ডা. ফারহানা ইসলাম নীলা : বোম্বে ব্লাড গ্রুপের কথা শুনে অনেকই হয়তো চমকে উঠবেন। এটা এক ধরনের ব্লাড গ্রুপ। এই ব্লাড গ্রুপের কথা অনেকেই জানেন না। এই গ্রুপের রক্ত খুব কম পাওয়া যায়। আমাদের পরিচিত ৮টি রক্ত গ্রুপে কোনো না কোনো অ্যান্টিজেন থাকে। কিন্তু এমন একটি রক্তের গ্রুপ আছে, যার কোনো অ্যান্টিজেন নেই, সবই অ্যান্টিবডি, মানে ‘অ-অ্যান্টিবডি’, ‘ই-অ্যান্টিবডি’ থাকে, কিন্তু কোনো অ্যান্টিজেন নেই। এই রক্তের গ্রুপ হলো বোম্বে ব্লাড গ্রুপ, যা পৃথিবীজুড়ে সবচেয়ে দুর্লভ রক্তের গ্রুপ। বোম্বে শহরে (বর্তমানের মুম্বাই শহর) সর্বপ্রথম ১৯৫২ সালে এই রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করেন ডা. ভেডে। এই শহরের নাম অনুসারেই এই রক্তের নাম ‘বোম্বে ব্লাড গ্রুপ’। তবে এর অন্য নামও আছে ‘hh blood group’। এই গ্রুপের রক্তকে ইংরেজি ছোট হাতের অক্ষর এইচএইচ অথবা বড় হাতের ও এবং ছোট হাতের এইচ অক্ষরের (ঙয গ্রুপ) গ্রুপের রক্তও বলা হয়।
পরিবারে কয়েকজন হয়তো এই গ্রুপের থাকে। সেল গ্রুপিং করলে ‘ও’ ব্লাড গ্রুপের মতো দেখায়। সিরাম গ্রুপিং করলে বোম্বে সন্দেহ হয়। এরপর অ্যান্টি এইচ দিয়ে কনফার্ম করা হয়। সে জন্য সেল এবং সিরাম গ্রুপিং ভীষণ জরুরি। তাতে ভুলের সম্ভাবনা কম হয়। যিনি বোম্বে তাকে যদি ‘ও’ ভেবে ট্রান্সফিউশন দেওয়া হয় তবে হিমোলাইটিক ট্রান্সফিউশন হয়ে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। বোম্বে ব্লাড গ্রুপ হলে কেবল বোম্বে দিয়েই ট্রান্সফিউশন করতে হয়। আর এটার জন্য পরিবারের সবার ব্লাড গ্রুপ চেক করতে হয়। অটোলোগাস ট্রান্সফিউশন করা যায় যদি রোগীর হিমোগ্লোবিন ঠিক থাকে এবং অন্য কোনো রক্তবাহিত অসুখ না থাকে। অটোলোগাস ট্রান্সফিউশন মানে যিনি ডোনার তিনিই গ্রহীতা।
খাগড়াছড়ির একটা পরিবারকে বোম্বে ব্লাড গ্রুপ হিসেবে শনাক্ত করেছিলাম। একই পরিবারে তিনজন বোম্বে। ফলে তারা নিজেরা ডোনার হতে পেরেছেন। কিন্তু আরেক বোন বোম্বে নয় বলে তার জন্য তারা ডোনার হতে পারেননি। নিকট আত্মীয় ডোনার হলে ঝুঁকি থাকে গ্রাফট ভার্সাস হোস্ট ডিজিজের। সেক্ষেত্রে ইরেডিয়েটেড রক্ত পরিসঞ্চালন করলে অসুবিধা হয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।