আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুসলমান ও খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন ও বাইবেল নতুন করে লেখার উদ্যোগ নিয়েছে চীন। দেশটিতে চালুথাকা সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সব ধরনের মৌলিক ধর্মগ্রন্থগুলোর পার্থক্য দূর করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল। প্রতিবেদনে বলা হয়, কোরআন বা বাইবেলের কথা সরাসরি উল্লেখ না করা হলেও ধর্মগ্রন্থগুলোর নতুন সংস্করণে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনও উপাদান থাকবে না বলে জানিয়েছে বেইজিং।
চলতি বছরের নভেম্বরেই চীনের জাতিতত্ত্ব বিষয়ক কমিটির এক সভায় সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ দেয়া বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানের সঙ্গে ধর্মগ্রন্থের যেসব উপাদান সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, সেসবে পরিবর্তন আনা হবে। এতে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে কোনো সাংঘর্ষিক তথ্য থাকবে না। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের শাসনামলের সঙ্গে এসব ধর্মগ্রন্থকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা দরকার বলে জানিয়েছে ওই কমিটি। পুনর্লিখিত সংস্করণে সমাজতন্ত্রের ভাবাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো ধরনের উপাদান থাকলে সেসব সেন্সর বোর্ড সংশোধন করবে।
চীনের সরকারি সংবাদসংস্থা সিনহুয়া’র প্রতিবেদনে বলা হয়, গত নভেম্বরের ওই বৈঠকে বিশেষজ্ঞ এবং কমিটির প্রতিনিধিদের বলা হয়েছে, সমাজতন্ত্রের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে মিল রেখে তাদের বিশ্বাসকে ব্যাখ্যা করার জন্য ধর্মগ্রন্থের পুনর্লিখিত সংস্করণে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আদেশ অনুসরণ করতে হবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি, ধর্মবিশ্বাসী ও বিশেষজ্ঞদের ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। চীন সরকারের পলিটিক্যাল কনস্যুলেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ওয়াং ইয়াংয়ের তত্ত্বাবধানে ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এ মাসের গোড়ার দিকে ম্যাকাওতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
চীনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের বন্দি শিবিরে আটকে রেখে যখন মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নিপীড়নের অভিযোগে বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও দেশ সমালোচনা করছে, তখন ধর্মীয় সব গ্রন্থ পুনর্লিখনের এই পরিকল্পনার তথ্য এলো।
জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যমতে, জিনজিয়াং প্রদেশে চীন ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলিমকে আটকে রেখেছে। তবে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার বলছে, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় উইঘুর মুসলিমদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.