জুমবাংলা ডেস্ক : দক্ষিণ এশিয়ার দুই বিবাদমান দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক এক চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে পাকিস্তান যাচ্ছেন কয়েকশ শিখ তীর্থযাত্রী। শনিবার অন্তত ৭০০ তীর্থযাত্রী পাকিস্তান যাচ্ছেন এবং আগামী দিনগুলোয়ও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত হয়ে পাকিস্তানের চার কিলোমিটার অভ্যন্তরে কার্তারপুর নামে একটি ছোট্ট শহরে যাবেন তীর্থযাত্রীরা, যেখানে শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের সমাধি সৌধ রয়েছে। কার্তারপুর করিডোরের ভারত অংশের উদ্বোধন করার সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খবর আল জাজিরা, বিবিসি, এনডিটিভি।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বিরল সহযোগিতার নিদর্শন হিসেবে শিখ তীর্থযাত্রীরা ভিসামুক্তভাবে তীর্থস্থানে ভ্রমণ করতে পারবেন। ভারত থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার তীর্থযাত্রীকে পুণ্যস্থান পরিদর্শনের সুযোগ দেবে পাকিস্তান।
শনিবার মোদির উপস্থিতিতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নরোয়াল জেলায় গুরুদ্বার দরবার সাহিবের উদ্দেশে ভারত থেকে রওনা দেয় ৫৫০ জন তীর্থযাত্রীর একটি দল। শিখ তীর্থযাত্রীদের পাকিস্তান রওনা দেয়ার আগে করিডোর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘ভারতীয়দের আবেগকে সম্মান জানানোর জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানাই। গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকীর আগে করিডোরের উদ্বোধন হওয়ায় আমরা খুব খুশি।’
গতকাল বেলা সোয়া ১টার দিকে করিডোর উদ্বোধন করেন মোদি। এরপর টুইটারে লেখেন, ‘গুরু নানকজির আশীর্বাদ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ফলে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর জন্য কার্তারপুর করিডোর খুলে দেয়া হলো।’
করিডোর উদ্বোধনের পর পুণ্যার্থীদের যে দল প্রথমবার পাকিস্তানের ওই গুরুদ্বারে প্রবেশ করতে চলেছে, সে দলে রয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং, কংগ্রেস বিধায়ক নভজ্যোত সিং সিধু, বিজেপির এমপি সানি দেওল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরি, হরসিমরত কউরসহ আরো অনেকে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত এক গণমাধ্যমে এ ঘটনাকে ‘একটি বড় মুহূর্ত’ হিসেবে মন্তব্য করেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুরুদাসপুরে এ করিডোরের উদ্বোধন করেন এবং পাকিস্তানের প্রান্ত থেকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সেটি উন্মুক্ত ঘোষণা করেন। নতুন ওই করিডোর পাঞ্জাবের ডেরা বাবা নানক মাজারকে কার্তারপুরের দরবার সাহিবের সঙ্গে সংযুক্ত করবে, যা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নরওয়াল জেলায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক সীমারেখা থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে। এখানেই শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক দেব তার জীবনের শেষ ১৮ বছর কাটিয়েছেন বলে বিশ্বাস করা হয়। কার্তারপুর করিডোর উদ্বোধনের দিনে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে কোনো মাশুল নেয়া হয়নি। পাশাপাশি ভারত থেকে আসা শিখ তীর্থযাত্রীদের কার্তারপুরে যাওয়ার জন্য কোনো পাসপোর্টেরও প্রয়োজন হবে না বলে জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
বিশ্বজুড়ে তিন কোটি শিখ ধর্মাবলম্বীর কাছে সবচেয়ে পবিত্র স্থান হচ্ছে সাদা গম্বুজের ওই ভবনটি। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় সীমান্তের পশ্চিমাংশে পড়ে যায় কার্তারপুর কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ শিখরা থেকে যায় সীমান্তের ওপারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।