(এই নিবন্ধটি পড়ার সময়, ঢাকার বাইরের দিকে তাকান। ধূসর ধোঁয়াশায় ঢাকা আকাশ, বুড়িগঙ্গার কালো জল – এগুলো শুধু দৃশ্য নয়, আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। কিন্তু আশার আলোও আছে, আর সেটা শুরু হতে পারে আপনার সিদ্ধান্ত থেকেই।)
আজ থেকে মাত্র এক দশক আগেও “পরিবেশ বিজ্ঞান” নামটাই অনেকের কাছে ছিল শুধুই একটি একাডেমিক বিষয়, যার ব্যবহারিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ছিল সংশয়। কিন্তু আজ? জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতা, প্রাকৃতিক সম্পদের নিঃশেষ হওয়ার দ্রুতগতি, দূষণের মহামারী আর টেকসই উন্নয়নের জরুরি প্রয়োজন – এই সবকিছু মিলে পরিবেশ বিজ্ঞানকে টেনে এনেছে একেবারে আমাদের দোরগোড়ায়। এটি এখন আর শুধু একটি বিষয় নয়; এটি একটি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার মোকাবিলার হাতিয়ার, একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের চালিকাশক্তি, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই বিনিয়োগ শুধু ব্যক্তির ক্যারিয়ারের জন্য নয়, বরং আমাদের প্রিয় এই সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশের টিকে থাকা, সমৃদ্ধি অর্জন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য অপরিহার্য। যখন নদী ভাঙন গ্রাস করছে উপকূল, লবণাক্ততা গ্রাস করছে ফসলি জমি, আর দূষিত বাতাস কেড়ে নিচ্ছে আমাদের শ্বাস, তখন পরিবেশ বিজ্ঞানের জ্ঞানই হয়ে উঠেছে আমাদের প্রধান সম্বল।
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ কেন অপরিহার্য?
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ – এই ধারণাটি শুনতে হয়তো কিছুটা ক্লিশে লাগতে পারে, কিন্তু এর পেছনে রয়েছে অকাট্য যুক্তি এবং বাস্তবতার কঠিন চাপ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনই বলে দিচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ৬-৯% পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে ২০৫০ সাল নাগাদ। অন্যদিকে, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট বারবারই জলবায়ু সংকট এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সংকটকে বিশ্বের শীর্ষ দশ দীর্ঘমেয়াদী হুমকির তালিকায় স্থান দিচ্ছে। এই পটভূমিতে, পরিবেশ বিজ্ঞানী, বাস্তুবিদ, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, টেকসই নীতিনির্ধারকদের চাহিদা বিশ্বজুড়েই বিস্ফোরকভাবে বাড়ছে।
- বৈশ্বিক চাহিদার জোয়ার: প্যারিস চুক্তি থেকে শুরু করে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) – সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে পরিবেশ সুরক্ষা। দেশে দেশে সরকারগুলো এখন কঠোর পরিবেশগত নিয়মকানুন চালু করছে, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘গ্রিন’ প্রক্রিয়ায় যেতে বাধ্য করছে। এর অর্থ কী? অর্থ হলো পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ অডিট, দূষণ ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য পুনর্ব্যবহার, নবায়নযোগ্য শক্তি, জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্পে বিশেষজ্ঞদের জন্য বিশাল কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো (UNDP, World Bank, ADB, IUCN) প্রতিনিয়তই প্রকল্প নিয়ে আসছে, যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য দরকার স্থানীয় পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের।
- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: এক জরুরি অবস্থা: বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর শীর্ষে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, নদীভাঙন, বন্যা, খরার তীব্রতা, বায়ু ও পানি দূষণের ভয়াবহ অবস্থা – এসবই আমাদের দৈনন্দিন বাস্তবতা। সরকারের মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা (MCRP) সহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প (যেমন: বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০) এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় হাতিয়ার। কিন্তু এসব পরিকল্পনা কাগজে-কলমেই থেকে যাবে যদি না দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশিক্ষিত, উদ্ভাবনী এবং নিবেদিতপ্রাণ পরিবেশ বিজ্ঞানী তৈরি হয়, যারা এই প্রকল্পগুলোকে সফলভাবে নকশা করতে, বাস্তবায়ন করতে এবং পরিবীক্ষণ করতে পারবেন। এখানেই পড়াশোনার বিনিয়োগ ভবিষ্যতের চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়ায়।
- অর্থনীতির নতুন ইঞ্জিন – গ্রিন ইকোনমি: “গ্রিন ইকোনমি” বা সবুজ অর্থনীতি আর কোনও বিকল্প নয়; এটি বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রধান অর্থনৈতিক প্রবাহ। নবায়নযোগ্য শক্তি (সৌর, বায়ু), বর্জ্য থেকে সম্পদ তৈরি (Waste-to-Energy, Recycling), টেকসই কৃষি, ইকো-ট্যুরিজম, পরিবেশবান্ধব নির্মাণ সামগ্রী (গ্রিন বিল্ডিং), ইলেকট্রিক যানবাহন – এই খাতগুলোতে বিপুল বিনিয়োগ আসছে। এই খাতগুলোতে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজন পরিবেশ বিজ্ঞানের গভীর জ্ঞান। একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী শুধু সমস্যা চিহ্নিত করবেন না, তিনি টেকসই ও লাভজনক ব্যবসায়িক মডেলও ডিজাইন করতে পারবেন। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা তাই শুধু নৈতিক বিনিয়োগ নয়, এটি একটি অত্যন্ত লাভজনক পেশাগত বিনিয়োগও বটে।
পরিবেশ বিজ্ঞানে পড়াশোনার সুযোগ ও সম্ভাবনা: শুধু গবেষণাগার নয়, বিশাল কর্মজগৎ
অনেকের ধারণা, পরিবেশ বিজ্ঞান পড়ে শুধু গবেষণা বা শিক্ষকতাই করা যায়। এটি একটি ভুল ধারণা। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ করার অর্থ হলো নিজেকে একটি অত্যন্ত বিস্তৃত ও গতিশীল কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা। এই পড়াশোনা আপনাকে যে অসংখ্য ক্যারিয়ার পথে নিয়ে যেতে পারে:
- সরকারি ও উন্নয়ন সংস্থা:
- পরিবেশ অধিদপ্তর (DoE): দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশগত ছাড়পত্র (Environmental Clearance), নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পরিবেশগত জরিপ পরিচালনা।
- জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল (BCCTF), বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট (BCCT): জলবায়ু অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা, অভিযোজন ও প্রশমন প্রকল্প ডিজাইন ও মনিটরিং।
- স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED), পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (RDA), ওয়াসা: টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, পয়ঃনিষ্কাশন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প।
- জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা (UNDP, UNEP, FAO, UNICEF), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB): পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ, প্রোগ্রাম অফিসার, গবেষক হিসেবে কাজ। যেমন, UNDP-র প্রমিজ প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ।
- পরিকল্পনা কমিশন: জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় (যেমন: পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা) পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্তকরণ।
- প্রাইভেট সেক্টর ও শিল্প:
- পরিবেশ পরামর্শক সংস্থা (Environmental Consultancy Firms): শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (EIA/IEE), দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা, পরিবেশগত অডিট, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (EMP) প্রণয়ন। বাংলাদেশে এ ধরনের সংস্থার সংখ্যা ও চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।
- বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান (টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিমেন্ট, শিপিং, এনার্জি): ইন-হাউজ এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজার, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ, টেকসইতা (সাসটেইনেবিলিটি) বিভাগে কাজ। কোম্পানিগুলো তাদের ‘গ্রিন কমপ্লায়েন্স’ নিশ্চিত করার জন্য এই বিশেষজ্ঞদের ওপর নির্ভরশীল।
- নবায়নযোগ্য শক্তি কোম্পানি (সোলার, বায়ু): প্রকল্প উন্নয়ন, পরিবেশগত সমীক্ষা, সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক স্থাপন।
- রিয়েল এস্টেট ও নির্মাণ: গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন (LEED, EDGE) অর্জনে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ, টেকসই নির্মাণ সামগ্রী ব্যবস্থাপনা।
- কৃষি ও খাদ্য শিল্প: টেকসই কৃষি অনুশীলন, জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল, জৈব কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
- গবেষণা ও শিক্ষা:
- বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (BUET, ঢাবি, জাবি, KUET, CUET, BCSIR, BRRI, SRDI): অধ্যাপনা, গবেষণা ফেলো, বিজ্ঞানী হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তি, দূষণ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু অভিযোজন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে মৌলিক ও প্রয়োগিক গবেষণা পরিচালনা। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সরবরাহ করতে পারে।
- পলিসি থিংক ট্যাঙ্কস (CPD, BIGD, ICCCAD): জলবায়ু ও পরিবেশ নীতিতে গবেষণা, বিশ্লেষণ ও সুপারিশ প্রণয়ন।
- অলাভজনক সংস্থা (NGO) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা:
- BRAC, PROSHIKA, COAST, BELA, IUCN, WaterAid: সম্প্রদায়ভিত্তিক অভিযোজন প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করা। এখানে ফিল্ড লেভেলে কাজের বিশাল সুযোগ রয়েছে।
(বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশেষ চাহিদা: দেশে বিশেষভাবে দক্ষতা প্রয়োজন এমন কিছু ক্ষেত্র হলো:
- জলবায়ু অভিযোজন কৌশল: বিশেষ করে উপকূলীয় ও হাওর অঞ্চলের জন্য।
- লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা: কৃষি, মৎস্য ও সুপেয় পানির উৎসের ওপর প্রভাব মোকাবিলা।
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (কঠিন ও তরল): শহুরে ও পৌর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী সমাধান।
- বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ (বিশেষ করে ঢাকা): উৎস শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল।
- নদী ব্যবস্থাপনা ও ভাঙন রোধ: টেকসই নদীশাসন ও সম্প্রদায়ভিত্তিক পুনর্বাসন।
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: সুন্দরবন ও অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকার ব্যবস্থাপনা।
বাংলাদেশে কোথায় পড়বেন পরিবেশ বিজ্ঞান? বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচনের গাইড
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিলে, বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো মানের প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রোগ্রামের ধরন, কারিকুলাম, গবেষণার সুযোগ এবং ফ্যাকাল্টির দক্ষতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে:
স্নাতক (B.Sc. Honors): পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি সাধারণত ৪ বছরের।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ। ঢাবির প্রোগ্রামগুলো ঐতিহ্যগতভাবে শক্তিশালী এবং গবেষণার সুযোগ ব্যাপক। আরও জানুন (ভূগোল ও পরিবেশ)।
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ। পরিবেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমন্বিত পাঠ্যক্রম ও গবেষণার জন্য সুপরিচিত। আরও জানুন।
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি): পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিন। উপকূলীয় পরিবেশ ও সুন্দরবন সংলগ্ন হওয়ায় অনন্য গবেষণার সুযোগ। আরও জানুন।
- বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট): পুরকৌশল (Civil Engineering) বা রসায়ন প্রকৌশল (Chemical Engineering) থেকে স্নাতক করে পরিবেশ প্রকৌশলে (Environmental Engineering) স্নাতকোত্তর একটি উৎকৃষ্ট পথ, বিশেষ করে প্রযুক্তিগত দিক তুলে ধরতে চাইলে।
- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি): পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। আরও জানুন।
- নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি): পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। আরও জানুন।
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি): পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ (কৃষি প্রেক্ষাপটে)।
- স্নাতকোত্তর (M.Sc./M.S.): প্রায় সব উল্লিখিত বিশ্ববিদ্যালয়েই পরিবেশ বিজ্ঞান, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে স্নাতকে ভিন্ন বিষয়ে পড়েও এগুলোতে ভর্তি হওয়া যায় (শর্তসাপেক্ষে)।
- এম.ফিল ও পিএইচ.ডি.: উচ্চতর গবেষণার জন্য ঢাবি, জাবি, খুবি, বুয়েট, শাবিপ্রবি, নোবিপ্রবি, BCSIR, ICCCAD (আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন কেন্দ্র) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ রয়েছে।
- ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স: কিছু বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন: ঢাবির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ) এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর সহ) পরিবেশ অডিটিং, জিআইএস ও রিমোট সেন্সিং, EIA, জলবায়ু অর্থায়ন ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পমেয়াদি কোর্স অফার করে, যা পেশাদার দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
(কোর্স নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়:
- কারিকুলামের আধুনিকতা: কোর্সগুলোতে কি জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য শক্তি, পরিবেশগত আইন ও নীতি, জিআইএস ও রিমোট সেন্সিং, ডাটা অ্যানালিটিক্সের মতো সময়োপযোগী বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে?
- ব্যবহারিক ও ফিল্ডওয়ার্ক: পরিবেশ বিজ্ঞান তত্ত্বের চেয়ে অনুশীলনের বিষয়। ল্যাব সুযোগ-সুবিধা, ফিল্ড ভিজিট, ইন্টার্নশিপের সুযোগ কেমন?
- ফ্যাকাল্টির এক্সপোজার ও গবেষণা: শিক্ষকরা কি সক্রিয় গবেষক? তারা কি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রকল্পের সাথে যুক্ত? এটি শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তৈরি করে।
- শিল্প ও বাস্তব জীবনের সংযোগ: বিশ্ববিদ্যালয় কি শিল্প প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা বা এনজিওগুলোর সাথে সহযোগিতা করে? গেস্ট লেকচার, সেমিনার, ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম আছে কি?
- গবেষণার সুযোগ-সুবিধা: ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি রিসোর্স, ফিল্ড ইকুইপমেন্টের পর্যাপ্ততা।
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনায় সফল হওয়ার চাবিকাঠি: শুধু ডিগ্রি নয়, দক্ষতা গড়ে তোলা
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ তখনই সার্থক হবে যখন আপনি শুধু ডিগ্রি অর্জন নয়, বরং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে মনোনিবেশ করবেন। ক্লাসরুমের পড়া পাশাপাশি নজর দিতে হবে:
- টেকনিক্যাল স্কিলস:
- পরিবেশগত নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ (পানি, মাটি, বায়ু, শব্দ): ল্যাবরেটরি টেস্টিং পদ্ধতির হাতে-কলমে জ্ঞান।
- পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (EIA/IEE) ও ঝুঁকি মূল্যায়ন: মানবসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র (HRDC) বা পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত কোর্স অত্যন্ত মূল্যবান।
- জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (GIS) ও রিমোট সেন্সিং (RS): পরিবেশগত ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন, ম্যাপিং ও বিশ্লেষণের জন্য অপরিহার্য টুল। ArcGIS, QGIS, ERDAS ইম্যাজিনে দক্ষতা।
- পরিবেশগত মডেলিং: জলবায়ু মডেল, বন্যা মডেলিং, দূষণ বিস্তার মডেলিং-এর বেসিক জ্ঞান।
- ডাটা অ্যানালিটিক্স ও পরিসংখ্যান: পরিবেশগত ডেটা প্রক্রিয়াকরণ, বিশ্লেষণ ও ফলাফল উপস্থাপনে (R, Python, SPSS ব্যবহার) দক্ষতা।
- পরিবেশগত অডিটিং ও ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (ISO 14001): শিল্প খাতে কাজ করতে চাইলে গুরুত্বপূর্ণ।
- সফট স্কিলস:
- সমস্যা সমাধান ও সমালোচনামূলক চিন্তা: জটিল পরিবেশগত সমস্যার গভীরে গিয়ে কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করা।
- যোগাযোগ দক্ষতা (লিখিত ও মৌখিক): জটিল বৈজ্ঞানিক তথ্য সহজ ভাষায় (ইংরেজি ও বাংলা উভয়ত) নীতিনির্ধারক, শিল্পপতি বা সাধারণ মানুষের কাছে উপস্থাপন করা। প্রস্তাবনা, প্রতিবেদন লেখার দক্ষতা।
- প্রকল্প ব্যবস্থাপনা: পরিবেশগত প্রকল্পের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, বাজেটিং ও মনিটরিং করা।
- দলগত কাজ ও নেতৃত্ব: বহুক্ষেত্র ও বহুশাস্ত্রীয় দলের সাথে কাজ করার সামর্থ্য।
- আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া: আন্তর্জাতিক প্রকল্প বা সংস্থায় কাজ করতে হলে অপরিহার্য।
- অভিযোজন ক্ষমতা: পরিবেশগত সংকট দ্রুত বিবর্তিত হয়, নতুন তথ্য ও প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকা চাই।
(অভিজ্ঞতা অর্জন: ইন্টার্নশিপ ও ভলান্টিয়ারিং): ডিগ্রির পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট, BRAC, WaterAid, IUCN, বেসরকারি পরিবেশ পরামর্শক সংস্থা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পে ইন্টার্নশিপ বা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করুন। এটি আপনার সিভিকে শক্তিশালী করবে, নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে এবং বাস্তব চ্যালেঞ্জ বুঝতে সাহায্য করবে।
চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের পথ: আলোর মুখ দেখার জন্য
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধ, কিন্তু কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে, সেগুলো মোকাবিলার উপায়ও আছে:
- সচেতনতার অভাব ও পেশার মূল্যায়ন: এখনও অনেক অভিভাবক বা শিক্ষার্থী পরিবেশ বিজ্ঞানকে ‘কনভেনশনাল’ ক্যারিয়ার পথ হিসেবে দেখেন না। (সমাধান): সফল পরিবেশ পেশাদারদের গল্প প্রচার, ক্যারিয়ার ফেয়ারে অংশগ্রহণ, স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক সেশন। দেখুন, ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে কাজ করা একজন এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজারের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ!
- গবেষণা ও সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতা: কিছু প্রতিষ্ঠানে আধুনিক ল্যাব, সফটওয়্যার বা ফিল্ড ইকুইপমেন্টের অভাব থাকতে পারে। (সমাধান): সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে সুযোগ-সুবিধা উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা (Erasmus+, DAAD, Fulbright) ও ফেলোশিপের জন্য আবেদন, ওপেন-সোর্স টুলস (QGIS, R) ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন।
- চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা: ভালো চাকরির জন্য ভালো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অপরিহার্য। (সমাধান): উপরোক্ত টেকনিক্যাল ও সফট স্কিলে বিশেষজ্ঞতা গড়ে তোলা, ইন্টার্নশিপ ও নেটওয়ার্কিং, নিজস্ব পোর্টফোলিও তৈরি (গবেষণাপত্র, প্রকল্প প্রতিবেদন), অনলাইন প্ল্যাটফর্মে (LinkedIn) সক্রিয় উপস্থিতি।
- নীতিগত বাস্তবায়নের দুর্বলতা: অনেক সময় ভালো গবেষণা বা পরামর্শ থাকলেও রাজনৈতিক ইচ্ছা বা প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবে তা বাস্তবায়ন হয় না, যা হতাশার সৃষ্টি করতে পারে। (সমাধান): ধৈর্য ধারণ, নীতিগত প্রক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করা, এডভোকেসি গ্রুপ বা সুশীল সমাজের সাথে যুক্ত হওয়া, স্থানীয় পর্যায়ে ছোট ছোট সফল প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবর্তনের সূচনা করা।
(আশার কথা: বাংলাদেশে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য জনসচেতনতা দিন দিন বাড়ছে। তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে জলবায়ু আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। সরকারি বাজেটেও পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে বরাদ্দ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসবই পরিবেশ পেশাদারদের জন্য ইতিবাচক সংকেত।
(একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে…) জলবায়ু পরিবর্তনের কঠিন বাস্তবতা আমাদের মুখোমুখি দাঁড় করালেও, পরিবেশ বিজ্ঞানের জ্ঞানই সেই ঢাল ও তরবারি, যার সাহায্যে আমরা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারি। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা: ভবিষ্যতের বিনিয়োগ তাই কোনও কল্পনা নয়; এটি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য, সবুজ-শ্যামল দেশ গড়ে তোলার একমাত্র বাস্তবসম্মত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এই বিনিয়োগ শুধু আপনার ব্যক্তিগত সাফল্যের গ্যারান্টি দেবে না, বরং দেশের প্রতিটি নদী, পাহাড়, সমুদ্রসৈকত, বন এবং শহরের বাতাসকে নির্মল করার লড়াইয়ে আপনাকে করে তুলবে একজন অগ্রসৈনিক। আপনার জ্ঞান, উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং নিষ্ঠাই পারে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে জলবায়ু বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে, একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথ দেখাতে। এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। পরিবেশ বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক খুলুন, গবেষণার মাঠে নামুন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ার এই মহান অভিযাত্রায় শরিক হোন। আপনার হাতেই রয়েছে সবুজ বাংলাদেশের চাবিকাঠি।
জেনে রাখুন
পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে কি ধরনের চাকরি পাওয়া যাবে বাংলাদেশে?
পরিবেশ বিজ্ঞানে পড়াশোনা করে বাংলাদেশে সরকারি (পরিবেশ অধিদপ্তর, জলবায়ু ট্রাস্ট, LGED), উন্নয়ন সংস্থা (UNDP, World Bank, বিভিন্ন এনজিও), বেসরকারি পরিবেশ পরামর্শক সংস্থা, বড় শিল্প কারখানার পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, নবায়নযোগ্য শক্তি কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়া যায়। পদগুলো হতে পারে এনভায়রনমেন্ট অফিসার, ইআইএ স্পেশালিস্ট, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যানালিস্ট, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্ট, সাসটেইনেবিলিটি কনসালটেন্ট, রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ইত্যাদি।পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা কি ভবিষ্যতে চাহিদা বাড়বে?
একেবারেই বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং সবুজ অর্থনীতির (গ্রিন ইকোনমি) বিকাশের জন্য বিশ্বজুড়েই পরিবেশ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে এর প্রয়োজনীয়তা আরও তীব্র, কেননা আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি।বাংলাদেশে পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ভূগোল ও পরিবেশ, সমুদ্র বিজ্ঞান), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (পরিবেশ বিজ্ঞান), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (পরিবেশ বিজ্ঞান), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট – পরিবেশ প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা) উল্লেখযোগ্য। প্রতিটিরই নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে।পরিবেশ বিজ্ঞানী হিসেবে আয়ের সম্ভাবনা কেমন?
শুরুতে সরকারি চাকরি বা এনজিওতে আয় মধ্যম সারির হতে পারে, তবে অভিজ্ঞতা ও বিশেষায়িত দক্ষতা (যেমন: ইআইএ, জিআইএস, ক্লাইমেট ফাইন্যান্স) বাড়ার সাথে সাথে আয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। বেসরকারি পরামর্শক সংস্থা বা বহুজাতিক কোম্পানির পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিভাগে বেতন আকর্ষণীয় হতে পারে। আন্তর্জাতিক সংস্থা বা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোতেও ভালো বেতন ও সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।পরিবেশ বিজ্ঞানে পড়াশোনার জন্য গণিত বা বিজ্ঞানে খুব ভালো হতে হবে কি?
স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য সাধারণত বিজ্ঞান বিভাগ (বায়োলজি/জীববিজ্ঞান গ্রুপ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস প্রয়োজন। জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞানের বেসিক জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ মডেলিং, ডাটা অ্যানালিসিস, জিআইএস-এর জন্য গণিত ও পরিসংখ্যানের জ্ঞান খুবই সহায়ক, অনেক সময় আবশ্যক। তবে শুধু সংখ্যায় ভালো নয়, পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রতি গভীর আগ্রহ এবং সমস্যা সমাধানের মানসিকতা থাকা জরুরি।- পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে গবেষণার সুযোগ কেমন বাংলাদেশে?
বাংলাদেশে গবেষণার সুযোগ ক্রমশ বাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পিএইচডি প্রোগ্রাম, BCSIR, BRRI, SRDI এর মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ICCCAD, CEGIS এর মতো বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় (যেমন: নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, সুইডেন) পরিচালিত প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত নানা বিষয়ে গবেষণার সুযোগ রয়েছে। ফেলোশিপের ব্যবস্থাও আছে।
(বিঃদ্রঃ: এই নিবন্ধে প্রদত্ত তথ্য ও পরামর্শ সাধারণ নির্দেশনার জন্য। সুনির্দিষ্ট শিক্ষাগত বা ক্যারিয়ার সিদ্ধান্তের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্যারিয়ার কাউন্সেলর বা পেশাদার পরামর্শদাতার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো।)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।