আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হাতে জিম্মিদের উদ্ধার করতে একটি চুক্তি সইয়ের দাবিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। বলা হচ্ছে, এটা ইসরায়েলের ইতিহাসে অন্যতম বড় বিক্ষোভ। এতে সাড়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে গাজায় ছয় জিম্মি নিহত হওয়ার জেরে এ বিক্ষোভ হয়েছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একটি চুক্তিতে না পৌঁছানোর জন্য দোষারোপ করছেন। গত নভেম্বরে হওয়া চুক্তির ভিত্তিতে ২৪০ কয়েদিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলের ১০৫ জিম্মিকে মুক্ত করে হামাস। এখন বেশ কয়েকজন জিম্মি হামাসের কাছে রয়েছেন।
আয়োজকরা বলছেন, শনিবার রাতের ওই বিক্ষোভে কেবল তেল আবিবে ৫ লাখের বেশি মানুষ জড়ো হন। ইসরায়েলের অন্য শহরগুলোতে আরও আড়াই লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না।
বিক্ষোভকারীদের একজন দানিয়েল আলোনি। হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ওই ব্যক্তি শনিবার রাতে তেল আবিবে বলেন, কিছুদিন আগে নেতানিয়াহু জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সামনে বলেছেন, তিনি তাদের (জিম্মি) ফিরিয়ে আনতে না পারায় অনুতপ্ত। কিন্তু এটা কী ধরনের অনুতাপ প্রকাশ, আপনি আপনার গতিপথই পরিবর্তন করলেন না। আমরা আপনাকে ক্ষমা করব না। আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরের পর থেকে প্রতি মাসে ইসরায়েলে ১১৩টি বিক্ষোভ হয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, গতকাল রোববার গাজা সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিসের উপপরিচালক ও তাঁর পরিবারের চার সদস্য জাবালিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ মোর্সি উত্তর গাজায় উদ্ধার অভিযানের কাজ পরিচালনা করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজা সিটি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে জাবালিয়ার জইতুন উপকণ্ঠে বেশ কয়েকটি বাড়িতে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। স্থানীয় চিকিৎসক দল বলেছে, ভবনের ভেতর থেকে তারা লোকজনের আর্তচিৎকার শুনেছেন; বাঁচার জন্য তারা আকুতি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের উদ্ধারের সামর্থ্য নেই।
ইসরায়েলের হামলায় রোববার আরও কয়েক ডজন মানুষ নিহত হন। গত ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত ৪০ হাজার ৯৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৯০ হাজারের বেশি।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও জর্ডানের মধ্যে সীমান্তের অ্যালেনবি ক্রসিংয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে রোববার তিন ইসরায়েলি সীমান্তরক্ষী নিহত হন। ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা বিভাগের বরাত দিয়ে সিএনএন এ খবর জানিয়েছে। জর্ডানের সঙ্গে ওই ক্রসিংয়ের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, যে তিনজন মারা গেছেন, তারা ওই ক্রসিংয়ে কাজ করেছিলেন। হত্যাকারীকে চিহ্নিত করা যায়নি। এ নিয়ে জর্ডানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে।
ক্রসিংয়ের ব্যবস্থাপক অ্যালেক্স চেন বলেন, বন্দুকধারী ব্যক্তিটি জর্ডানের চালক। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্রসিংটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অস্ত্রধারী ব্যক্তি অ্যালেনবি টার্মিনালের তিনজন কর্মচারীকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করেছে।
ইসরায়েল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার পর ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যে তিনটি ল্যান্ড ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অ্যালেনবি ক্রসিং প্রধানত ফিলিস্তিনি ও বিদেশিদের সেবা দিয়ে থাকে। ইসরায়েলের নাগরিকদের এটি ব্যবহার করার অনুমতি নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।