জুমবাংলা ডেস্ক : বরগুনায় এক যুবককে ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে নিজেকে পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে চাঁদা গ্রহণের সময় মিজানুর রহমান সুমন গোলদার (৪২) নামে বামনা উপজেলার কথিত এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ওই কথিত সাংবাদিকের বাড়ি বামনা উপজেলার পশ্চিম সফিপুর গ্রামে। তিনি মরহুম হিরু গোলদারের ছেলে। এ ঘটনায় চম্পা নামের এক নারী ও লিমন নামের আরো একজনকে গ্রেপ্তার করে বরগুনা থানা পুলিশ।
এদিকে জিম্মি হওয়া যুবক মামুন (২৬)কে উদ্ধার করা হয়েছে। মামুন পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হরিণঘাটা এলাকার তোফাজ্জল মাস্টারের ছেলে।
শুক্রবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় এ ঘটনায় জিম্মি হওয়া মামুনের মা কহিনুর বেগম বাদী হয়ে ওই তিনজনকে আসামি করে বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বরগুনা থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বরগুনার পৌর শহরের পিটিআই এলাকার চম্পা নামের ওই নারীর সঙ্গে পাথরঘাটার হরিণঘাটার মামুনের ভার্চুয়াল সখ্যতা তৈরি হয়। এর সূত্র ধরে শুক্রবার সকালে মামুনকে দেখা করার কথা বলে বরগুনায় ডেকে আনে চম্পা। মামুনকে নিয়ে সে ক্রোক এলাকার লিমনদের বাড়িতে একটি কক্ষে আবদ্ধ করে।
এসময় কথিত সাংবাদিক সুমন গোলদার ওই বাড়িতে গিয়ে মামুনকে পুলিশ পরিচয়ে মারধর করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় দুই দফায় সুমনের বিকাশ একাউন্টে ১২ হাজার দেয় মামুন। এরপরও জিম্মিকারী সুমন গোলদার ও চম্পা আরো ২০ হাজার টাকা দাবি করে।
বিষয়টি জানার পর মামুনের খালু জাকির হোসেন কালাম বরগুনা সদর থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডক্টরর্স কেয়ার ক্লিনিকের সামনে বিকাশ থেকে টাকা ক্যাশ আউটের সময় হাতেনাতে সুমনকে আটক করে। পরে অভিযান চালিয়ে পিটিআই সড়ক থেকে চম্পা ও ক্রোক থেকে লিমনকে আটক করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বামনা উপজেলা সদরের একাধিক ব্যক্তিরা জানান, সুমন সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে বামনা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছেন। এ ছাড়াও চম্পা নামের ওই নারীকে দিয়ে সে লোকজনকে ভার্চুয়াল ব্লাকমেইল করে টাকা আদায় করে থাকেন।
কয়েক বছর আগে সুমন গোলদারের ইয়াবা সেবনে একটি ভিডিও ও চাঁদা দাবির একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বিভিন্ন এলাকায় বাল্যবিয়ের নাম করে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিছু দিন পূর্বে তিনি বরিশাল বিভাগীয় ডিআইজি সাহেবের সঙ্গে ছবি তুলে তার এই চাঁদাবাজি ও ইয়াবা ব্যবসার প্রসার ঘটাচ্ছে।
কথিত ওই সাংবাদিক সুমন গোলদারের বিষয়ে বামনা প্রেস ক্লাব সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ বলেন, সুমনের চাঁদাবাজির কারণে বামনার সাংবাদিকতা এখন কলুষিত। সে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে চালায় চাঁদাবাজি। জনগণকে কর্মকর্তাদের ভয় দেখিয়ে এমনকি প্রেস ক্লাবের নাম ভাঙিয়ে সে বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করেছে এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি।
সম্প্রতি তার একটি চাঁদাবাজির ঘটনায় প্রেস ক্লাবে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপযুক্ত প্রমাণসহ মামলা করতে গেলেও থানা তার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেননি। এভাবেই সে তার চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য পরিচালনা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরাও ছিলাম অসহায় কারণ প্রশাসন ও কিছু সরকার দলীয় নেতারা তাকে আগলে রাখত বলে।
বরগুনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় মামুনের মা কহিনুর বেগম বাদি হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটক ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে বরগুনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সূত্র : কালের কন্ঠ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।