, রাজনগর গ্রামের সেতু রানীর ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ছায়া রানীর ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সাবুপুরা গ্রামের রিজিয়া বেগমের দেড় লাখ টাকা ও লাইজু বেগমের ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, শতাধিক গ্রাহকের প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাব-পোস্ট মাস্টার আবদুল ওহাব।
বগা বন্দর শাখার সদ্য যোগদান করা সাব-পোস্টমাস্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাব-পোস্টমাস্টার আবদুল ওহাবকে সাসপেন্ড করেছে জেলা ডাক বিভাগ কর্তৃপক্ষ। প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন গ্রাহকেরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।