নতুন একটি স্মার্টফোন হাতে পেলে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বাস জেগে ওঠে। কিন্তু, সেই আনন্দ যাতে প্রযুক্তিগত ঝামেলায় পরিণত না হয়, তার জন্য ফোনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস শুরুতেই ঠিক করে নেওয়া জরুরি। নতুন ফোনে সেটিংস ঠিকমতো কনফিগার করলে আপনার ডেটা সুরক্ষা, ব্যাটারির আয়ু এবং ব্যবহার অভিজ্ঞতা অনেক উন্নত হবে।
নতুন ফোনে সেটিংস প্রথমেই পরিবর্তন করা উচিত কেন?
নতুন ফোনে সেটিংস সঠিকভাবে ঠিক করা না থাকলে তা নিরাপত্তা হুমকি, অপ্রয়োজনীয় ব্যাটারি খরচ এবং বিরক্তিকর বিজ্ঞাপনের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন, তাদের জন্য ডিফল্ট সেটিংস অনেক সময় পেছনে থাকা অ্যাপ বা সার্ভিস চালু রেখে দেয়, যা ফোনের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
Table of Contents

গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা সেটিংস পরিবর্তন
প্রথমেই Settings > Privacy > Permissions Management এ গিয়ে প্রতিটি অ্যাপের পারমিশন যাচাই করুন। ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, লোকেশন – এগুলোর অ্যাক্সেস সীমিত করুন যতটা সম্ভব।
- Biometric authentication চালু করুন – ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস আনলক ব্যবহার করুন।
- Find My Device চালু করুন – ফোন হারিয়ে গেলে খুঁজে পাওয়ার জন্য সহায়ক।
- Google Account এ Two-factor authentication চালু করুন।
ব্যাটারি এবং পারফরমেন্স অপ্টিমাইজেশন
নতুন ফোনে ডিফল্টভাবে অনেক ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ চালু থাকে। Settings > Battery > Background Activity Management এ গিয়ে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ নিষ্ক্রিয় করুন।
- Adaptive Battery চালু রাখুন
- Display > Brightness কমিয়ে দিন অথবা Adaptive Brightness চালু করুন
- Unused অ্যাপ ৩০ দিন পর অটো রিমুভ সেটিংস চালু করুন
নোটিফিকেশন ও অ্যাপ সেটিংস
নতুন ফোনে ইনস্টল থাকা অ্যাপগুলো থেকে অবিরত বিজ্ঞপ্তি আসতে পারে, যা বিরক্তিকর। Settings > Notifications এ গিয়ে কোন কোন অ্যাপের নোটিফিকেশন আপনি পেতে চান, তা ঠিক করুন।
- Uninstall বা Disable করুন bloatware
- Auto-update Apps only over Wi-Fi চালু রাখুন
ডেটা ব্যাকআপ ও Sync সেটিংস
Settings > Google > Backup এ গিয়ে ব্যাকআপ অপশনগুলো চালু করুন। এভাবে আপনি গুরুত্বপূর্ণ ডেটা হারানোর ঝুঁকি কমাতে পারবেন।
- Photos & Videos গুগল ফটোতে ব্যাকআপ করুন
- Contacts, SMS, App data গুগল ড্রাইভে সিঙ্ক করুন
ডিভাইস পার্সোনালাইজেশন
নতুন ফোনের ব্যবহার অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে Settings > Display থেকে থিম পরিবর্তন, Font Size ঠিক করুন। App Drawer এবং Home Screen সেটিংস কাস্টমাইজ করুন যাতে দ্রুত অ্যাপ খুঁজে পাওয়া যায়।
নতুন ফোনের আপডেট সেটিংস
Settings > System > Software Update চেক করুন এবং অটো আপডেট চালু রাখুন। এতে ফোন সর্বশেষ সিকিউরিটি প্যাচ পাবে এবং পারফরম্যান্স উন্নত হবে।
ডিভাইস ট্র্যাকিং ও লোকেশন সেটিংস
Location Always On রাখবেন না। Settings > Location > App permission এ গিয়ে ‘While using the app’ সিলেক্ট করুন। এতে ব্যাটারিও বাঁচে এবং গোপনীয়তাও রক্ষা পায়।
বিজ্ঞাপন ও ট্র্যাকিং সীমিত করুন
Settings > Google > Ads > Opt out of Ads Personalization চালু করুন। এছাড়া Ad ID রিসেট করুন মাঝে মাঝে।
নতুন ফোনে সেটিংস ঠিকভাবে কনফিগার করা হলে শুধু ফোনের পারফরমেন্সই বাড়ে না, নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও সুরক্ষিত থাকে। নতুন ফোন হাতে পেলেই এই সেটিংসগুলো যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এটি আপনার ডিজিটাল অভিজ্ঞতা নিরাপদ ও উপভোগ্য করে তুলবে।
জেনে রাখুন-
১. নতুন ফোনের ডিফল্ট সেটিংস কেন পরিবর্তন করা জরুরি?
ডিফল্ট সেটিংস অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ চালু রাখে বা গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে। পরিবর্তন করলে আপনি নিরাপদ থাকবেন।
২. ফোনের ব্যাটারি অপ্টিমাইজ করার সবচেয়ে সহজ উপায় কী?
Background apps নিষ্ক্রিয় করা, Brightness কমানো এবং Adaptive Battery ব্যবহার করলেই ব্যাটারির আয়ু বেড়ে যায়।
৩. কোন কোন অ্যাপের পারমিশন সীমিত করা উচিত?
লোকেশন, ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোনের অ্যাক্সেস কেবল প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোর জন্য চালু রাখা উচিত।
৪. নতুন ফোনে বিজ্ঞাপন বন্ধ করার উপায় কী?
Google Ads সেটিংসে গিয়ে Ads personalization বন্ধ করুন এবং Ad ID রিসেট করুন।
৫. অটো আপডেট চালু রাখা কি প্রয়োজন?
হ্যাঁ, এতে করে ফোনে সর্বশেষ নিরাপত্তা আপডেট এবং ফিচার চলে আসে, যা নিরাপত্তা ও পারফরম্যান্স দুইই উন্নত করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।