নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার পর আমাদের সন্তানেরা যখন স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাবে, তখন তারা সব কিছুতেই এক পরিবর্তিত রূপ দেখতে পাবে। সেই পরিবর্তিত অবস্থার মোকাবিলা বা সেই অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে চলার ক্ষেত্রে তারা নানান বাধার সম্মুখীন হতে পারে। সেগুলো কাটিয়ে উঠে শিক্ষার্থীদের একটি সুন্দর শিক্ষাজীবন এবং জ্ঞান অর্জনের একটি সুন্দর পরিবেশ উপহার দেয়াটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাতে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে আয়োজিত জুমবাংলাডটকমের ফেসবুক লাইভে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।
ফেসবুক লাইভে অতিথি ছিলেন সাবেক শিক্ষা সচিব বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান (এনআই খান) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (আইবিজিই) পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম।
‘করোনা-পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থা’ বিষয়ে এই অনুষ্ঠানে বক্তারা আমাদের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি এবং সেসব ত্রুটি কাটিয়ে ওঠার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আশা করছি করোনা তাড়াতাড়ি শেষ হবে। কিন্তু ঠিক ককে শেষ হবে, তা কোনো বিশেষজ্ঞই সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। এটি একটি মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা আমাদের জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে সব কিছুতে পরিবর্তন এনে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করেছে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে। আমাদের দেশের সরকারি- বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো খুলে দেয়া হয়নি। শিক্ষাব্যবস্থা সচল করতে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’
সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা খেয়াল করেছি করোনা মোকাবিলার সবচেয়ে বড় উপায় হলো শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। তাই আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবন যাপন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত প্রায় এক বছরে শিক্ষাব্যবস্থার যে ক্ষতি হলো, তা পুষিয়ে নিতে হাইব্রিড শিক্ষাব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। করোনা পরিস্থিতি সহসাই স্বাভাবিক না হলে অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে নতুন কোনো আয়োজন করতে হবে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষানীতি কোনো হাইব্রিড ব্যবস্থা অনুমোদন করেনা। কিন্তু আমরাতো কোনোদিন এই অবস্থায় পড়িনি। তাই শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতিটি স্কুলে হাইস্পিড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি থাকতে হবে। সব শিক্ষকের ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। সেই চ্যানেলে ক্লাশ লেকচারগুলো দিতে হবে। করোনার কারণে সৃষ্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতির সামগ্রিক চিত্র আমাদের পাঠ্যবইয়ে তুলে আনতে হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আকস্মিক কোনো দুর্যোগ মোকাবিলার উপায়ও জানতে পারবে।’
অধ্যাপক ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, করোনা একটি প্রাণঘাতী রোগ। কিন্তু এটি আমাদের জীবনে অনেক সুযোগও সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমাদের জীবনের সব কর্মকান্ডে একটা ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড তৈরি করতে পেরেছি। সারা পৃথিবীতেই এখন অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়েছে। আমাদের দেশে এটি কার্যকর করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে আমাদের শিক্ষাবিদদের মাইন্ডসেটের কারণে। বিশ্বের সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন শিক্ষা কিন্তু করোনার আগে থেকেই চালু আছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিজিটাল অবকাঠামো বিনির্মাণের এটাই কিন্তু সুযোগ। কোর্স উপকরণগুলোও সেভাবে তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ পরিচালক সাজেদ ফাতেমী। সহযোগিতা করে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।