জুমবাংলা ডেস্ক : দাম্পত্য কলহের জেরে ইমাম হোসেন নামে চার মাস বয়সী শিশু সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার খাদিজা আক্তার পিংকি (১৯) নামে এক নারী।
ছোট্ট একটি চিরকুটের লেখার সূত্র ধরে শিশুটির গর্ভধারিণী মা খাদিজা আক্তার পিংকিকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ ঘটনায় নিজের শিশু সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত মা।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে আসামি খাদিজা আক্তার পিংকিকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
সন্ধ্যায় পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, গত বছরের ১৯ এপ্রিল রাতে বন্দর উপজেলার মাধবপাশা এলাকায় নানা জবেদ আলীর বসতবাড়ি থেকে ইমাম হোসেন নামের নবজাতক শিশুটি নিখোঁজ হয়। এ সময় তার মা খাদিজা আক্তার পিংকি চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে আসেন। তখন পিংকি পরিবারের সবাইকে জানান তার শিশু সন্তানকে অজ্ঞাত কোন ব্যক্তি চুরি করে নিয়ে গেছে। ঘটনার একদিন পর ২১ এপ্রিল সকালে ওই বাড়ির পাশে একটি পুকুর থেকে শিশু ইমাম হোসেনের মরদেহ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা রুবেল বাদী হয়ে ওইদিনই বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশের তদন্তে অগ্রগতি না হলে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স থেকে গত ৩০ জুলাই মামলাটির তদন্তভার হস্তান্তর করা হয় পিবিআইকে। তদন্তের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে সাত শব্দের একটি ছোট কাগজের চিরকুট আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। যাতে ভুল বানানে লেখা ছিল ঘরে ঘরে বাচ্চা চুরি করা হবে। সবাই যেন সাবধান থাকেন।
পিবিআই পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, এই চিরকুটের সূত্র ধরে পিবিআই তদন্ত দল নিহত শিশুটি বাড়ির লোকজনসহ আশপাশের প্রতিবেশীদের হাতের লেখা সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন তারা। এক পর্যায়ে শিশুর মা খাদিজা আক্তার পিংকির হাতের লেখার সাথে জব্দ করা চিরকুটের লেখার হুবহু মিল পাওয়া যায়।
পরে আদালতের আদেশ নিয়ে পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা পিংকিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে আদালতে পিংকির জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
আদালতকে পিংকি জানান, স্বামী বেকার হয়ে পড়ায় তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। এ সুযোগে বেকার স্বামী তাকে ভরণ পোষণ না দিয়ে উল্টো টাকার জন্য নানাভাবে চাপ দিতেন। এতে নিজের পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে উপহাস করতো। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি নিজের নবজাতক শিশু সন্তানকে রাতের আঁধারে পুকুরে ফেলে দিয়ে আসেন।
তদন্ত সংস্থা পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় যেহেতু নিহত শিশুর বাবা রুবেল মামলার বাদী হয়েছেন তাই পরবর্তী পদক্ষেপে আর কোন ধরণের আইনি জটিলতা নেই। মা খাদিজা আক্তার পিংকির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, জব্দকৃত আলামত ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এই মামলায় তাকে আসামি করে খুব শিগগিরই আমরা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।