জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (আরইবি) সহকারী পরিচালক (প্রশাসন), সহকারী পরিচালক (অর্থ) এবং সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আবেদন করা যাবে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিগত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষার ধরন, মানবণ্টন ও প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাচ্ছেন রবিউল আলম লুইপা।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পরীক্ষার ধরন, মানবণ্টন ও সিলেবাস সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তবে সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ও সহকারী পরিচালক (অর্থ) পদে গত দুই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিসিএস প্রশ্নপত্রের ফরম্যাটে করা হলে প্রশ্নের ধরন একরকম হয়, আবার অন্য প্রতিষ্ঠানের (যেমন—আইবিএ) মতো করলে ধরন আরেক রকম হয়।
সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) : ২০১৯ সালের আইবিএ ফরম্যাটের প্রশ্নে একই দিনে একই খাতায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল (এমসিকিউ ৭৫ ও লিখিত ২৫)। তবে প্রিলিমিনারি প্রশ্নের এমসিকিউ উত্তরের জন্য আলাদা ওএমআর শিট দেওয়া হয়েছে। এমসিকিউ অংশের মান অনেকটা বেসরকারি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার মতো হয়েছিল। ৭৫ নম্বরের এমসিকিউর মধ্যে বাংলায় ১৫, ইংরেজিতে ২০, গণিতে ২০, সাধারণ জ্ঞানে (বিজ্ঞান, কম্পিউটারসহ) ২০ করে নম্বর ছিল। ২৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ১৫ নম্বরের একটি বাংলা ফোকাস রাইটিং এবং ১০ নম্বরের একটি ইংরেজি ফোকাস রাইটিং লিখতে হয়েছিল। এমসিকিউ প্রস্তুতির জন্য বিসিএস ও ব্যাংক প্রিলিমিনারি প্রস্তুতিবিষয়ক বই, লিখিত অংশের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান অবস্থা, বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জানা থাকতে হবে।
২০১৮ সালে বিসিএস ফরম্যাটের প্রশ্নে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা আলাদা আলাদা দিনে নেওয়া হয়েছিল (এমসিকিউ ১০০ ও লিখিত ১০০)। ১০০ নম্বরের ৮০টি এমসিকিউ (প্রতিটির মান ১.২০) প্রশ্নের মধ্যে বাংলায় ১৫, ইংরেজিতে ১৫, গণিতে ১০, সাধারণ জ্ঞানে (বিজ্ঞান, কম্পিউটারসহ) ৪০টি করে প্রশ্ন ছিল। ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ভাবসম্প্রসারণ (৫ নম্বর), ব্যাখ্যা (৫), এককথায় প্রকাশ ও বাগধারা (৫), ক্রিটিক্যাল রিজনিং (৫), এমপ্লিফিকেশন (৫), ট্রান্সলেশন ও রিট্রান্সলেশন (২০), ফোকাস রাইটিং (২৫), গণিত (১০), সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (১০), টিকা (১০) লিখতে হয়েছিল। এমসিকিউ অংশের জন্য বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতিবিষয়ক বই এবং লিখিত অংশের জন্য বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিবিষয়ক বই দেখতে পারেন। তবে লিখিত অংশে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান অবস্থা, বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো অবশ্যই ভালোভাবে পড়ে যাবেন।
সহকারী পরিচালক (অর্থ) : ২০১৯ সালে আইবিএ ফরম্যাটের প্রশ্নে সহকারী পরিচালকের (প্রশাসন) মতোই সহকারী পরিচালক (অর্থ) পদেও একই দিনে একই খাতায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল (এমসিকিউ ৭৫ ও লিখিত ২৫)। ৭৫ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নের মধ্যে বাংলায় ২০, ইংরেজিতে ২০, গণিতে ১০, সাধারণ জ্ঞানে (বিজ্ঞান ও কম্পিউটার) ২০ এবং অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্সে ৫ নম্বরের প্রশ্ন করা হয়েছিল। ২৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ১৫ নম্বরের বাংলা ফোকাস রাইটিং এবং ১০ নম্বরের একটি ইংরেজি ফোকাস রাইটিং লিখতে হয়েছিল। এমসিকিউ প্রস্তুতির জন্য সাধারণ অংশের জন্য বিসিএস ও ব্যাংক প্রিলিমিনারি প্রস্তুতিবিষয়ক বই এবং অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্স অংশের প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্সে পঠিত অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্স বই থেকে প্রস্তুতি নিতে পারেন। লিখিত অংশের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান অবস্থা, বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো পড়ে যেতে পারেন।
সহকারী প্রকৌশলী : সহকারী প্রকৌশলী পদে ২০১৯ সালে এমআইএসটি অনুরূপ প্রণীত নিয়োগ প্রশ্ন বিশ্লেষণে দেখা গেছে—একই দিনে একই খাতায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। প্রিলিমিনারি ও লিখিত খাতায় ২০ নম্বরের ২০টি বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান ১), ২০ নম্বরের ১০টি অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি (প্রতিটি প্রশ্নের মান ২) এবং ৬০ নম্বরের ১০টি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কিত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান ৬) করা হয়েছিল।
তাই বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতির জন্য বিসিএস প্রস্তুতি সহায়ক বই এবং ইলেকট্রিক্যাল/মেকানিক্যাল/সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অংশের প্রস্তুতির জন্য অনার্স ও মাস্টার্সে পঠিত মূল বই এবং রেফারেন্স বই থেকে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে।
তবে এই পদে পিএসসি অনুরূপ প্রশ্ন করা হলে সহকারী পরিচালক পদের মতো সহকারী প্রকৌশলী পদের জন্যও ১০০ নম্বরের ৮০টি এমসিকিউ এবং ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা আলাদা আলাদা দিনে হতে পারে এবং প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার অর্ধেক প্রশ্ন সাধারণ বিষয় (বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান) এবং অর্ধেক প্রশ্ন কারিগরি বিষয় থেকে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একনজরে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সংক্রান্ত তথ্যের ওপর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে। এ ছাড়া প্রার্থীদেরও কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো। দরকারি বিষয় নিয়ে লিখেছেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ইছমাইল হোছাইন ফিরোজ
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যা ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আরইবির অধীনে সারা দেশে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পিবিএস) রয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পিবিএস) নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে আরইবি। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে আরইবি সারা দেশে (৬১ জেলায়) গ্রামবাংলার প্রায় তিন কোটি সাত লাখ গ্রাহককে বিদ্যুেসবা দিয়ে যাচ্ছে।
পদসোপান
আরইবির প্রশাসন শাখার পদসোপান হলো—সহকারী কো-অর্ডিনেশন অফিসার/টেবুলেটর (দশম গ্রেড) > সহকারী পরিচালক (নবম গ্রেড) > উপপরিচালক (ষষ্ঠ গ্রেড)> পরিচালক (চতুর্থ গ্রেড)> নির্বাহী পরিচালক (দ্বিতীয় গ্রেড) > সদস্য (দ্বিতীয় গ্রেড)।
প্রকৌশল শাখার পদসোপান হলো—উপসহকারী প্রকৌশলী (দশম গ্রেড) > সহকারী প্রকৌশলী (নবম গ্রেড) > উপপরিচালক (কারিগরি)/নির্বাহী প্রকৌশলী (ষষ্ঠ গ্রেড) > পরিচালক (কারিগরি)/তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চতুর্থ গ্রেড) > অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (তৃতীয় গ্রেড) > প্রধান প্রকৌশলী (দ্বিতীয় গ্রেড) > সদস্য (দ্বিতীয় গ্রেড)। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন একজন চেয়ারম্যান (প্রথম গ্রেড)। আরইবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী বেতন পান। এ ছাড়া চাকরিকালীন দেশের ৮০টি সমিতিতে মনিটরিং, অডিট ইত্যাদি দাপ্তরিক কাজে যেতে হতে পারে। সে জন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী টিএ/ডিএ পাওয়া যায়। সহকারী পরিচালক (প্রশাসন/অর্থ) হিসেবে যোগদানের পর বেসিক প্রশিক্ষণ শেষে সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) এবং সহকারী পরিচালক (অর্থ) পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের আরইবির প্রধান কার্যালয়ে (খিলক্ষেত, ঢাকা) পদায়ন করা হয়। এ ছাড়া খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামে অবস্থিত আরইবির তিনটি পণ্যাগারেও পদায়ন হতে পারে। অন্যদিকে সহকারী প্রকৌশলীদের প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি আরইবির জেলাপর্যায়ের অফিসেও সাধারণত পদায়ন হয়। আরইবি প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের জন্য এবং জেলাপর্যায়ে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলীদের জন্য গাড়ি সুবিধা রয়েছে।
অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতোই এখানে পেনশন সুবিধা, ট্রান্সপোর্ট সুবিধা, হাউস বিল্ডিং লোন, কোয়ার্টার সুবিধা (সাভার) রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।