আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে তোলপাড় ফেলে দেওয়া নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হবে পয়লা ফেব্রুয়ারি। ইতিমধ্যেই তিহার জেলে শুরু হয়ে গিয়েছে ফাঁসির প্রস্তুতি। এর দুই দিন আগেই পবন জল্লাদ পৌঁছে গিয়েছেন তিহার জেলে।
শনিবার সকাল ছটায় ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হবে নির্ভয়ার চার দোষীকে। তবে তার আগে প্রাথমিক মহড়া হিসাবে আজ শুক্রবার হবে পুতুলের ফাঁসি।
নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীর সমান ওজনের পুতুল ফাঁসি কাঠ থেকে ঝুলিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই ফাঁসির দড়ি নরম রাখার জন্য দড়িতে মাখন ও কলা মাখানো শুরু হয়েছে।
এর আগে ৫৪ বছর বয়েসী পবন জল্লাদ জানান, নির্ভয়ার চার দোষীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর কাজটা তার কাছে সৌভাগ্যের। গোটা দেশ যে চারজনকে ফাঁসি কাঠে ঝুলতে দেখতে চায়, তিনি তাদের শাস্তি দিতে চান।
উল্লেখ্য, এই পবন জল্লাদের দাদা ভারতের সাবেক প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকারীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন। সেই দাদার কাছেই পবনের হাতেখড়ি। তারপর থেকে পবন জল্লাদ বহু বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ইতিমধ্যেই ফাঁসির মঞ্চ থেকে শুরু করে দড়ি, সবই পরীক্ষা করে দেখেছেন পবন জল্লাদ। সব মিলিয়ে এখন মহা ব্যাস্ততায় দিন কাটছে পবন জল্লাদের।
ভারতের আলোচিত এই গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল দিল্লির মুনিরকা এলাকায়, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে। ওই রাতে ২৩ বছর বয়সী মেডিকেলের ছাত্রী জ্যোতি সিংহ পান্ডে তার ছেলেবন্ধু অন্দ্র প্রতাপ পান্ডের সাথে সিনেমা দেখে বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই বাসের চালক ও হেলপারসহ ৬ জন মিলে ওই নারীর ওপর হামলে পড়ে। এসময় প্রতিবাদ করায় তার বন্ধু পান্ডেকে মারধর করা হয়। এরপর হত্যার উদ্দেশ্যে ওই নারীকে খোলা রাস্তায় ফেলে রেখে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। সেখান থেকে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনার ১৩ দিন পর তাকে জরুরি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় দুই দিন পর তিনি মারা যান। এই ঘটনাটি ভারত এবং ভারতের বাইরে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। তখন এ ঘটনার প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের শাস্তি দাবি ভারত জুড়ে প্রচুর সভা সমাবেশ ও প্রতিবাদ হতে দেখা যায়। কিন্তু বিচারের নামে চলে কালক্ষেপণ। একে একে পেরিয়ে যায় দীর্ঘ ৭ বছর। অবশেষে সেই ধর্ষকদের চারজনের ফাঁসি কার্যকর হতে চলেছে। এর আগে ২২ জানুয়ারি মুকেশ-অক্ষয়-পবন-বিনয়ের ফাঁসির নির্দেশ জারি হয়েছিল। পরে তা পিছিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি হয়।
এর আগেই নিয়ম মতো তিহাড় জেলে এসে হাজির হয়ে গিয়েছেন মেরঠের পবন জল্লাদ। তিহারে কোনও ফাঁসুড়ে না থাকায় পবনকে মেরঠ থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।