জুমবাংলা ডেস্ক: চূড়ান্ত পরীক্ষার খাতায় রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। খাতায় এ নম্বরগুলো থাকায় খুব সহজেই খাতা কার জানায় প্রভাব পড়ছে পরীক্ষার্থীদের ফলাফলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও পরীক্ষার খাতায় বিষয়টি না থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা গ্রহণের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীকে তার রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার উত্তরপত্রের কপি থেকে দেখা গেছে, উত্তরপত্রের শুরুতে দেয়া পরীক্ষার্থীর জন্য নির্দেশনাবলীতে প্রত্যেক পরিক্ষার্থীকে অবশ্যই কভার পৃষ্ঠায় পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর সুস্পষ্টভাবে লিখতে বলা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়েই পরীক্ষার খাতায় নিজের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে থাকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পরীক্ষার খাতায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকলে খাতা দেখার সময় খুব সহজেই কোন শিক্ষার্থীর খাতা তা বুঝে ফেলে। ফলে খাতা দেখার সময় কোন শিক্ষার্থীকে কেমন গুরুত্ব দেয়া হবে তা আগে থেকেই শিক্ষক বুঝতে পারেন বলে অভিযোগ তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলা জানা গেছে, আমাদের শিক্ষকরাও মানুষ। তাদের মধ্যে রাগ-অভিমান নিজের অজান্তেই আসতে পারে। খাতার মধ্যে আমার রোল নম্বর থাকায় খুব সহজে আমাদের পরিচয় জানা যায়। আর এ প্রভাব আমাদের পরীক্ষার ফলাফলে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদুজ্জামান বলেন, উত্তরপত্রে পরিচয় সনাক্ত করতে পারায় শিক্ষকরা পছন্দ অনুযায়ী নম্বর দিয়ে থাকেন। কেউ ভালো লিখেও কম নম্বর পায় আবার কেউ খারাপ লিখে বেশি নম্বর পায়। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো উত্তরপত্রে যেন পরিচয় সনাক্ত করার প্রক্রিয়া না থাকে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২০১৫-১৬ শিক্ষার্থীবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন,”আমাদের ম্যাম ক্লাস নেয়ার সময় বলেন ‘বিভাগে দুই একজন শিক্ষার্থী থাকে যাদের খাতা দেখলে নিজ থেকেই বেশি নম্বর দিতে ইচ্ছে করে’। এভাবে যদি ম্যাম বলে তাহলে এ নিয়ম থাকার কোনও অর্থ নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উত্তরপত্রে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর রাখার বিপক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫ জন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পরীক্ষার খাতায় পরিচয় সনাক্ত করার প্রক্রিয়া না থাকাই ভালো। এতে করে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হতে পারে। তবে শিক্ষকদের কেউ কেউ মনে করেন তাদের উত্তরপত্র দেখার সময় কোনও রকম প্রভাব পড়েনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) নুরল করিম চৌধুরী বলেন, উত্তরপত্রে রোল ও রেজিস্ট্রেশন কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকেনা। যেখানে এ নিয়ম নেই তারা খাতার সিরিয়াল নম্বরের সাথে মিলিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ণ করে। উত্তরপত্র মূল্যায়ণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত নিয়মে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হলে দপ্তরকে একটু গুছিয়ে এ নিয়ম পরিবর্তন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, পরীক্ষার খাতায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি বাতিল করা হলে অন্যভাবে খাতা মূল্যায়ণ করতে হবে। খাতার পরিচয় সনাক্ত করার জন্য খাতায় নির্দিষ্ট নম্বরের ব্যবস্থা করা হবে। তাহলে উত্তরপত্র মূল্যায়ণের পর সনাক্ত করতে সমস্যা হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।