জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় গতকাল পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩৪ জন। এদের ৫৮ শতাংশই স্বাস্থ্যকর্মী। আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক আছেন ৪৭ জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তির নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও অন্য রোগীর সংস্পর্শে আসার তথ্য গোপন করার কারণেই স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার মানহীন পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ, যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা ঝুঁকিতে আছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ বিভাগে গতকাল পর্যন্ত মোট ১৩৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৫৮ শতাংশ। শুধু ময়মনসিংহ জেলায় ৯০ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র ধরা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালকে। গতকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালের ৩৩ জন চিকিৎসক, ১৬ জন নার্স ও ২৩ জন স্টাফ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। একের পর চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়া এবং অন্য চিকিৎসকরা কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় এ হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চিকিৎসক স্বল্পতায় এক হাজার শয্যার বেডের এ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
মমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৬ এপ্রিল শেরপুর থেকে আসা এক অন্তঃসত্ত্বা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ১৭ এপ্রিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারীর ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৮ এপ্রিল ভোরে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। ১৯ এপ্রিল তার নমুনা হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয় এবং পরদিন তার নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর আগে মেডিসিন বিভাগে এক রোগী ও কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে দুজন রোগীর নমুনা পরীক্ষায় নভেল করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। এসব রোগী তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর নমুনা পরীক্ষায় এসব রোগীর সেবাদানকারী বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন। এর পর থেকে হাসপাতালজুড়ে কর্মরত চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আবুল কাশেম বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীরা তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নিতে এসে চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন।
তিনি জানান, এ বিভাগের গতকাল পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৭৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩৪ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ১ হাজার ৪২৭ নমুনার মধ্যে ১২০ জন, নেত্রকোনায় ৪৯৯ নমুনার মধ্যে ৩৫, জামালপুরে ৭৫১ নমুনার মধ্যে ৫১ ও শেরপুরে ৩৯৭ নমুনার মধ্যে ২৮ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।