স্পোর্টস ডেস্ক : সুযোগ পেলে সেটি কাজে লাগাতে হয় দুই হাতে। ড্যারিল মিচেলের মতো এই মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হলেন অলি পোপ আর জো রুটও। জীবন পেয়ে দুজনই করলেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। নিউ জিল্যান্ডের রানের পাহাড় টপকে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার আশা জাগাল ইংল্যান্ড।
ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের তৃতীয় দিনেও উইকেট ছিল যথারীতি ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ। রোববার ৮৮ ওভারে স্রেফ ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৮৩ রান যোগ করেছে ইংল্যান্ড।
২০১১ সালে এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় দিনে ৪১৭ রানের পর টেস্টের কোনো এক দিনে ইংলিশদের সর্বোচ্চ রান এটি। আর ২০১৮ সালের পর থেকে কোনো দলের চতুর্থ সর্বোচ্চ।
দিন শেষে প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৭৩ রান। পিছিয়ে আছে তারা আর ৮০ রানে।
আগের দিন ৩৭ রানে জীবন পাওয়া পোপ খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৪৫ রানের ইনিংস। তার ২৩৯ রানের ইনিংসটি গড়া ১৩ চার ও ৩ ছক্কায়।
লর্ডস টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক রুট এবার তুলে নিয়েছেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২৭ রানে জীবন পেয়ে তিনি ২০০ বলে ২৫ চারে অপরাজিত ১৬৩ রানে।
অ্যালেক্স লিসের ব্যাট থেকে আসে ৬৭ রান। ৩৩ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন অধিনায়ক বেন স্টোকস।
নিউ জিল্যান্ডের বড় সংগ্রহের কারিগর মিচেল ৩ ও ১০৪ রানে জীবন পেয়ে খেলেছিলেন ১৯০ রানের ইনিংস।
দুই দলই যেন এই ম্যাচে ক্যাচ ছাড়ার মহড়ায় মেতেছে। প্রথম তিন দিনে ক্যাচ পড়েছে মোট ১০টি!
ইংল্যান্ড তৃতীয় দিন শুরু করে ১ উইকেটে ৯০ রান নিয়ে। আগের দিন ৩৪ রানে অপরাজিত লিস বাউন্ডারিতে ফিফটি পূর্ণ করেন ১০৯ বলে। নবম ইনিংসে এসে প্রথম টেস্ট ফিফটি পেলেন তিনি।
এরপর অবশ্য ইনিংস বেশিদূর টেনে নিতে পারেননি। ম্যাট হেনরির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। ১২৫ বলে ১১ চারে সাজানো ৬৭ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে ১৪১ রানের জুটি।
৫১ রান নিয়ে দিনের ব্যাটিং শুরু করা পোপ এরপর এগিয়ে যান রুটকে সঙ্গী করে। লাঞ্চের আগের ওভারে রুটকে ফেরানোর সুযোগ আসে। কিন্তু বোল্টের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নিতে পারেননি টিম সাউদি।
বিরতির পর পোপ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১৬০ বলে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ক্যারিয়ারে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। আড়াই বছর পর পেলেন আরেকটি, দেশের মাটিতে প্রথম।
জমে ওঠে দুই ব্যাটসম্যানের জুটি। আগের ম্যাচে টেস্টে ১০ হাজার রান পূর্ণ করা রুট ফিফটি করেন ৫৬ বলে। ১১৬ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। তার ক্যারিয়ারের ২৭ সেঞ্চুরির মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম এটিই।
চা-বিরতির পরপরই মনোযোগ হারিয়ে আউট হয়ে যান পোপ। বোল্টের শর্ট বল পুল করেন তিনি। ফাইন লেগ থেকে ছুটে এসে দারুণ ক্যাচ নেন হেনরি। ভাঙে ২৪৯ বলে ১৮৭ রানের জুটি।
পাঁচ নম্বরে নেমে টিকতে পারেননি জনি বেয়ারস্টো। বোল্টের বলে কট বিহাইন্ড হন তিনি ৮ রান করে। নিউ জিল্যান্ড উইকেটটা পায় রিভিউ নিয়ে।
উইকেটে এসেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন স্টোকস। সেটিই শেষ পর্যন্ত কাল হয় তার। স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলের আগের বল ছক্কায় ওড়ানোর পর আরেকটির চেষ্টায় ক্যাচ দেন তিনি ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৪৬ রান করে।
বেন ফোকসকে নিয়ে দিনের বাকিটা পার করে দেন রুট। ১৮১ বলে তিনি পা রাখেন দেড়শতে। ১০ রানে জীবন পেয়ে ফোকস খেলছেন ২৪ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৬৮।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৫৩
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১১৪ ওভারে ৪৭৩/৫ (আগের দিন ৯০/১) (লিস ৬৭, পোপ ১৪৫, রুট ১৬৩*, বেয়ারস্টো ৮, স্টোকস ৪৬, ফোকস ২৪*; সাউদি ২৮-১-১১৯-০, বোল্ট ২৬.৩-৫-৮৯-৩, হেনরি ২৭-৫-১২৮-০, জেমিসন ১৬.৩-৩-৬৬-১, ব্রেসওয়েল ১৪-২-৪৮-১, মিচেল ২-০-৮-০)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।